টলিউডবিনোদন

বুম্বাদা-তাপসদা গল্প করলে আমাদের ঘর থেকে বের করে দিত, খোলামেলা আড্ডায় অঞ্জন চৌধুরীর দুই কন্যা

Advertisement
Advertisement

অঞ্জন চৌধুরী বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম জনপ্রিয় কিংবদন্তি পরিচালক ছিলেন। যার তৈরি করা সিনেমা গুলো আজও মানুষের খুব পছন্দের। সম্প্রতি পরিচালকের দুই মেয়ে চুমকি চৌধুরী ও রিনা চৌধুরী এক সাক্ষাৎকারে রীতিমতো পুরনো দিনের কথা বলতে গিয়ে নস্টালজিক হয়ে পড়লেন। কথা বললেন নেপোটিজম থেকে শুরু করে সেইসময়ের তারকাদের নিয়েও।

Advertisement
Advertisement

অঞ্জন চৌধুরীর সিনেমা মানেই একেবারে পারিবারিক গল্প। যেখানে ফ্যামিলি মেলোড্রামা থেকে শুরু করে প্রেম, বিচ্ছেদ ও সাংসারিক পলিটিক্স ছিল সবই। তবে বলাই বাহুল্য, সেইসময়ে অঞ্জন চৌধুরীর বেশিরভাগ সিনেমাতে দেখা মিলত তার এই দুই মেয়ের। কখনো প্রেমিকা, কখনো বোন, আবার কখনো অত্যাচারিত স্ত্রীয়ের ভূমিকায় দেখা মিলত তাদের। বাবা অঞ্জন চৌধুরীর সুবাদেই ছোট থেকেই চলচ্চিত্র জগতের সাথে পরিচয় তাদের। চলচ্চিত্রজগতের একাধিক নামিদামি তারকাদের মাঝেই বেড়ে উঠেছিলেন তারা। তবে বর্তমানে চুমকি চৌধুরী কে মাঝে মাঝে টেলিভিশনের পর্দায় দেখা গেলেও, রিনা চৌধুরী অনেকদিন হল ক্যামেরার সামনের জগৎ থেকে বিদায় নিয়েছেন। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের মাঝে তাকে দেখা না গেলেও জানা গেছে বর্তমানে তিনি পরিচালনার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

Advertisement

অনেকের মতে, অঞ্জন চৌধুরীর সুবাদেই তারা ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গ উঠতেই রিনা চৌধুরী জানিয়েছেন, নেপোটিজম বিষয়টা একেবারেই যুক্তিযুক্ত নয়। তাদের পরিবারে কিংবা তাদের মধ্যে সেভাবে নেপোটিজম বিষয়টা ছিল না। অভিনেত্রীর কথায় অঞ্জন চৌধুরী সেইসময়ে নিজের হাতে বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কেরিয়ার গঠন করে দিয়েছেন। এরপর তিনি আরো বলেন, তারকাদের ছেলেমেয়েরা এমনিতেই প্রচারের আলোয় থাকেন। আর সেই কারণটাই কাজে লেগেছিল। অঞ্জন চৌধুরীর দুই মেয়ে ছবি করছেন, এই কথা শুনে অনেকেই হলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন বলে মনে করেন তিনি।

Advertisement
Advertisement

নেপোটিজমের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, তাদের ভাই সন্দীপ চৌধুরী ধারাবাহিক পরিচালনা করেন। যদি সেরকম হতো তাহলে সে তার ধারাবাহিকে তার দিদিদের সুযোগ করে দিত। কিন্তু সে কখনই তা করেনি সুযোগ করে দিয়েছে নতুনদের। এরপরে তিনি স্টার কিড হিসেবে রাজ-শুভশ্রীর ছেলে ইউভানের প্রসঙ্গও তুলেছিলেন।

চুমকি ও রিনার সাথে সেই সময়ের ইন্ডাস্ট্রির অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বেশ ভালোই সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন তারা। এমনকি এই প্রসঙ্গে চুমকি চৌধুরী জানান, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও তাপস পাল যখন একসাথে বসে গল্প করতেন তখন তাদের ঘর থেকে বার করে দিতেন তারা। পাশাপাশি বলতেন তাদের গল্প শোনার কোন প্রয়োজন নেই তাদের। এরপরই রিনা চৌধুরী জানান, তিনি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের খাটে শুয়ে জিতেন্দ্রর সিনেমা দেখতেন। আর অভিনেতা মাটিতে বসে তার সাথে খুনসুটি করতেন।

এরপর রঞ্জিত মল্লিকের কথা উঠতেই তারা দুই বোনই জানান, তিনি তাদের কাছে পিতৃস্থানীয়। ছোট থেকেই তাকে চেনেন তারা। চুমকি চৌধুরী জানান, ছোটবেলায় রঞ্জিত মল্লিক তাকে মজা করে জিজ্ঞাসা করতেন সে কি বড় হয় নায়িকা হবে? পরবর্তীকালে অভিনয়ে আসার পর তিনি অভিনেতাকে জানিয়েছিলেন তিনি নায়িকা হয়ে দেখিয়ে দিলেন। এরপরও তারা দুই বোন জানান, যেকোনো রকম বিপদে কিংবা পরিস্থিতিতে রাত দুটো বাজেলেও তাদের কাছ থেকে ইন্ডাস্ট্রির দুজন মানুষের কাছে ফোন যায় সবসময়। প্রথমজন হরনাথ চক্রবর্তী, আর দ্বিতীয়জন শ্রীলা মজুমদার।

সন্ধ্যা রায়ের কাছে তারা শিখেছিলেন গ্লিসারিন ছাড়া কিভাবে ক্যামেরার সামনে কাঁদতে হয়। অনুপ কুমার শুটিংয়ের ফাঁকে তাদের ছোটখাট ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিতেন। তবে টলিউডের লবি গঠন নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ ছিলেন দুজনেই। নিজেদের কথার মাধ্যমে দুজনেই বুঝিয়ে দেন বর্তমানের তারকাদের রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ মোটেই ভাল চোখে নেন না তারা। তাদের যে কোনো দিন রাজনীতির ময়দানে দেখা যাবে না, সেকথাও তারা নিজেদের কথার মাধ্যমে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন।

অঞ্জন চৌধুরীর ‘শত্রু’ ছবির রিমেক কোনোদিন তারা করতে চান কিনা সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রিনা চৌধুরী জানান, একটা সময়ে তার বাবার তৈরি ছবি ক্যাসেট প্রায় পাওয়াই যেত না। তিন-চারবার গিয়েও দোকানে পাওয়া যেত না সেই ক্যাসেট। তার কারণ হিসেবে রিনা চৌধুরী জানান, একবার এক ক্যাসেট দোকানের মালিক তাকে জানিয়েছিলেন অনেকেই অঞ্জন চৌধুরীর সেই সমস্ত ক্যাসেট কিনে নিয়ে গিয়ে তার নকল করে ছবি বানাতেন। পরবর্তীকালে তারা নাকি সাফল্য পেয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে তবে তারা কারা সে বিষয়ে তারা কোনদিনই জানতে চাননি। রইল সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিও।

Advertisement

Related Articles

Back to top button