নিজস্ব সংবাদদাতা: অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হিসেবে সোনিয়া গাঁধীকে মনোনীত করল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি। আজ ১২ ঘণ্টা ধরে চলা কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মনমোহন সিংহ, প্রিয়াঙ্কা গাঁধী বঢরা, আহমেদ পটেল, গুলাম নবি আজাদ ও পি চিদম্বরমরা পুনরায় সোনিয়া গাঁধীকেই সভাপতি হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
এদিন কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, কংগ্রেসের সভাপতি পদে পুনরায় সোনিয়া গাঁধী মনোনীত হলেন। তবে তিনি স্থায়ীভাবে নির্বাচিত হননি। তিনি অন্তর্বর্তী সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। কংগ্রেস সূত্রে খবর, যতদিন না পর্যন্ত ওয়ার্কিং কমিটি সভাপতি হিসেবে স্থায়ী কোনো মুখকে নির্বাচিত করেন, ততদিন পর্যন্ত অস্থায়ী সভাপতি হিসেবে সোনিয়া গাঁধীই থাকবেন। তবে জানা যাচ্ছে, সভাপতি নির্বাচন নিয়ে ডিসেম্বরের আগে আর কোনো ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং হবে না। অতএব, এই বছরের শেষ পর্যন্ত দলের ভার সোনিয়ার হাতেই থাকবে।
লোকসভা ভোটে মোদী-শাহের জুটির কাছে ভরাডুবির পর কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। এমনকি পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গাঁধী পরিবারের কেউ থাকবে না বলে তিনি জানিয়েছিলেন। অবশেষে আজ ৭৭ দিনের মাথায় সভাপতি নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা উত্তর-পূর্ব, পূর্ব, উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণ এই পাঁচটি দলে ভাগ হয়েছিল। দিনভর আলোচনা করেও তাঁরা গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করতে পারেনি। অবশেষে পুনরায় তাঁরা রাহুল গাঁধীকেই দলের দায়িত্ব নিতে বলেন। কিন্তু রাহুল গাঁধী ওই পদে পুনরায় ফিরতে না চাইলে, সোনিয়া গাঁধী অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে রাজি হন। অবশেষে ওয়ার্কিং কমিটি সোনিয়ার নামেই সিলমোহর বসায়।
প্রায় দু’বছর পর সভাপতি পদে পুনরায় সোনিয়ার উঠে আসা এবং গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত না করতে পারায় রাজনৈতিক মহলে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। একদিকে বলা হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা এতদিন ধরে চিৎকার করে বলে আসত, গাঁধী পরিবারের বাইরে কংগ্রেসের কোনো অস্তিত্ব নেই। আজকের কংগ্রেসের এই অবস্থান দেখে মনে হচ্ছে সেই কথাই সত্যি হতে চলেছে। অপরদিকে, ওয়ার্কিং কমিটির সামনে সোনিয়াই নিজের নাম প্রস্তাব দেওয়ায়, অনেকে মনে করছেন সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নাটক করছে কংগ্রেস। কারণ সেই যদি ঘুরেফিরে নিজের মতের কথাই জানায় সোনিয়া, তবে এতদিন কেন চুপচাপ ছিল। সবমিলিয়ে সভাপতি নির্বাচন নিয়ে ঘরে বাইরে সমালোচনায় বিদ্ধ কংগ্রেস।