নিউজরাজ্য

লকডাউনের থাবা কোন্নগরের শকুন্তলা রক্ষাকালী মাতার পুজোয়

Advertisement
Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – করোনা ভাইরাস এর জন্য গোটা বিশ্ব জুড়ে লকডাউন চলছে। বৈশাখের প্রথম দিন থেকে শুরু করে ২৫ শে বৈশাখ সবই উদযাপন করতে হয়েছে ঘরে বসে। কোন্নগরের শকুন্তলা শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মাতার প্রাচীন পুজো এবারে শুধুমাত্র ঘট পূজার মাধ্যমেই হবে। আসবেনা কোনো মূর্তি। কোন্নগরবাসীর কাছে এ বড় দুঃখের দিন। এই কালীপুজো কোন্নগরবাসীর কাছে খুবই গর্বের এবং আনন্দের একটি বিষয়। অনেকদিন আগে এক সময় এখানে একটি বড় বট গাছ ছিল, সেখানে শকুন বসতো।

Advertisement
Advertisement

আর সেই জন্যই এই জায়গার নাম হয় শকুন্তলা। জায়গাটি এতটাই ফাঁকা ছিল যে শকুনেরা সেখানে একমাত্র বিরাজ করতো। কোন্নগর স্টেশন এর পূর্ব দিকে নেমে ১০-১৫ মিনিট হাঁটা পথেই আপনি পৌঁছে যেতে পারেন শকুন্তলা কালী মন্দিরে। মূল মন্দিরের সামনে রয়েছে বিরাট নাট মন্দির সেখানেই রয়েছে হাড়িকাঠ এবং ভিতরে গর্ভগৃহে রয়েছে শ্বেত পাথরের বেদী। পুজোর সময় এইখানে প্রচুর ছাগ বলি দেওয়া হয়। সারাবছর এইখানে মায়ের কোন মূর্তি থাকে না, সকলে বেদীতে এই পুজো দেন মঙ্গল এবং শনিবারে। পুজোর দিন বিকালে সূর্যাস্তের পরে মূর্তিকে সাজিয়ে গুছিয়ে কাঁধে করে মন্দিরে আনা হয়। সারা রাত ধরে চলে মায়ের পুজো।

Advertisement

শুধু কোন্নগরবাসী নয় অনেক দূর দুরান্ত থেকে মানুষের আগমন ঘটে। যতই দিন যাচ্ছে লোকসংখ্যা যেন ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারারাত পুজো চলার পরে পরের দিন সূর্যোদয়ের আগে মায়ের বিসর্জন হয়। আবারো মাকে সেই একই পদ্ধতিতে কাঁধে করে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয় গঙ্গায়। মাকে নিয়ে আসা এবং মায়ের বিসর্জনের পথ দুই সময়েই রাস্তার দুদিকে মানুষ আগ্রহের সহিত দাঁড়িয়ে থাকে একটি বার মাকে দর্শন করবেন বলে। পুজো উপলক্ষে পাশের দুটি বড় বড় মাঠে বিশাল মেলা বসে। পুজোর আগের দিন সারা রাত ধরে গঙ্গা থেকে জল নিয়ে পায়ে হেঁটে মায়ের বেদীতে জল দেওয়া, দন্ডী দেওয়া ইত্যাদি চলতে থাকে।

Advertisement
Advertisement

এবারের সেসব কিছুই হবে না। কোন্নগরবাসীর কাছে এক বড় কষ্টের দিন। এত বিশাল কর্মকান্ড, এত বিশাল আয়োজন করোনা এক নিমেষে সবকিছু কেড়ে নিল। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গেলে এই অবস্থা সকলকেই মেনে নিতে হবে। পুজো হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কিছুতেই সম্ভব ছিল না, কারণ এই পুজোতে যে পরিমাণ মানুষের ঢল নামে তা সত্যিই চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। তাই অপেক্ষা আবার সেই পরের বছরের। মনে মনে মাকে স্মরণ করা। আর বলা, মা যেন গোটা বিশ্বকে রক্ষা করে করোনার হাত থেকে।

Advertisement

Related Articles

Back to top button