বলিউডবিনোদন

ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুমু কঙ্গনার, ব্যাপক ট্রোল হলেন অভিনেত্রী

Advertisement
Advertisement

কঙ্গনা রানাওয়াত মানেই একরাশ বিতর্ক। কখনও বলিউডের মাদকযোগ, কখনও অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু রহস্য, কখনও নিজের অতীতের যৌন নির্যাতন সব কিছুতেই কঙ্গনা খোলাখুলি বক্তব্য রাখেন। এই কারণে গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে চলা নেটিজেনরা তাঁকে কটাক্ষ করেন। কিন্তু এবার অন্যরকম বিতর্কে জড়ালেন কঙ্গনা। সম্প্রতি কঙ্গনার ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষ্যে কঙ্গনা নিজের মানালির বাড়িতে ছিলেন। কিন্তু তার পরের দিন শুটিং থাকায় কঙ্গনাকে মুম্বই ফিরে আসতে হয়। অন্যান্য পরিবারের মাসিদের মত কঙ্গনাও নিজের বোনপো-র প্রিয় মাসি। কঙ্গনা বোনপো-কে নিজের সন্তান বলেই মনে করেন। এর আগেও বহু সাক্ষাৎকারে তাঁকে এই কথা বলতে শোনা গেছে। ভাইয়ের বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর কঙ্গনা যখন এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন অন্যান্য বোনপো-দের মতো কঙ্গনার বোনপোও কঙ্গনাকে আসতে দিতে চাইছিল না। তখন কঙ্গনাকে তাকে বোঝান যে, তাঁর কাজ আছে। তখন সে কঙ্গনাকে বলে, চলে যাবার আগে তাকে কোলে নিয়ে দুই মিনিট বসে থাকতে। কঙ্গনা তাকে কোলে নিয়ে চুম্বন করেন। এই দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী হয়ে যায়। কঙ্গনা এই ফটোটি ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করে বলেন, বোনপো-র কথা মনে করে এখনও তাঁর কষ্ট হচ্ছে।

Advertisement
Advertisement

কঙ্গনার পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নেটিজেনরা তাঁকে নিয়ে রীতিমত বিতর্ক সৃষ্টি করেন। তাঁরা বলতে শুরু করেন কঙ্গনা একটি শিশুর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাঁকে ঠোঁটে চুমু খেয়ে তার শ্লীলতাহানি করেছেন। কেউ বলেন, কঙ্গনার বিকৃত মনোভাবসম্পন্ন মহিলা। কঙ্গনা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

Advertisement

প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবীতে একজন শিশুর মা এবং মাতৃস্থানীয়া অর্থাৎ মাসি, পিসি, দিদিমা, ঠাকুমা প্রমুখ তাকে লালন-পালন করেন। ভারতীয় সমাজে এখনও শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অনেকেই তাঁদের ভাই বা বোনকে ছোটবেলায় মা বা কোনো মাতৃস্থানীয়ার নগ্ন করে তেল মাখিয়ে রোদে শুইয়ে রাখার ঘটনা আত্মকথা বা বিভিন্ন সাহিত্যে তুলে ধরেন। কিন্তু বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি করে প্রতিনিয়ত মানুষ মানুষকে অপ্রয়োজনীয় ভাবে হ্যারাস করে চলেছে। এই হ্যারাসমেন্ট -এর শিকার এবার কঙ্গনাও হলেন। তিনি স্নেহের বশে তাঁর বোনপো-কে চুম্বন করলেও তিনি বোনপো-র ঠোঁটে চুমু খেয়েছেন, এই দৃশ্যটি বর্ণনা করা হচ্ছে। তাহলে শৈশবে একটি শিশুকে নগ্ন করে যদি তার মা বা মাসি তেল মাখান অথবা তার পরিচর্যা করেন, তাকে স্নান করান, অদূর ভবিষ্যতে কি আজন্মলালিত সেই প্রথাকেও নেটিজেনরা যৌন নির্যাতন বলে অভিহিত করবেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলিকে দোষারোপ করা হয় কোনো বিষয়ে গুজব ছড়ানোর জন্য। কিন্তু এই গুজবের সৃষ্টিকর্তা তো নেটিজেনদের একাংশ যারা অনায়াসেই তিলকে তাল বানিয়ে দিতে পারেন। কঙ্গনার অন্ধকার অতীত নিয়ে কখনও তাঁর স্নেহকে বিচার করা ঠিক নয়। নেটিজেনদের একাংশ-এর জ্ঞাতার্থে জানানো দরকার কঙ্গনাকে অন্ধকারে ডুবতে হয়েছিল তাঁর বোন রঙ্গোলিকে সুস্থ করে তোলার জন্য। রঙ্গোলি হিমাচল প্রদেশের প্রথম মহিলা যাঁর উপর অ্যাসিড অ্যাটাক হয়। অ্যাসিডে রঙ্গোলির চেহারা সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সময় অনেকগুলি সার্জারি করাতে হয় রঙ্গোলিকে। কিন্তু কঙ্গনার পরিবারের সামর্থ্য ছিল না রঙ্গোলির সার্জারির খরচ বহন করার। কঙ্গনা একাই রঙ্গোলির সার্জারির খরচ বহন করার জন্য যেন তেন প্রকারেণ বলিউডে কাজ যোগাড় করেছিলেন। কঙ্গনার প্রচেষ্টাতেই রঙ্গোলি সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে তাঁর মুখের কিছু অংশে এখনও রয়ে গিয়েছে অ্যাসিডের ক্ষত। আজ একবিংশ শতকে পৌঁছেও একজন মাতৃস্থানীয়ার স্নেহের বিচার হয় তাঁর অতীতের কার্যকলাপ দিয়ে। এই ধরনের মানসিকতাই কি বাড়িয়ে দিচ্ছে না শিশুকন্যার ধর্ষণ? বারবার মেয়েদের পোশাক নিয়ে মন্তব্য, তাঁদের বডি শেমিং করা মানুষরা তো দিব্যি অভিনেতা সলমন খানের শার্টলেস ফিজিক দেখতে পছন্দ করেন। সমাজের একাংশের বৈরিতা কি সত্যিই সোশ্যাল মিডিয়াকে সোশ্যাল থাকতে দিচ্ছে? কঙ্গনাকে ট্রোলিং-এর বিতর্কিত এই ঘটনায় আবারও উঠে আসছে এই সব প্রশ্ন যেগুলির উত্তর নেটিজেনরা জেনেও না জানার ভান করেই থাকবেন।

Advertisement
Advertisement
Advertisement

Related Articles

Back to top button