টলিউডবিনোদন

ভাঙা বিয়ে থেকে একাধিক প্রেম, স্বস্তিকার চল্লিশে ফিরে দেখা তাঁর জীবন

Advertisement
Advertisement

অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি মানেই বিতর্কিত এক চরিত্র। তিনি না চাইলেও তাঁর সম্পর্ক নিয়ে তৈরী হয়ে যায় গসিপ। প্রকৃতপক্ষে স্বস্তিকা ইন্ডাস্ট্রির ছকভাঙা মেয়ে। সমাজ সারাজীবন এই ধরনের মেয়েদের নিয়ে ক্রিটিসাইজ করে এসেছে। কিন্তু স্বস্তিকার তাতে কিছু যায় আসে না। সুন্দরী স্বস্তিকা মুখার্জি মাত্র আঠেরো বছর বয়সে ‘হেমন্তের পাখি’ ফিল্মে একটি ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন। কিন্তু এরপর স্বস্তিকাকে তাঁর বাবা সন্তু মুখোপাধ্যায় বিয়ে দিয়ে দেন তাঁর থেকে বয়সে অনেকটাই বড় প্রমিত সেনের সঙ্গে। বিখ্যাত গায়ক সাগর সেনের ছেলে প্রমিত সেন অষ্টাদশী স্বস্তিকাকে বিয়ের পর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে শুরু করেন। স্বস্তিকাও কিন্তু সেদিন বাপের বাড়ি ফিরে এসে আর পাঁচটা মেয়ের মতোই তাঁর সমস্যার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সমস্যা সমাধানের বদলে তাঁর বাবা-মা তাঁকে বলেছিলেন মানিয়ে নিতে। এরপর স্বস্তিকা কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় তাঁর উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়।

Advertisement
Advertisement

অসহনীয় অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন স্বস্তিকা। স্বস্তিকা থেকে স্বস্তিকা মুখার্জি হয়ে ওঠার সেটাই ছিল শুরু। স্বস্তিকা তাঁর স্বামী প্রমিত সেনের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন। নিজের ও মেয়ের খরচ চালানোর জন্য স্বস্তিকা অভিনয় করা শুরু করেন। বিভিন্ন টেলিফিল্ম ও ফিল্মে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। অভিনয়ের পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন স্বস্তিকা। এর মধ্যেই তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। স্বস্তিকা তাঁর স্বামী প্রমিতের কাছ থেকে কোনো খোরপোষ নিতে চাননি।

Advertisement

Advertisement
Advertisement

অভিনেতা জিৎ-এর বিপরীতে নায়িকা হিসাবে ‘মস্তান’ ফিল্মে অভিনয় করার সময় জিৎ ও স্বস্তিকার সম্পর্কের শুরু হয়। একসময় জিৎ ও স্বস্তিকার বিয়ের গুঞ্জন শুরু হয়। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর জিৎ বিয়ে করেন মোহনাকে। অপরদিকে ‘ব্রেক ফেল’ ফিল্মের শুটিং-এর সময় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন স্বস্তিকা। চৌরঙ্গীর রুফটপ রেস্তোরাঁয় স্বস্তিকাকে প্রোপোজ করেছিলেন পরমব্রত। কিন্তু স্বস্তিকার প্রাক্তন স্বামী প্রমিত অভিযোগ করেন পরমব্রতর জন্য স্বস্তিকার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরেছে। এমনকি এই কারণে পরমব্রতকে একরাত জেলেও কাটাতে হয়েছে। অপরদিকে পরমব্রতর মা সুনেত্রা ঘটক স্বস্তিকার সঙ্গে পরমব্রতর সম্পর্ক মানতে পারেননি। এরপর পরমব্রত ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিস্টলে ফিল্ম মেকিং নিয়ে পড়তে চলে যান। চিরকালীন ‘উওম্যানাইজার’ পরমব্রত সেখানে ডাচ মেয়ে ইকা স্কাউটনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ব্রিস্টল থেকে পরমব্রত ইমেল-এর মাধ্যমে স্বস্তিকার সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টেনে দেন। এরপর 2011 সালে সুব্রত সেন পরিচালিত ‘নন্দিনী’ ফিল্মে অভিনয়ের সময় অভিনেতা দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্বস্তিকার সম্পর্কের গুঞ্জন শোনা যায়। কিন্তু দেখা যায় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্বস্তিকার সম্পর্ক রয়েছে। স্বস্তিকার বিভিন্ন ফিল্মের শুটিংয়ের সময় ফ্লোরে উপস্থিত থাকতেন সৃজিত। কিন্তু এই সম্পর্ক ভেঙে যায়। পরবর্তীকালে সৃজিত বিয়ে করেন মিথিলাকে। এরপর পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয় স্বস্তিকার। কিন্তু সুমন বিবাহিত ছিলেন। তিনি নিজের বিয়ে না ভেঙে স্বস্তিকার সঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন। সুমন বিবাহিত হওয়ার কারণে স্বস্তিকা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। একটি নামী হোটেলে ঘটনাটি ঘটে। স্বস্তিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে সুমন স্বস্তিকার সঙ্গে দেখা করতে না গেলেও স্বস্তিকা ফিরে আসার পর সুমন ও স্বস্তিকা মুম্বইতে চলে যান। সেখানে সুমনের কেনা নতুন ফ্ল্যাটে লিভ-ইন রিলেশনশিপে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। স্বস্তিকা মুম্বইতে কাজ করা শুরু করেন। কিন্তু অচিরেই এই সম্পর্কেরও ইতি ঘটে।

তবে ব্যক্তিগত জীবন ও প্রফেশনাল লাইফের মধ্যে ব্যালান্স রেখে চলতে পছন্দ করেন স্বস্তিকা। প্রাক্তনদের সঙ্গে এখনও অনায়াসেই অভিনয় করেন তিনি। মিডিয়ার সামনে পরমব্রতর সঙ্গে স্বস্তিকা একাধিকবার ছবিও তুলেছেন। চলতি বছর চল্লিশে পা দিলেন স্বস্তিকা। কিন্তু জীবনের এতগুলি বসন্ত পার করেও আজও নিজের জীবনের এথিকস নিজেই ঠিক করেন তিনি।

Advertisement

Related Articles

Back to top button