অফবিট

মহামারীর দুর্দিনে অসংখ্য রোগীর সেবা করেছিলেন এই মহিলা ও তার ছেলে

Advertisement
Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রত্যেকেই কার্যত গৃহবন্দী। কিন্তু চিকিৎসকরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন মানুষগুলোর প্রাণ বাঁচানোর জন্য। তবে ভারতবর্ষ এই প্রথম মহামারীর কবলে পড়ল এমনটা নয়, এর আগেও ভারতবর্ষের উপর ‘বিউবনিক প্লেগ’ মারণ থাবা বসিয়েছিল। ইতিহাসের পাতায় যা ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে পরিচিত। কয়েক বছর আগে গোটা বিশ্বে এই প্লেগ তার মারণ থাবা বসিয়ে ছিল।

Advertisement
Advertisement

১৮৯৬ থেকে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতবর্ষ খুব ভয়ংকর রোগের মধ্যে গিয়েছিল। সেই সময় এক সপ্তাহে প্রায় ২০০০ মানুষের মৃত্যু হয়। সেই সময় এর সঙ্গে এখন তুলনা টানলে বোঝা যায়, যে এই মুহূর্তে আমরা অনেক ভালো আছি, কারণ এখন অনেক বিজ্ঞানের উন্নতি হয়েছে, অনেক গবেষণা হচ্ছে। সেই সময় যে দুজন মানুষের কথা না বললেই নয়, তারা হলেন সাবিত্রীবাঈ ফুলে এবং তার পুত্র ডক্টর ইয়াশবন্তরাও ফুলে। যারা তাদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিল এই প্লেগ রোগীদের সেবা করতে। শুধু তাই নয়, সামাজিক নানান আন্দোলনের ক্ষেত্রে সাবিত্রীবাঈ তার অবদান রেখে গেছেন।

Advertisement

নারীদের অধিকার নিয়ে তিনি লড়াই করেছেন এবং সেই জন্যই তাকে ‘ভারতীয় নারীত্ববাদের জননী’ বলা হয়। তিনি একজন মারাঠি ভাষার লেখিকাও ছিলেন এবং তিনি তার লেখার মাধ্যমে মহিলাদেরকে শিক্ষিত করার কথাও উচ্চারণ করে। ‘সত্যসাধক সমাজ’ নামে একটি সামাজিক সমিতিতেও তিনি যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। এই সমিতিটি তৈরি করেছিলেন তার স্বামী জ্যোতিরাও ফুলে ১৮৭৩ সালে। শুধু তাই নয়, তার দত্তক পুত্র ছিলেন ইয়াশবন্তরাও। তার যে আসল মা কাশিবাঈ, যিনি একজন বিধবা ছিলেন। একসময় তিনি নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়ে ছিলেন, সেই সময় জ্যোতিরাও ফুলে এবং সাবিত্রীবাঈ তাকে উদ্ধার করেন। উদ্ধার করার পর জানতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। তারপরে পুত্র সন্তান জন্ম নিলে জ্যোতিরাও এবং সাবিত্রীবাঈ ১৮৭৪ সালে সেই সন্তানকে দত্তক নেন।

Advertisement
Advertisement

ভারতবর্ষের যে সময় তে প্লেগ মহামারী রূপে দেখা যায়, সেই সময় জাতিগত বিদ্বেষ অত্যন্ত বেশি ছিল। ব্রাহ্মণ ডাক্তাররা কিছুতেই শূদ্র এবং দলিত সম্প্রদায় এর চিকিৎসা করতে চাইত না। সাবিত্রীবাঈ এর ছেলে ইয়াশবন্ত পুনেতে একটি ক্লিনিক খোলেন , সেখানে তিনি জাতপাত নির্বিশেষে প্রত্যেক এর চিকিৎসা করতে থাকেন।

১৯০৫ সালে তিনি পুনরায় পুনেতে ফিরে এসেই সেনাবাহিনীর চিকিৎসায় লেগে পড়েন। দ্বিতীয় বারের জন্য প্লেগ ভারতে মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। চিকিৎসা চলাকালীন তিনি প্লেগে আক্রান্ত হন এবং ১৯০৫ সালের ১৩ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এখন সময়টা অনেক পাল্টে গেছে, এখন আমাদের নিজেদের কে বাঁচানোর জন্য অনেক জীবনদায়ী ওষুধ জীবনদায়ী পদ্ধতি চলে এসেছে। আমরা প্রত্যেকে সাবিত্রীবাঈ ফুলে থেকে শিখতে পারি, কিভাবে আমাদের নিজেদের সমস্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হয়।

Advertisement

Related Articles

Back to top button