নিউজদেশ

ভারতে বাড়ছে নতুন JN.1 সংক্রমণ, জেনে রাখুন কিভাবে থাকবেন সুরক্ষিত

ভারতে এই মুহূর্তে এই নতুন করোনাভাইরাসের প্রকোপ দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করেছে

Advertisement
Advertisement

করোনাভাইরাস আবারও ব্যাপক মাত্রায় ফিরে আসতে চলেছে ভারতে। বেশ কয়েকটি রাজ্য ও জনগণকে করোনাভাইরাস প্রটোকল অনুসরণ মরার আহ্বান জানিয়ে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর ২৬ ডিসেম্বর অব্দি ভারতে মোট ১০৯ টি নতুন করণা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই এই নতুন ভেরিয়েন্ট কে দুশ্চিন্তায় ফেলা করোনাভাইরাসের রূপ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করে ফেলেছে। এর মূল রূপ যদিও করোনা ভাইরাসের প্রথম স্ট্রেন থেকে আলাদা। ফলে সামগ্রিক ঝুঁকির পরিমাণ কম, কিন্তু ঝুঁকির সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এই করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আপডেট।

Advertisement
Advertisement

১. গুজরাটে এই নতুন ভেরিয়েন্ট আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে ১০৯ টি নতুন আক্রান্তের মধ্যে গুজরাটে রয়েছেন ৩৬ জন, কর্নাটকে রয়েছেন ৩৪ জন, গোয়ায় রয়েছেন ১৪ জন, মহারাষ্ট্রে রয়েছে ৯ জন, কেরালায় ৬ জন, রাজস্থানে চারজন, তামিলনাড়ুতে চারজন এবং তেলেঙ্গানায় দুজন।

Advertisement

২. অন্যদিকে এবার দিল্লিতে এই নতুন সাব ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়তে শুরু করেছে। ভালো জুড়ে এই করোনাভাইরাসের সংক্রমনের মধ্যে বুধবার দিল্লিতে করোনাভাইরাসের সাব-ভেরিয়েন্ট JN1 এর সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ জানিয়েছেন জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো তিনটি নমুনার মধ্যে একটিতে কোভিড ১৯-এর এই নতুন ভেরিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে। ইতিমধ্যেই দিল্লির এইমস এই করোনা পজিটিভ কেসের জন্য একটি গাইডলাইন জারি করেছে। আক্রান্ত রোগীদের ফুসফুসের উপসর্গের জন্য পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই গুরুতর অসুস্থ করোনাভাইরাস রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির জন্য হাসপাতালে কিছু স্পেশাল ওয়ার্ড নির্ধারিত হয়েছে। লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতালে করোনা ভাইরাস রোগীদের জন্য ৪৮ টি শয্যা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।

Advertisement
Advertisement

৩. হিমাচল প্রদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ করোনাভাইরাস এর মত লক্ষণযুক্ত রোগীদের পরীক্ষা করতে এবং প্রয়োজনীয় সর্তকতা অবলম্বনের জন্য রাজ্যে একটা নির্দেশ জারি করেছে। মঙ্গলবার হিমাচল প্রদেশের চিকিৎসক সঞ্জীব কুমার জানিয়েছেন, জ্বর সর্দি কাশির লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কাশি সর্দি গলা ব্যথা নাক দিয়ে জল পড়া মাথা ব্যথা এবং জ্বরের মতো শ্বাসকষ্টজনিত রোগের ক্ষেত্রে অবিলম্বে এই পরীক্ষা করতে হবে।

৪. কর্নাটকে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইতিমধ্যেই একটি নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন পদক্ষেপের মধ্যে মাস্ক পরা লক্ষণযুক্ত শিশুদের স্কুলে না পাঠানো এবং সামাজিক দূরত্বের মতো কোভিড যথাযথ আচরণ মেনে চলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও যাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে তাদেরকে সাত দিনের জন্য হোম আইসোলেশন এবং সংক্রামিত রোগীদের জন্য ছুটি নেওয়ার বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে। বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য সতর্কতামূলক ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও কেন্দ্রের কাছ থেকে এই মর্মে করবেভ্যাক্স ভ্যাক্সিনের ডোজ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার

৫. এবার প্রশ্নটা হল ভারতের কি উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার রয়েছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন অবশ্যই রয়েছে। করোনাভাইরাসের এই নতুন ভেরিয়েন্ট অণ্যগুলির মত এতটা মারক না হলেও, একেবারেই যে এই ভেরিয়েন্টকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে সেরকমটা নয়। এখনই এটা বলা কঠিন যে কেবলমাত্র JN1 সংক্রমণের কারণে সংক্রমণ বাড়ছে ভারতে। এরকমও হতে পারে, এর আরও একটি ভেরিয়েন্ট ঘুরছে ভারতে।

৬. এই প্রসঙ্গে এইমসের প্রাক্তন ডিরেক্টর এবং সিনিয়র পালমোলজিস্ট রন্দীপ গুলেরিয়া বলছেন, যদিও নতুন ভেরিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে তবে সংক্রমণ গুরুতর নয়। হাসপাতালে হয়তো ভর্তি হতে হবে না, কিন্তু এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি নতুন ভ্যাকসিন আমাদের দরকার লাগবে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে গত চার সপ্তাহে নতুন করোনাভাইরাস কেসের সংখ্যা ৫২ শতাংশ বেড়েছে। ৮ লাখের বেশি নতুন কেসের রিপোর্ট এসে গিয়েছে গোটা বিশ্বে।

৭. তাই সতর্ক থাকতে হবে এই ভাইরাস থেকে। ভাইরাল সংক্রমনের লক্ষণ যুক্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিজেদের নাক মুখ ঢেকে রাখতে হবে। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য মাস্ক পরতে হবে। এছাড়াও তাড়াতাড়ি করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করতে হবে। সব ধরনের নজরদারি রাখতে হবে সমস্ত জায়গায়। এছাড়াও শুধুমাত্র অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ নয়, আমাদের সমস্ত ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে।

Advertisement

Related Articles

Back to top button