নিউজরাজ্য

প্রাচীন রীতি মেনেই প্রতিবছর মায়াপুর ইস্কনে পালিত হয় শ্রীকৃষ্ণের চন্দন যাত্রা উৎসব

×
Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – গ্রীষ্মের দাবদাহে হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রাচীন রীতি মেনেই মায়াপুর ইস্কনের রাধা মাধবের গায়ে চন্দনের প্রলেপ লাগানো হয়। মহীশূর থেকে এই দামি চন্দন কাঠ আনা হয়। মায়াপুরকে সুন্দর করে ফুলে ফুলে আলোর মালায় সাজিয়ে তোলা হয়। চলে সংকীর্তন। এ প্রসঙ্গে কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে পুরীর নরেন্দ্র সরোবর শ্রী শ্রী রাধা মদনমোহন কে তার সারা শরীরে চন্দন লাগিয়ে নৌকা করে ঘুরে বেরিয়েছিলেন সেখানকার পণ্ডিতেরা। আর সেই অনুষ্ঠানে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু অংশগ্রহণ করে মহান আনন্দ লাভ করেছিলেন। বৈশাখ মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া কে যাকে শুভ অক্ষয় তৃতীয়া বলা হয় সেই দিন থেকেই শুরু হয় চন্দনযাত্রা।

Advertisements
Advertisement

আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো এখানে ভ্রমণ করেছেন, অনেকে আবার গিয়ে উঠতে পারেননি, যারা গেছেন বাজারে প্রত্যেকের জানেন মন্দিরের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য –

Advertisements

মায়াপুরের মূল আকর্ষণ হলো এর প্রতিষ্ঠাতা শ্রীলা প্রভুপাদ এর তৈরি মন্দির। মূল মন্দিরের চারপাশে শ্রীলা প্রভুপাদ এর জীবন বর্ণিত হয়েছে। এখান থেকে আরেকটি জায়গায় আপনি ইচ্ছা করলে যেতে পারেন সেটি হল মায়াপুরের চন্দ্রোদয়া মন্দির। নরসিংহ দেব, রাধামাধব এবং পঞ্চতত্ত্ব এই তিন অবতার আপনি দেখতে পাবেন। পঞ্চতত্ত্ব বলতে বোঝানো হয়েছে, শ্রী চৈতন্যদেব, নিত্যানন্দ, অদ্বৈত আচার্য, গদাধর পণ্ডিত এবং শ্রীবাস ঠাকুর। মায়াপুরী যাওয়ার সময় নৌকো বেরোতে হবে।

Advertisements
Advertisement

নৌকো পেরোনোর সময় আপনি একটি অসাধারণ দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে থাকবেন। এখানে ভাগীরথী আর জলঙ্গি একসঙ্গে মিশেছে। আপনি হয়তো ভাবছেন এতে আবার নতুনত্ব এর কি আছে! কিন্তু আপনি দুটি নদীর জল কে একেবারে পৃথকভাবে চাক্ষুষ করতে পারবেন। ভাগীরথীর জল ঘোলাটে আর জলঙ্গির রং কালো। আলাদা দুটি রং আপনি খুব সহজেই খালি চোখে ফারাক করতে পারবেন। মায়াপুরে যাবেন আর প্রসাদ খাবেন না তা কি হয়?

এখানে ভোগ পরিষেবা বেশ পরিষ্কার। ভাত, ডাল, শুক্তো, পাঁচমিশালী তরকারি, পায়েসে ভরা থাকবে আপনার থালা। পর্যটকদের থাকার জন্য এখানে সুবন্দোবস্ত রয়েছে। গদা ভবন, গীতা ভবন, চৈতন্য ভবন রয়েছে। এখানকার মূল উৎসব হল জন্মাষ্টমী, রাধাষ্টমী, ঝুলন যাত্রা, দোলযাত্রা ও শ্রী প্রভুপাদ এর ব্যাস যাত্রা। এই শহরের আরেকটি অংশে মুসলিম জনগণের আধিক্য চোখে পড়ে। যার নাম মিয়াপুর। ধর্মের টানে কিংবা ভ্রমণ এখানে যে কোন একটা কিছুর কারনেই হোক মায়াপুরে ঘুরে আসাই যায়।

তবে এবছর লকডাউনের কারনে ভক্তশূন্য ভাবেই এই উৎসবের সূচনা হয়েছে এবং নিয়ম রক্ষার্থে পূজা ও নৌকাবিহার সবটাই ছোট করে পালিত হবে।

Related Articles

Back to top button