রাজীব ঘোষ: সম্প্রতি দিল্লির সদর দফতরে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এবং বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।দিল্লি থেকে ফিরে এসেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ করলেন শোভন।দীর্ঘদিন ধরে মমতার সঙ্গে থেকে রাজনৈতিক লড়াই করেছেন।তৎকালীন সিপিএমের আমলে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বহু সংগ্রাম করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।দলবদল করার পর সেই সমস্ত আন্দোলনের কথা তুলে ধরছেন তিনি।মমতার ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।
বর্তমানে মমতা শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য যে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাইছেন।দলের পুরনো নেতা কর্মীরা আর সম্মান পান না।অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে তৃণমূলে আসা ব্যক্তিরাই এখন তৃণমূলের প্রথম সারিতে রয়েছেন।শোভনের কথায়, কোনো দরাদরির বিষয় নয়।তৃণমূল ছেড়ে চলে এসেছি।দ্রুত রাজ্যে রাজনৈতিক জমি হারাচ্ছে তৃণমূল।আগামী ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের ক্ষমতায় আসতে পারবে না।শোভন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে দলকে রক্ত জল করে লড়াই দিয়ে জিতিয়েছি।তবে তৃণমূল ত্যাগের নেপথ্যে অভিষেকের উত্থানের কোনো ব্যাপার নেই বলে দাবি করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।শোভনের বান্ধবী অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিস্ফোরক দাবি করে বলেন, দফতর একটা টর্চার চেম্বার।
টর্চার চেম্বারে ঢুকছেন আর ছিটকে আসছেন।শোভনের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যবহার সৎ মায়ের মতো বলে অভিযোগ করেন বৈশাখী।তিনি আরও বলেন, রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয় নি, তার প্রতিবাদ করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।একাধিক বার শোভনকে দলীয় সভায় এমন কিছু বক্তব্য বলা হয়েছে তাতে সম্মানের প্রশ্ন এসেছে।এক সাক্ষাৎকারে শোভন ও বৈশাখী দুইজনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে আক্রমণ করেছেন।
কলকাতার বেহালায় বিজেপি অফিসের উদ্বোধন করার কথা ছিল শোভন চট্টোপাধ্যায়ের।রাতারাতি কলকাতা করপোরেশনের পক্ষ থেকে সেই অফিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে।এই বিষয়ে বিজেপি নেতা শোভন বলেন, প্রতিহিংসা থেকেই রাতারাতি নিয়ম বদল করে অফিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে।তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য নিয়ম মেনেই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে।স্বাভাবিক ভাবেই একটা বিষয় পরিস্কার, শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগদানের ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু তৃণমূল নেতা কর্মীরা আগামী দিনে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন।যার ফলে এই জায়গায় বিজেপি সাংগঠনিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।