আন্তর্জাতিকনিউজ

অস্ট্রেলিয়া দাবানলে পুড়ে ছারখার, মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে আসছে পৃথিবীর সামনে

Advertisement
Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জী : গোটা বিশ্ব মেতেছে পয়লা জানুয়ারির আনন্দে। নতুন বর্ষ আসছে, গ্রহণ করে নিচ্ছে নতুন বছরকে। সে সময় অস্ট্রেলিয়া পুড়ছে দাবানলের আগুনে, দাউ দাউ করে জ্বলছে।  আগুনের লেলিহান শিখা একটা গাছ থেকে আরেকটা গাছে ছড়িয়ে পড়ছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙ্গারু দৌড়ে পালাচ্ছে অন্যদিকে, কোয়ালারা একটুখানি ঠান্ডার আশায় বেরিয়ে আসছে। বনাঞ্চল থেকে দমকল কর্মীরা উদ্ধার করছে,  তাদের মুখে তুলে দিচ্ছে জলের বোতল। চারিদিকে অসহায়ত্বের ছাপ, কিন্তু এই দাবানল শুধু অস্ট্রেলিয়াকে ক্ষতি করবে, তা নয় ডেকে আনবে পুরো পৃথিবীকেই মৃত্যুর কাছাকাছি।

Advertisement
Advertisement

কদিন আগেই আমাজনে বিধ্বংসী আগুন আমরা প্রত্যেকে দেখেছি। ছারখার হয়ে গেছিল বনাঞ্চল সাথে বন্য জীবজন্তু। ঠিক অনুরূপ ঘটনাই ঘটেছে অস্ট্রেলিয়াতেও। আমাদের অসহায়ের মতন বসে তাদের জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।  বনের মধ্যে এই ঝলসে যাওয়া কঙ্কাল দের দেহগুলোই যেন আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে পৃথিবী আর বেশিদিন নেই। অস্ট্রেলিয়া সহ গোটা নিউজিল্যান্ড ছেয়ে গেছে কালো ধোঁয়া তে। বায়ু দূষণ হচ্ছে অতিরিক্ত পরিমাণে।

Advertisement

বন্য পশু পাখি থেকে শুরু করে মানুষজনও বেরিয়ে আসছে। আমাজনে আগুনের দাবানলের ঘটনায় ৯ হাজার বর্গকিলোমিটার ধ্বংস হয়েছিল। তা দেখে আমরা সকলে শিউরে উঠেছিলাম। কিন্তু এই বছরই গ্রীষ্মকালে অস্ট্রেলিয়াতে ৬৩ হাজার বর্গকিলোমিটার জঙ্গল দাবানলের কবলে পড়ে। ৫০ কোটিরও বেশি বন্যপ্রাণীর জীবন আজ বিপন্ন। দমকল কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কিছু কাজ হচ্ছে না। তারাও কোনোদিন ভাবতে পারেনি এরকম ভয়ঙ্কর দাবানল। 

Advertisement
Advertisement

আরও পড়ুন : শক্তির ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করুন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল চীন

কিন্তু কেন এই দাবানল? বারবার কেন বনাঞ্চল পুড়ে ছাই হয়ে যাবে? বিজ্ঞানীরা কিন্তু অনেকদিন আগেই  মানুষকে সচেতন করেছিলেন। তারা বলেছিলেন পৃথিবীর তাপমাত্রা এত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে দাবানল একসময় মারাত্মক আকার ধারণ করবে। সাধারণত শুকনো গাছে দাবানল লাগে।  অস্ট্রেলিয়ার বনাঞ্চল এতটাই শুষ্ক হয়ে গেছে যে দাবানল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। পৃথিবীর সামনে চলে এসেছে সেইদিন, আর বোধহয় বেশিদিন না।

কারণ আমাজন, অস্ট্রেলিয়া এই সমস্ত বনাঞ্চল যদি পুড়ে খাক হয়ে যায়।  তাহলে পৃথিবীর পক্ষে বেঁচে থাকাটাই মুশকিল। কারণ এরাই পৃথিবীর ফুসফুস, অক্সিজেনের আধার। ফুসফুস ছাড়া কারোর পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব না। কিন্তু সেই ফুসফুসই আজ বিপন্ন। মানুষ একদিন নিজেই চেয়েছিল সমস্ত বনাঞ্চল কেটে উন্নতির শিখরে উঠতে।

কিন্তু আজ বুঝি সেই প্রকৃতি দেবীর প্রতিশোধ নেবার পালা। প্রকৃতির কোল থেকে গাছ কেটে মানুষ তৈরি করেছে উঁচু বাড়ি,  গাছের ডালপালা দিয়ে তৈরি হয়েছে আসবাবপত্র সৌখিন জিনিস। পুকুর বুজিয়ে গড়ে তুলেছে বাসস্থান। কিন্তু আজ বুঝি মানুষ সেই দিনটার জন্য আফসোস করে, প্রতিনিয়ত মানুষ হয়তো বলে ‘দাও ফিরে সে অরণ্য লও এ নগর’। ইট-কাঠের, কংক্রিটের জগতে মানুষের আজ দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাইতো সবুজায়নের জন্য একচিলতে বারান্দাতেও বৃক্ষরোপণে মানুষ চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু অনেকটা সময় চলে গেছে। 

Advertisement

Related Articles

Back to top button