অফবিট

‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’, সূর্য সেনের সঙ্গে লড়াই করেন দুই বাঙালি নারী প্রীতিলতা ও কল্পনা

Advertisement
Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – সময়টা ছিল ১৯৩০। আজকের দিনে অর্থাৎ ১৮ ই এপ্রিল, ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ হয়েছিল মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে। সূর্যসেন ছাড়াও তার দলে ছিলেন গণেশ ঘোষ লোকনাথ বল নির্মল সেন অনন্ত সিং অপূর্ব সেন, অম্বিকা চক্রবর্তী, বিধুভূষণ ভট্টাচার্য, অর্ধেন্দু দস্তিদার, হরি গোপাল বল এরা ছাড়াও ছিলেন দুজন নারী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এবং কল্পনা দত্ত। একজন ১৪ বছরের বালক ও ছিলেন তার নাম সুবোধ রায়। কতদিন আগে বিপ্লবীর কাজে নারীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন এটাই অনেক। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর নাম আমরা অনেকেই শুনে থাকবো কিন্তু কল্পনা দত্তের নাম অল্পশ্রুত। বাঙালি নারীদের থেকে তিনি অনেকটাই বেশি লম্বা ছিলেন, সুন্দর, বলিষ্ঠ দেহ, গায়ের রং কাঁচা হলুদ আর হাসি ছিল ভারী মিষ্টি। নারী হয়ে বোমা পিস্তল বাধার দৃষ্টান্ত তারা রেখে গেছেন। পুরুষের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কি করে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় তারা দেখিয়েছেন। কল্পনা দত্ত লিখেছিলেন, ‘it was an iron rule for the revolutionaries that they should keep aloof from the women’. জীবনে কখনই কোন অবস্থাতেই তিনি থেমে থাকেননি।

Advertisement
Advertisement

অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অভিযান শুরু হয় ১৮ ই এপ্রিল রাত দশটায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গণেশ ঘোষের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অস্ত্রাগারের এবং লোকনাথ বাউল এর নেতৃত্বে ১০ জনের একটি দল সাহায্যকারী বাহিনীর অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা গোলাবারুদের অবস্থান শনাক্ত করতে ব্যর্থ হন। বিপ্লবীরা সফলভাবে টেলিফোন, টেলিগ্রাফ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হন এবং চলাচল বন্ধ করে দেন। সফল বিপ্লবের পর বিপ্লবী দলটি পুলিশ অস্ত্রাগারের সমবেত হন বিপ্লবীদের সফলভাবে টেলিফোন টেলিগ্রাফ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হন।

Advertisement

সফল বিপ্লবের পর, বিপ্লবী দল পুলিশ অস্ত্রাগারের সমবেত হন, মাস্টারদা সূর্য সেনকে মিলিটারি স্যালুট প্রদান করা হয়। রাত ভোর হওয়ার পূর্বে চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা সেই জায়গা ত্যাগ করেন। চট্টগ্রাম সেনা নিবাস সংলগ্ন জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া সেনা বিপ্লবীদের কয়েক হাজার সৈন ঘিরে ফেলে। ২২ এপ্রিল ১৯৩০ সালে দু’ঘণ্টার প্রচণ্ড যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর ৭০ থেকে ১০০ জন এবং বিপ্লবী বাহিনীর ১২ জন শহীদ হন। সূর্যসেন গৈরলা গ্রামে ক্ষীরোদ প্রভা বিশ্বাসের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন। ১৬ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ সালের রাতে বৈঠক করছিলেন কল্পনা দত্ত, শান্তি চক্রবর্তী সাথে। তবে সূর্যসেনের উপস্থিতির খবর পুলিশ কোনো ভাবে জানতে পেরে অস্ত্রসহ সূর্যসেন কে ধরে নিয়ে যান। ১৯৩৪ সালে তারকেশ্বর দস্তিদার সহ ১২ ই জানুয়ারি সূর্যসেনের ফাঁসি হয়।

Advertisement
Advertisement
Advertisement

Related Articles

Back to top button