ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’! কোন কোন এলাকায় বেশি বিপদের আশঙ্কা?
গতবছর আম্ফান ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল সুন্দরবনসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির বাসিন্দারা। তারা কিছুটা সামলে ওঠার আগেই আবারও শঙ্কা সৃষ্টি করছে ঘূর্ণিঝড় যশ। এই করোনা পরিস্থিতিতে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত সুন্দরবনবাসীর জীবনে উপস্থিত হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের আশংকা। গতবছর আম্ফানের সময় বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাঁধ ভেঙে গিয়ে বিঘার পর বিঘা কৃষি জমিতে নোনা জল ঢুকে গেছিল। অনেকেই এক মুহূর্তে তাদের সারা জীবনের পুঞ্জি হারিয়েছে। এমনকি মাথা গোঁজার ভিটেমাটিটাও অনেকের ধ্বংস হয়ে গেছিল। সেই পরিস্থিতির সাথে গত এক বছর ধরে যুদ্ধের পর শেষ পর্যন্ত তারা আবারও নতুন করে বাড়ি বানিয়ে জীবন যাত্রা শুরু করার কথা ভেবেছিল। কিন্তু আবারো সুন্দরবনের বাসিন্দাদের আতঙ্কে বুক কাঁপাচ্ছে “যশ” ঘূর্ণিঝড়।
ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে গতবছরের ভুল করতে চায় না রাজ্য প্রশাসন। তাই তারা অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে এখন থেকেই দুর্যোগ মোকাবিলায় নিজেদেরকে আত্ম নিয়োজিত করেছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে যে প্রবল ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ২৩ তারিখ থেকে নিচু অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এলাকায় এলাকায় চলছে মাইকিং। ২৩ মে থেকে মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গোটা জেলায় ১১৫ টি সাইক্লোন সেন্টার খোলা হচ্ছে। খারাপ পরিস্থিতির জন্য স্কুল বাড়িগুলিকে প্রস্তুত করে রাখা হচ্ছে। এছাড়া বাঁধের উপর বসবাসকারী মানুষদের সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যকে ঘূর্ণিঝড় সম্বন্ধে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। তারা জানিয়েছে, ২২ মে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে যা তার পরবর্তী ৭২ ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। এই ঘূর্ণিঝড় যশের সম্ভাব্য অভিমুখ বাংলা উড়িষ্যা উপকূল। ২৫ মে থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। মঙ্গলবার থেকেই উপকূলবর্তী এলাকাতে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। ইতিমধ্যেই নবান্ন জেলা প্রশাসনের সাথে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখছে। মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জে বাড়তি নজরদারি রাখছে নবান্ন।