টলিউডবিনোদন

কাজ করছে না দুই কিডনি, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

Advertisement
Advertisement

প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা এই মুহূর্তে যথেষ্ট সঙ্কটজনক। সোমবার বিকাল 3 টে নাগাদ তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়েছে। তাঁর স্নায়বিক সমস্যা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করেছে। সৌমিত্রবাবু তন্দ্রাচ্ছন্ন রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে,তাঁর কিডনি ক্রমশ কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। এছাড়া তাঁর শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ঠিকঠাক কাজ করছে না। এছাড়া তাঁর শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম লেভেলের তারতম্য ঘটছে। বেলভিউ নার্সিংহোম সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সৌমিত্রবাবুর শরীরে করোনা এনসেফ্যালাইটিস-এর সংক্রমণ বেড়েছে। ফলে পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, বর্ষীয়ান অভিনেতার মস্তিষ্কের স্নায়ু প্রায় অচল হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে মস্তিষ্ক সূচক নিম্নমুখী। সৌমিত্রবাবুর পরিবারকেও কাউন্সেলিং করা হচ্ছে।

Advertisement
Advertisement

অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে গত তিন দিন ধরে। এর আগে সৌমিত্রবাবুর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হচ্ছিল। কিন্তু তাঁর বয়সের পক্ষে স্টেরয়েড ক্ষতিকর। ফলে তাঁর শরীরে স্টেরয়েডের ডোজ কমানো হয়েছিল। স্টেরয়েডের ডোজ কমানোর ফলে সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। সৌমিত্রবাবুর স্নায়বিক সমস্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে সৌমিত্রবাবুর আচ্ছন্নভাব বেড়ে যায়। এই মুহূর্তে চিকিৎসকরা তাঁর শরীরে প্লাজমাফেরেসিস করার সিদ্ধান্ত নিলেও তা কতটা সম্ভব হবে,এই বিষয়ে সন্দিহান রয়েছেন স্নায়ু বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

গত 6 ই অক্টোবর করোনা সংক্রমণ নিয়ে বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি হন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। 2006 সাল থেকে সিওপিডির সমস্যা থাকায় ও করোনা সংক্রমণের কারণে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সিটি স্ক্যান করে তাঁর বুকে কিছু না পাওয়া গেলেও এমআরআইরিপোর্টে জানা যায় তাঁর শরীরে পুরানো ক্যান্সার ফিরে আসার কারণে মস্তিষ্ক ও ফুসফুসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সৌমিত্রবাবুর শরীরে দুই বার প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ করা হলেও তেমন লাভ হয়নি।

Advertisement
Advertisement

বরং তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সৌমিত্রবাবুর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে তাঁকে বাইপ‍্যাপ ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বাইপ‍্যাপ ভেন্টিলেশনে থাকাকালীন তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তাঁর মস্তিষ্ক সূচক 10 হয়ে যায়। তাঁর বাইপ‍্যাপ সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে তিনি কথা বলতে বা মুখ দিয়ে খেতে পারছিলেন না। ফলে তাঁকে রাইলস টিউবের মাধ্যমে খাওয়ানো হচ্ছে। ফিজিওথেরাপি ও স্পিচ থেরাপির চেষ্টা করা হলেও তা লাভজনক হয়নি। ফিজিওথেরাপি করার পরেও সৌমিত্রবাবু উঠে বসতে পারছিলেন না।

এদিকে মুম্বই থেকে সৌমিত্রবাবুর স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন। তিনি সৌমিত্রবাবুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বার্তা দিয়েছেন। অপরদিকে সৌমিত্রবাবুর আইসিইউ ও ভেন্টিলেশনের কিছু ছবি সাইবার দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ঘটনায় তাঁর পরিবার ক্ষুব্ধ। সৌমিত্রবাবুর কন্যা পৌলমী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে, অভিনেতার ব্যক্তিগত পরিসর লঙ্ঘন ও মর্যাদাহানি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

Advertisement

Related Articles

Back to top button