সম্প্রতি নারী সুরক্ষা ও ধর্ষণ নিয়ে বেলাগাম বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল সরাসরি শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন। তিনি তমলুকের একটি সভায় উপস্থিত থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যে চলতে থাকা অরাজকতা এবং যত্রতত্র ধর্ষণের মত নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদে। রাজ্যে চলা ধর্ষণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি উদাহরণ দিয়েছেন, মালদায় দুদিন আগে ৬ বছরের বাচ্চাকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং তারকেশ্বরে ৭-৮ বছরের বাচ্চাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
তারপরই তিনি চাঁচাছোলা ভাষায় জননেত্রীকে আক্রমণ করে বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তৃণমূল পার্টির কর্মীরা এই ধর্ষণ করছে। এছাড়াও তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, “আপনারা জানেন এই তৃণমূল কর্মীরা কি করে এত ধর্ষণ করার সাহস পায়। আসলে দিদিমণি বলে দিয়েছে তোদের চাকরি দিতে পারিনি তো, তাই তোরা ধর্ষণ করে মনোরঞ্জন করে নে। তোরা ধর্ষণ করে নিলে আমি ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবো।” তিনি আরো যোগ করেছেন, “তোদের এন্টারটেইনমেন্টের জন্য যখন তোদের শরীর গরম হয়ে যাবে তখন তোরা গিয়ে ধর্ষণ করে নিবি।”
অন্যদিকে অগ্নিমিত্রা পাল এর এমন কটাক্ষের কড়া ভাষায় পাল্টা জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, “তৃণমূল সরকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আদর্শ। নিশ্চিতভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলো শাসক দল তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।” কিন্তু যে এই ঘটনাকে নিয়ে তাচ্ছিল্য করে তাকে মানুষের পর্যায়ে ধরা যায় না বলেই আক্রমণ করেছেন তিনি। এদিন তিনি অগ্নিমিত্রা পাল এর কথার জবাব দিতে উত্তরপ্রদেশ হাথরস ঘটনার কথা আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ উত্তরপ্রদেশ নয়। সেখানে তো ধর্ষণের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং এখন অব্দি তার পরিবারকে নজর বন্দি করে রাখা হয়। বরং পশ্চিমবঙ্গে এরকম নিন্দনীয় ঘটনা ঘটলে প্রশাসন ও শাসক দল তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এছাড়াও অগ্নিমিত্রা পাল এর কথার তীব্র সমালোচনা করেছেন সিপিএম নেতা মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, “বিজেপি ধর্ষণকে একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিপক্ষ বিজেপি দুজনেই নির্বাচনের আগে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে মশগুল আছে। তারা কেউই নারী সুরক্ষা দিতে পারে না।” এছাড়াও ধর্ষণের কথা বলতে গেলে উত্তরপ্রদেশের যোগী রাজ্যে তাহলে কি হচ্ছে বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। মহিলা হয়েও কি করে অগ্নিমিত্রা এমন কটু কথা বলতে পারে তা ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।