ইভেন্ট

জন্মাষ্টমী ও শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা! জেনে নিন অজানা তথ্য

Advertisement

শুভ জন্মাষ্টমী, পৃথিবীতে পরমাত্মা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জম্মতিথি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে দুষ্টের দমনে শিষ্টের পালন এবং ধর্ম রক্ষার লক্ষ্যে মহাবতার ভগবানরূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মানবরূপের পৃথিবীর আবির্ভাবের কারণ সম্পর্কে গীতায় তিনি বলেছেন, ‘যদা যদাহি ধর্মস্য গ্লানি ভবতি ভারত।

অভ্যুত্থানম ধর্মস্য তদাত্নানং সৃজাম্যহম।
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশয় চ দুষ্কৃতাম।
ধর্ম সংস্থাপনার্থায় সম্ভাবামি যুগে যুগে

হে ভবত, যখনই পৃথিবীতে অধর্ম বেড়ে যায় তখন আমি অবতীর্ণ হই, অবতীর্ণ হয়ে সাধুদের রক্ষা, দুষ্টের বিনাশ ও ধর্ম স্থাপন করি। ঐতিহাসিকদের ধারণা মতে ১৫০৬ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। সেই সময় অসুর রাজারা ছিলো খুবই অত্যাচারী। তাদের অত্যাচারে সকলেই অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এটি আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার বছর আগের কথা। দিন দিন অসুরদের অত্যাচার এতই বেশী হয়ে উঠে যে দেবদেবীগণ বাধ্য হয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এর পার্থনা করেন। তাদের প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে শুধুমাত্র ব্রহ্মাকে অবগতির জন্য দৈববাণীতে বলে, “হে ব্রহ্মা, আমি খুব তাড়াতাড়ি যদুবংশীয় রাজাদের রাজধানী মুথরা রাজা সুরসেনের পুত্র বসুদেবের সন্তান রূপে দেবকীর অষ্টম গর্ভে আবির্ভূত হব। তখন উগ্রসেন নামে মথুরার এক রাজা ছিলো। রাজা ছিলো প্রচন্ড রকমের ধার্মিক। কিন্তু রাজা ধার্মিক থাকলে কি হবে, তার ছেলে কংস ছিল খুবই অত্যাচারী।

এদিকে ক্ষমতালোভী কংস পিতা উগ্রসেনকে বন্দি করে মথুরার সিংহাসন দখল করে। তখন আত্মীয়স্বজন ও বিশেষ করে যাদবকুল বিদ্রোহী হয়ে উঠলে তাদের সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহ প্রশমনে কৌশল হিসেবে কংস যাদবকুলের শুর সেনের পুত্র তার বিশ্বস্ত বন্ধু বাসুদেবের সঙ্গে তার বোন দেবকীর বিয়ে দেন। কংসের আশা-দুরাশায় পরিণত হল। সদ্যপরিণীতা বোন দেবকীকে বাসুদেবসহ রথে করে নিয়ে যাওয়ার সময় কংস দৈববাণী শুনতে পান : ‘তোমার এই বোনের অষ্টম সন্তানই হবে মৃত্যুর কারণ।’ মৃত্যুর আশংকায় উত্তেজিত কংস দেবকীকে হত্যা করতে উদ্যত হলে বসুদেব কংসকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, দেবকীর উদরে যে সন্তান জন্ম নেবে তাকে কংসের হাতে তুলে দেবেন। কংস বোন দেবকীকে তখন হত্যা থেকে বিরত থাকলেও বোন ও ভগ্নিপতিকে কারাগারে নিক্ষেপ করতে দ্বিধা করেননি।

এ অবস্থায় বাসুদেব ও দেবকীর বিবাহ বাসর হল কংসের কারাগারে। এরপর কংস দেবকীর সন্তান হবার খবর পেলেই আসে এবং একের পর এক সন্তান কে হত্যা করে। এবার অষ্টম গর্ভের সন্তান অর্থাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মগ্রহণ করার পালা। মাস ছিলো ভাদ্র, তিথি ছিলো অষ্টমী এবং রজনী ছিলো ভীষণ দুর্যোগময়। প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে প্রকৃতি ধারণ করে এক অন্যরকম মূর্তি, বিদ্যুৎ উচ্ছ্বলিত ঠিক এমন সময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দেবকীর গর্ভে আবির্ভূত হন এবং দৈববানী শোনা যায় “বসুদেব, তুমি এখনই গোকুলে যেয়ে নন্দের স্ত্রী যশোদার পাশে তোমার ছেলেটিকে রেখে এসো এবং এই মুহূর্তে তার যে কন্যা শিশুটি জন্মগ্রহণ করেছে তাকে এনে দেবকীর কোলে শুয়ে দাও। আমার মায়ায় পৃথিবীর সমস্ত এখন গভীর ঘুমে অচেতন, যার ফলে কেউ কিছুই জানতে পাবে না।” এইভাবে শ্রীকৃষ্ণদেব পৃথিবীতে আসে। এরপর কংস শ্রীকৃষ্ণকে মারার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে। কিন্তু কোনো প্রচেষ্টাই সফল হয়নি। অবশেষে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কংসকে বধ করে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন।

Related Articles

Back to top button