কলকাতানিউজরাজ্য

আর কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতায় আছড়ে পড়তে পারে টর্নেডো, সতর্কবার্তা দিলেন মমতা

গতকাল হালিশহর সহ হুগলির একাধিক এলাকায় ঝড়ের তীব্র দাপটে একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে সম্পূর্ণ এলাকা

Advertisement

ইতিমধ্যেই সুপার সাইক্লোন যশের ল্যান্ডফল হয়ে গিয়েছে উড়িষ্যায়। উড়িষ্যাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার পর এবারে পশ্চিমবঙ্গেও শুরু হয়ে গিয়েছে যশের তাণ্ডব। ইতিমধ্যেই কলকাতায় শুরু হয়ে গিয়েছে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। তবে শুধুমাত্র বৃষ্টি নয়, এবারে কলকাতার বিক্ষিপ্ত এলাকায় আছড়ে পড়তে পারে টর্নেডো, এমনটাই আশঙ্কা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখতে গতকাল রাত থেকেই নবান্নের কন্ট্রোল রুমে অবস্থান করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখান থেকেই যোগাযোগ রাখছেন প্রত্যেকটি জেলার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে। নিচ্ছেন তাদের থেকে প্রতিটি মিনিট এর আপডেট। গতকাল হুগলির হালিশহর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় দেখা গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই কথা মাথায় রেখেই কলকাতার জন্য আগাম সতর্কবার্তা জারি করলেন মমতা।

নবান্নের কন্ট্রোল রুম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, কলকাতায় এবারে টর্নেডো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বেলা ১২ টা কি ১ টা নাগাদ কলকাতার কিছু কিছু এলাকায় টর্নেডোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই সতর্কবার্তা বেশ কড়া নজরে দেখছে আবহাওয়া দপ্তর এবং কলকাতার বিভিন্ন এলাকার পুর প্রশাসকরা। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় গতকাল টর্নেডো দেখা গেছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এবারের সতর্কবার্তা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

খবর অনুযায়ী গতকাল দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ হালিশহরের প্রসাদনগর এবং বীজপুর এলাকায় গতকাল টর্নেডোর আক্রমণে একেবারে এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। বহু টিনের চাল উড়ে যায়, ভেঙে যায় জানলার কাঁচ, আহত হন কমপক্ষে ২৫ জন। ঘূর্ণিঝড়টির দাপট এত বেশি ছিল যে এখনো পর্যন্ত আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। দুপুরবেলা বাসিন্দারা দেখেন ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসছে তাদের দিকে। হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ার মত শব্দে ভরে যায় পুরো এলাকা। মিনিটের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় ঝড়ের তান্ডব।

তৎক্ষণাৎ এলাকার সব কিছু ভেঙে দিতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়। কারো বাড়ির টালি ভেঙে যায়, কারো চাল ভেঙে পড়ে মাথা ফেটে যায়। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা তছনছ হয়ে যায়। এই ঘূর্ণিঝড়ের কথা মাথায় রেখেই এবারে কলকাতায় ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য ইতিমধ্যেই শহরের প্রধান ৮টি উড়ালপুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, যতক্ষণ পর্যন্ত না যশ এর প্রভাব শেষ হবে ততক্ষণ পর্যন্ত উড়ালপুলে কোন গাড়ি চালানো যাবে না। কিছুদিন আগে কালবৈশাখে বৃষ্টিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বেঘোরে মারা গিয়েছিলেন বছর ২৫ এর একজন যুবক। ওই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেই দিকে খেয়াল রেখে গতকাল রাত থেকেই কলকাতার ব্যস্ততম এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এখন ঘূর্ণিঝড় চললেও রাত্রেবেলা আবার ভরা কোটালের সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের অশনিসংকেত কিন্তু এখনই কাটেনি।

Related Articles

Back to top button