নিউজপলিটিক্সরাজ্য

মমতার অবস্থা এখন শাহজাহানের মত, অতিরিক্ত অভিষেক প্রীতি ডোবাচ্ছে তৃণমূলকে, মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের

Advertisement
Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র হয়ে গিয়েছেন। এবারে দলের অন্দরে নেতা-নেত্রীরা এরকম দাবি নিয়ে সরব হলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধৃতরাষ্ট্রের মত সবকিছু ভুলে গিয়ে স্নেহান্ধ দলের দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে। ঠিক যেমন ধৃতরাষ্ট্র সমস্ত দায়িত্ব দিয়েছিলেন দূর্যোধন কে। তারা মনে করছেন, অতিরিক্ত অভিষেক প্রীতি তৃণমূল দলটিকে ডোবাবে। মহাভারতের গল্পে, ধৃতরাষ্ট্র স্নেহের বশে সমস্ত ক্ষমতা দুর্যোধনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তার ফলে সবশেষে ধ্বংস হয়েছিল কুরুবংশ। ঠিক সে রকম অবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনিও স্নেহের বশবর্তী হয়ে সমস্ত ক্ষমতা তুলে দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। যার ফলে, তৃণমূলে শুরু হয়েছে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

Advertisement
Advertisement

একুশের নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্তৃত্ব নিয়ে। তৃণমূল নেতৃত্বে তার ক্ষমতা অনেকটা কমে গিয়েছে। তার পরিবর্তে, এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের সবকিছু হয়ে দাঁড়িয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পান্ডবদের বনে পাঠিয়েছে ভাবে দুর্যোধন হস্তিনাপুরে নিজের রাজ্য স্থাপন করেছিলেন তৃণমূলেও ঠিক একই অবস্থা।

Advertisement

অনেক রাজনীতিবিদ এর মতামত, তৃণমূল যেভাবে বর্তমানে চলছে তাতে আসন্ন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের মতো অবস্থা হতে পারে তৃণমূলের। তৃণমূলের সমস্ত দায়িত্ব এখন অভিষেক এবং প্রশান্ত কিশোরের হাতে চলে গিয়েছে। তার ফলে তৃণমূল বিধায়কদের মধ্যে কর্তৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। মিহির গোস্বামী, শুভেন্দু অধিকারীর মত বিদ্রোহী বিধায়করা জানাচ্ছেন তৃণমূল এখন আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নয়। তৃণমূলের সমস্ত দায়িত্ব এখন পিকে এবং অভিষেকের হাতে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, যদি এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতে সমস্ত ক্ষমতা আরও একবার তুলে নেন তাহলে হয়তো তৃণমূল বাঁচতে পারে।

Advertisement
Advertisement

তৃণমূলের বিদ্রোহী বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর মতে, যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীরা ছিলেন, ততদিন কাজ করতে কোন অসুবিধা হয়নি। প্রশান্ত কিশোর এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে দল চালাচ্ছেন, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে শুধু শুভেন্দু নয়, কোচবিহারের বিধায়ক মিহির গোস্বামীও তার ফেসবুক পোস্টে একই মন্তব্য করেছেন। তিনি এও বলেছেন তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নেই। ফলে এইভাবে টিকে থাকা সম্ভব নয়। বিধায়কদের এইরকম অবস্থানের কারণে কপালে চিন্তার ভাঁজ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, মমতার অবস্থা এখন ধৃতরাষ্ট্র অথবা শাহজাহানের মতো। তাকে শুধুমাত্র গদিতে বসিয়ে রাখা হয়েছে, ছড়ি ঘোরাচ্ছে উপর থেকে অন্য কেউ।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতিরিক্ত অভিষেক প্রীতি দেখাতে গিয়ে দলের ক্ষতি করে দিচ্ছেন। মুকুল রায়ের দল ছেড়ে বেরিয়ে যাবার পর থেকে প্রশান্ত কিশোরের তৃণমূলে আগমন অবধি তৃণমূলের সমস্ত কাজের দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর উত্থান ঘটাতে গিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আখেরে নিজের দলের সমূহ ক্ষতি ডেকে আনছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা।

Advertisement

Related Articles

Back to top button