কবি ডুবে মরে, কবি ভেসে যায়, অলকানন্দা জলে! জন্মদিনের শুভেচ্ছা জয়
শ্রেয়া চ্যাটার্জী : ‘বকুল শাখা পারুল শাখা তাকাও কেন আমার দিকে? মিথ্যে জীবন কাটলো আমার ছাই লিখে আর ভস্ম লিখে।’ কবির ভাষায় এমন ছাই, ভস্ম লেখাই আমাদের কাছে পছন্দের কবিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯৫৪ সালে ১০ নভেম্বর বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে একজন আধুনিক বাঙালি কবি হলেন জয় গোস্বামী। ‘বজ্রবিদ্যুত ভর্তি খাতা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান। যে কবিতার বিখ্যাত লাইন
‘হৃদি ভেসে যায় অলকানন্দা জলে, অতল তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে চিনতে পারিনি বলে, হৃদয় ভেসে গেল অলকানন্দা জলে’
ছোটবেলায় তার পরিবার চলে আসে নদীয়ার রানাঘাটে। তখন থেকেই তার স্থায়ী নিবাস সেখানেই। তাঁর পিতা মধু গোস্বামী ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী রাজনীতি করতেন। তার যখন আট বছর পাঁচ মাস বয়স তখন তিনি পিতৃহারা হন। তার মা শিক্ষকতা করে তাকে লালন পালন করেন। তাঁর প্রথম কবিতা ১৩-১৪ বছর বয়সে। নিয়মিত কবিতা লিখতে শুরু করেন ১৬-১৭ বয়স থেকে। তিনি ছেলেবেলা থেকেই খুব গান শুনতেন।
গানের সুর ও বানী তাকে খুব আকর্ষণ করতো। পছন্দের কবি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং শঙ্খ ঘোষ। পুরস্কারের তালিকা ও কিছু কম নয়। তার লেখা ‘যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল’ এই নিয়ে চলচ্চিত্র করা হয়েছে। ১৯৯০সালে এবং ১৯৯৮ সালে পান আনন্দ পুরস্কার ২০০০ সালে পান সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার ২০১৭ ভারতীয় ভাষা পরিষদ।
‘সন্ধ্যেবেলা ঝগড়া হবে, হবে দুই বিছানা আলাদা/ হপ্তা হপ্তা কথা বন্ধ মধ্যরাতে আচমকা মিলন /পাগলী তোমার সঙ্গে ব্রক্ষ্মচারী জীবন কাটাব /পাগলী তোমার সঙ্গে আদম ইভ কাটাব জীবন’
এমন কথা আধুনিক জীবনের কবিতা প্রিয় প্রত্যেকটি প্রেমিক যুবক হয়তো তার প্রেমিকাকে বলেছে। প্রেমিকা হয়তো বলে উঠবে ‘তোমার জন্য লিখতে পারি এক পৃথিবী’। কিংবা ভালোবাসার তাড়ণায় সে বেনীমাধব কে বলে উঠতেই পারে ‘বেণীমাধব বেণীমাধব তোমার বাড়ি যাব’।
কিংবা কোন প্রাক্তন এর জন্য কবিতা ‘সেই শার্ট টা পরে এখন? ক্যাটক্যাটে সেই নীল রং টা? নিজের তো সব ওই পছন্দ, আমি অলিভ দিয়েছিলাম।’ অনবদ্য লেখার ডালি সাজিয়েছেন তিনি। নতুন প্রজন্মকে বেশ উদ্বুদ্ধ করে। জন্মদিনের এই শুভক্ষণে আমরা তার দীর্ঘায়ু কামনা করি।