অফবিটদেশ

জল কষ্ট দূর করতে ১৭৪ টি জলাধারকে চোল রাজত্বের অনুকরণে সংরক্ষণ করেছেন এই IAS অফিসার

Advertisement
Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি : ২০১৯ সালের পন্ডিচেরির করাইকাল জেলায় কৃষকরা পুরো জমির পাঁচ ভাগের এক ভাগ অংশে তারা শুধুমাত্র চাষ করতে পারতো। কারণ সমস্যা ছিল জলের। এক বালতি জল আনতে তাদের মাইলের পর মাইল হেঁটে যেতে হতো। আর জলস্তর নেমে গিয়েছিল প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ ফুট নিচুতে। এমন পরিস্থিতিতে চাষাবাদ করা তো দূরের কথা বেঁচে থাকাটাই একটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল সেখানকার মানুষদের কাছে। কম বৃষ্টিপাত এবং কাবেরী নদীর জলের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে এই অঞ্চলটিকে একটি ‘খরা প্রবণ’ অঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এখানকার ডিসট্রিক্ট কালেক্টর বিক্রন্থ রাজা একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এই ব্যবস্থাটির অনুপ্রেরণা তিনি পেয়েছিলেন চোল রাজত্বের থেকে। চোল রাজত্বের অনুকরণে তিনি এইখানে নদী, নালা, পুকুর গুলিকে আবার নতুন করে সংরক্ষন করতে শুরু করেন।

Advertisement
Advertisement

Advertisement

রাজা তার এই প্রজেক্ট এর নাম দেন ‘নাম নির’ অর্থাৎ ‘আমাদের জল’। তাকে এই প্রজেক্টে সাহায্য করেন গ্রামের অধিবাসীরা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মন্দির, এবং সরকার। চোল রাজাদের আমলে এই অংশটি অঞ্চলটিতে প্রায় ৪০০ টি জল সংরক্ষণের জায়গা ছিল। এক সময় বন্যার জলে গোটা অঞ্চল প্লাবিত হতো এবং এই জায়গাগুলোতে জলে টইটুম্বুর থাকতো। আর সারা বছরই বৃষ্টির জল থেকেই চাষাবাদের কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই অঞ্চলে এখন খরায় পরিণত হয়েছে। চোল রাজাদের আমলে ইঞ্জিনিয়াররা অসাধারণ একটা নিয়ম মেনে এই জলের সংরক্ষণের ব্যবস্থা গুলি করেছিলেন, যা সত্যিই অভাবনীয়। রাজা তাদের কথা ছোটবেলায় স্কুলেতে পড়েছিলেন। আর এইটাই তাকে যথেষ্ট উৎসাহ দেয়।

Advertisement
Advertisement

ছোটবেলা থেকেই কারাইকালকে ‘ধানের ভান্ডার’ বলা হয় এমনটাই রাজা শুনে এসেছে। তাই আধুনিক যুগের এই সমস্যা সমাধানের জন্য রাজা চোল রাজত্বের পুরনো পদ্ধতি অনুসরণ করে ১৭৮ টি জল সংরক্ষণের জায়গাকে পুনরুদ্ধার করেছেন। মানুষ যতদিন জলের জন্য পুকুর ব্যবহার করতো পুকুরকে তারা সংরক্ষণ করতো, কিন্তু যখনই কুয়ো পেল তখনই সে পুকুরকে অগ্রাহ্য করতে শুরু করলো।যখন ই বাড়ি বাড়ি পাইপলাইনের মাধ্যমে জল গেল তখন পুকুর এবং কুয়ো কে আস্তে আস্তে অগ্রাহ্য করতে শুরু করলো। এই ভাবেই জল সংরক্ষণের জায়গাগুলি আস্তে আস্তে ধ্বংসের পথে এগিয়ে ছিল। রাজা এবং তার সঙ্গীরা প্রথম কাজ শুরু করেছিল যে মন্দির গুলি ছিল তার সংলগ্ন পুকুরগুলো দিয়ে।

রাজার মত মানুষের আমাদের পৃথিবীতে খুবই প্রয়োজন। সবাই যদি একটু করে এগিয়ে আসেন তাহলে হয়তো পৃথিবী আগের মত সুজলা-সুফলা হয়ে উঠবে। তামিলনাড়ুতে যে তীব্র জল কষ্ট দেখা গিয়েছিল তা শুধু তামিলনাড়ু নয় গোটা ভারতবর্ষের কাছে একটা চিন্তার বিষয় বটে। জলস্তর এইভাবে ক্রমাগত নিচে নেমে গেলে মানুষের পক্ষে বাঁচাই কঠিন হয়ে পড়বে।

Advertisement

Related Articles

Back to top button