![](https://cdn.bharatbarta.com/wp-content/uploads/2020/09/images-3-7.jpg)
নয়াদিল্লি: দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে চলা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলা রায় আজ, বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশেষে এই মামলার নিষ্পত্তি হল আজ। জুড়ালো সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে মূল অভিযুক্ত বত্রিশ জনকে কার্যত বেকুসুর খালাস করে দিয়েছে লখনউ সিবিআই আদালত। ফলে বেকসুর খালাস হয়েছেন এই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে থাকা লালকৃষ্ণ আদভানি মুরলী মনোহর যোশী এবং উমা ভারতীর সহ আরও হেভিওয়েট নেতারা। লখনউ সিবিআই আদালতে বিচার চলাকালীন বিচারক জানিয়েছেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ভিডিও পাওয়া গিয়েছে তাতে ছবি কার্যত বিকৃত করা হয়েছে। এমনকি স্টিল ছবির কোনও নেগেটিভ সিবিআইয়ের কাছে নেই। যা যা তথ্য দীর্ঘ এত বছর ধরে প্রকাশ করা হয়েছে, তাও যথেষ্ট জোরালো নয় বলে দাবি করেছেন বিচারক। তাই সকলকে বেকুসুর খালাস করে দেওয়ার রায় দিয়েছেন তিনি।
আজ বেলা ১২.১৯ মিনিট নাগাদ বিচারক রায় পড়তে শুরু করেন। তারপর বেলা ১২.২১ মিনিট নাগাদ প্রথম অংশের রায় পড়ে তিনি জানান, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। অর্থাৎ এতদিন ধরে এই ঘটনাকে যেভাবে একটা বড় ষড়যন্ত্র এবং পূর্বপরিকল্পিত বলা হচ্ছিল, তা কার্যত খারিজ করে দিল লখনউ সিবিআই আদালত। বিচারক জানিয়েছেন এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। অতিরিক্ত ভিড় হয়ে যাওয়ার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন ভিড়ে থাকা অসংখ্য মানুষ এই ঘটনাটা আচমকাই ঘটিয়ে ফেলেছে। নেতা-নেত্রীরা বরং তাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কোনও প্ররোচনামূলক ঘটনা এটা নয় বলেই দাবি করেছেন লখনউ সিবিআই আদালতের বিচারক।
এরপর অবশেষে বেলা ১২.২৪ মিনিট: ৩২ জন মূল অভিযুক্তকে কার্যত বেকুসুর খালাস করার রায় ঘোষণা করা হয়। এই রায় ঘোষণার পরই রাজনৈতিক মহল কার্যত তোলপাড় হয়ে উঠেছে। এমনকি বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রীরা। এই মামলার যে রায় দেওয়া হয়েছে, তা পুরোটাই গটআপ, এমনটাই দাবি করছে বিরোধী শিবির।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দশ মাস পর চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। সংঘ পরিবারের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে নাম ছিল লাল কৃষ্ণ আদভানী, মুরলি মনোহর এবং উমা ভারতীর। ২৮ বছর ধরে চলা এই মামলায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাটকীয় মোড় সকলের সামনে উঠে আসে। এমনকি অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে মামলা চলার ফলে ১৬ জন মূল অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। এই মামলায় দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে প্রায় সাড়ে তিনশো সাক্ষ্য শুনেছে আদালত। সাড়ে ছশো নথি খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাও কোনো জোরালো তথ্য নাকি পাওয়া যায়নি বলেই দাবি করেছেন বিচারক। তাই সকলেই বেকসুর খালাস হয়ে গিয়েছে।