কলকাতানিউজ

করোনা আতঙ্ক থাবা বসালো কলকাতার যৌনপল্লীতে

Advertisement
Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – পুরুষরা নিজেদের কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য পতিতালয়ে যান। তাদের দানেই এখানকার মহিলাদের জীবন নির্বাহ হয়। এদের দেখে ভ্রু কুঁচকোবেনা, এদের মধ্যে বেশিরভাগই অনিচ্ছায় এখানে এসে পড়েন। কলকাতার সোনাগাছি, বৌবাজার, কালীঘাট, খিদিরপুর সমস্ত পতিতালয় গুলি আজ ফাঁকা। গোটা ভারতের এবং এশিয়ার বৃহত্তম পতিতালয় সোনাগাছিতে যেখানে গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন পুরুষের সমাগম ঘটত, আজ সেখানে ফাঁকা, একটি মানুষও নেই।

Advertisement
Advertisement

যারা এদেরকে খারাপ চোখে দেখেন তারা একবারও ভেবেছেন এই মানুষ গুলোর কি অবস্থা! এরাও তো পেটের টানে এই সমস্ত কাজ করতে বাধ্য হয়। এদেরকে যারা কুনজরে দেখেন তাদের অনেকেই তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের মানুষ। ছোটবেলায় বাবা মা হয়তো অভাবের তাড়নায় কাউকে বিক্রি করে দিয়েছিল, তারপরে হাত ফিরতে ফিরতে তার জায়গা হয়েছে এই জায়গায়। শুধু ভারতবর্ষ নয়, গোটা বিশ্বজুড়ে যৌনপল্লীগুলি আজ সংকটে রয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র ওষুধ হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সেই কারনে যৌনপল্লী গুলির ওপরে বিশেষ করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুধুমাত্র যৌনকর্মীরা নয় , আতান্তরে পড়েছেন রূপান্তরকামী মানুষগুলো।

Advertisement

রাতের সূর্য যখন অস্ত যায়, তখন এই সমস্ত জায়গায় নতুন করে কাজ শুরু হয় রাতের অন্ধকারে। এটাই এদের একমাত্র রুটি-রোজগারের জায়গা। এই মানুষগুলোর দিকে কুনজরে তাকানোর আগে একবার ভাববেন দুর্গা প্রতিমা গড়ার জন্য কিন্তু এই পতিতালয়ের মাটি লাগে। যখন ভগবান স্বয়ং এদেরকে খারাপ নজরে দেখেন না, তখন আপনি কেন দেখবেন? করোনা ভাইরাস আমাদেরকে দিয়েছে অনেক কিছু। একবার ভাববেন, আজ বাড়িতে বসেই আপনি সময় পাচ্ছেন সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে নিয়ে একটু হলেও চিন্তা করার। যা বোধ হয় প্রত্যেকটা সচেতন নাগরিকের জন্য ভীষণ দরকার।

Advertisement
Advertisement

উন্নতির শিখরে উঠতে উঠতে আমরা বড্ড স্বার্থপর হয়ে পড়েছিলাম। শুধু নিজে উন্নতি করব, নিজের সন্তানকে লেখাপড়া করাবো, নিজে বড় মাইনের চাকরি পাব। কিন্তু আজ আমাদের হাতে সময় আছে, আমরা একটু ভাবি অন্যের কথা। সকলে মিলে আমরা যদি সকলের কথা ভাবি তাহলে দেখবেন বাড়িতে বসে গৃহবন্দী দশা টা মাঝেমধ্যে খুব ভালো লাগবে এবং মনও মাঝে মধ্যে আনন্দে ভরে উঠবে। নিজেকে একজন সুস্থ দেশের সচেতন নাগরিক বলে মনে হবে। আর একটা কথা ভাববেন, আপনি একা নয়, সমস্ত বিশ্ব লড়াই করছে করোনা ভাইরাস এর বিরুদ্ধে।

Advertisement

Related Articles

Back to top button