নিউজরাজ্য

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জিএসটি আসলেই খরচ বাড়বে ১২৫ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে চিন্তায় নবান্ন

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা যখন রাজ্যের সমস্ত নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যপরিসেবায় জিএসটির ভ্রুকুটি সমস্যায় ফেলেছে রাজ্য সরকারকে

Advertisement
Advertisement

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের বিপুল বোঝার উপর এবার জিএসটি প্রকল্পের বিপুলতর বোঝা রাজ্য সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মুহূর্তে। এই বোঝা রাজ্য সরকারের জন্য খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। স্বাস্থ্য সাথী সুবিধা যখন সমস্ত নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে, তারপর থেকেই রাজ্য সরকারের ভাড়ারে টান পড়তে শুরু করেছিল। তবে এতদিন পর্যন্ত স্বাস্থ্য পরিষেবায় জিএসটির ভ্রুকুটি না থাকলেও এবারে বাড়তি খরচ মাথা ব্যাথা হতে পারে রাজ্য সরকারের জন্য। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, এবারে স্বাস্থ্য জিএসটির বোঝার স্বাস্থ্য সাথীর উপরে পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলতে চলেছে। তাদের খরচ বাড়বে প্রায় কয়েকশো কোটি টাকা। রাজ্যের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে আর কতটা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে সেই চিন্তা রীতিমতো আশংকার রূপ নিয়েছে।

Advertisement
Advertisement

প্রথমদিকে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা পেত সমাজের কিছু নির্দিষ্ট অংশের মানুষ। সেই সময় প্রকল্পের খরচ সরকারের নাগালে ছিল। পরে উপভোক্তা পরিধি বাড়তে বাড়তে এখন যেকোনো নাগরিক চাইলেই এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। এখন রাজ্যের স্বাস্থ্য সাথী উপভোক্তা পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৩২ লক্ষ। এ প্রকল্পের ক্ষেত্রে আয়ের কোনো উর্ধ্বসীমা পর্যন্ত নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, এবছর প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প থেকে খরচ হবে বলে ধরে রেখেছে রাজ্য সরকার। জিএসটি কাউন্সিলের আগের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আইসিইউ ছাড়া ৫০০০ টাকার বেশি কেবিন ভাড়ার উপরে ৫% এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ১২ শতাংশ জিএসটি বসানো হবে।

Advertisement

পাশাপাশি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে বীমার প্রিমিয়ামের উপরে ১৮% জিএসটির হার। অনেক প্রশাসনিক এবং আর্থিক পর্যবেক্ষক বলছেন, নূন্যতম ৫ শতাংশ জিএসটির কারণে পরোক্ষ প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের উপর। রাজ্য সরকারের খরচ হবে আরও ১২০ থেকে ১২৫ কোটি টাকা। এই অতিরিক্ত অর্থের সংস্থান করতে মাথা ঘামাতে হতে চলেছে অর্থকর্তাদের। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, শয্যা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ বাড়লে তার প্রভাব চিকিৎসা বিলের উপরে পড়তে পারে। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা খরচের প্যাকেজের মধ্যে হাসপাতালের ঘর ভাড়া থাকে। তার উপরে কাঁচামালে মেটানো জিএসটিতে ছাড় কিংবা ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট পাওয়া যাবে না। এর ফলে চিকিৎসার খরচে করের এই বোঝা মেটাতে হবে সাধারণ মানুষকে।

Advertisement
Advertisement

এই ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী আওতায় এখন যে সমস্ত সরকারি প্যাকেজ মানতে হচ্ছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে এই সমস্ত প্যাকেজ পরিমার্জনের দাবি তুলতে পারে হাসপাতাল নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে সরকারের উপর একটা বাড়তি আর্থিক বোঝা চাপার আশঙ্কা থাকবে। এভাবে জিএসটি বসানোর ক্ষেত্রে একটা আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে এবং নতুন করে জিএসটি লাগু করেছে, তাতে রাজ্য সরকারের সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।

Advertisement

Related Articles

Back to top button