সাক্ষাৎকার

ভেক কথাবার্তা বন্ধ না করলে বিজেপি রসাতলে যাবে : খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক

Advertisement
Advertisement

দিল্লি বিধানসভা নিয়ে উত্তেজনার পারদ ছিল চরমে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া , শাহীনবাগ ও কপিল গুর্জর দের কেন্দ্র করে ভারতবর্ষে রাজনৈতিক সমালোচনা শিখরে পৌঁছে গিয়েছিল। সেই মঙ্গলবার বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা ভারতবর্ষ। আর সেই বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় দিল্লিতে ঝাড়ু ঝড় দেখা গেল। তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল আর সেই সঙ্গে দিল্লির বুকে আসন সংখ্যা বাড়ালেওবিধানসভায় জেতা কার্যত স্বপ্নই রয়ে গেল বিজেপির কাছে। 70 টি আসনের মধ্যে 62 টি আসনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পুনরায় সরকার গঠন করে আম আদমি পার্টি। অন্যদিকে আসন সংখ্যা তিন থেকে বেড়ে আটে পৌঁছলো বিজেপির।

Advertisement
Advertisement

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মতামত নেওয়ার জন্য ভারতবার্তার প্রতিনিধি যোগাযোগ করেছিল রাজ্যের মাননীয় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে। তিনি তার ব্যক্তিগত মূল্যবান মতামত আমাদের ভারতবার্তাকে কে জানান।

Advertisement

দিল্লিতে মূলত জয়ের আশা শেষ হয়ে গেল বিজেপির। সেইসঙ্গে দিল্লিতে তৃতীয়বারের জন্য কেজরিওয়াল সরকার গঠিত হলো। কি বলবেন দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে নিয়ে ?জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক : মানুষের যে রায় তা প্রতিফলিত হয়েছে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে। এনআরসি, সি এ এ এবং এন পি আর ফিরিয়ে নেওয়া উচিত ওদের। নতুন করে মানুষকে সার্টিফিকেট দেওয়ার আর দরকার নেই। মানুষের কাছে অনেক কার্ড আছে। রেশন কার্ড আছে , আধার কার্ড আছে , প্যান কার্ড আছে , পাসপোর্ট আছে। আবার নতুন করে একটা নতুন কার্ডের সংযোজনের কি দরকার ? আমি তো মানুষের রাইজিৎ এসেছি। নরেন্দ্র মোদী মানুষের রায়ে তো জিতে এসেছে। এখন বলা হচ্ছে যে সেই মানুষগুলোর ভোটার কার্ডের কোন দাম নেই , গুরত্ব নেই।

Advertisement
Advertisement

এনআরসি, সি এ এ , ধর্মীয় মেরুকরণ রাজনীতি কী দিল্লিতে বিজেপির পক্ষে কাল হলো ?

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক : দিল্লি হচ্ছে কসমোপলিটন শহর , সেখানে সর্বপ্রকারের মানুষ বাস করে। দিল্লি গ্রহণ করল না এনআরসি। এনআরসি কে দিল্লিবাসী ছুঁড়ে ফেলে দিল। আমি বলব , এটা বুমেরাং হলো। এরপরে যতগুলো নির্বাচন হবে তাতে বিজেপিকে নাস্তানাবুদ করে হারাবে। এরপর বিহার আছে , তারপরে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ আছে।

সামনেই পশ্চিমবঙ্গের পৌরসভা নির্বাচন। তার আগে দিল্লিতে এভাবে বিজেপির শোচনীয় পরাজয়। এটা কোথাও না কোথাও আপনাদের উজ্জীবিত কনফিডেন্স বাড়াবে বলে মনে করেন কি ?

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক : অবশ্যই। আমরা তো মনে করি , আমাদের নেত্রীর নাম মমতা ব্যানার্জি। লড়াই কি করে করতে হয় সেটা ভারতবর্ষের জনগণ দেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কিভাবে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করতে হয় তা ভারতবর্ষের বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি উদাহরণ। সুতরাং আমরা বিজেপিকে নিয়ে আর ভাবছি না। সিপিএম , বিজেপি , কংগ্রেস তিনজনকে নিয়ে ভাবছি না। সিপিএম , বিজেপি , কংগ্রেস তিনজনের লড়াই করে কে সেকেন্ড থার্ড হয় তা লড়াই করে দেখুক ওরা। আমরা তো হয়ে গেছি সুপারফাস্ট। আমরা রকেট এর উপরে উঠে বসে আছি। এবার এই তিনজনের মধ্যে সেকেন্ড রকেটে করে কে আমাদের পিছনে আসতে পারে ? আমরা উড়ে গেছি কয়েক যোজন।

রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে বলা হয়েছিল উপনির্বাচনে তিনটে আসনের মধ্যে তিনটিতেই আমরা জিতব কিন্তু দেখা গেল পরবর্তীতে যে তিনটি আসনেই তারা হেরে গেছেন। দিল্লির বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি বলেছিলেন এক্সিট পোলের তথ্যভুল, বিজেপি জিতবে ও 48 টি সিট পাবে। কোথাও এই ওভার কনফিডেন্স কি বিজেপির হারের অন্যতম কারণ বলে আপনি মনে করেন ?

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক : বিজেপির ঔদ্ধত্য। পেটে গুলি করবো , বুকে গুলি করবো , পায়ে গুলি করবো এই ধরনের কথাবার্তা বাংলার মানুষ নেয়না। শঙ্খ ঘোষ , অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক দের উদ্দেশ্যে ওরা যা ভাষা ব্যবহার করেছে বাংলার মানুষ এগুলো কে মানে না। আমরাতো রবীন্দ্রনাথ , বিবেকানন্দ , নজরুল ইসলামের বংশের লোক। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলাতে যা মনীষী জন্মগ্রহণ করেছিল তা এই পৃথিবীতে সর্বকালে সর্বযুগে কোনোদিনই আর এত মনীষী জন্মাবে না। সেই মনীষীদের পদধুলিতে আমরা সবাই বেঁচে আছি। সেই বাংলায় তুমি যদি এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করো , বিবেকানন্দকে নিয়ে যদি কোনো কটু মন্তব্য হয় বা যদি নেতাজিকে নিয়ে কোনো কটু মন্তব্য হয় বাংলার মানুষ তা মানে না। এগুলো বাংলার পরম্পরা , এই ধরনের ভেক কথাবার্তা বন্ধ না করলে বিজেপি রসাতলে যাবে। একদম শেষ হয়ে যাবে বিজেপি দলটা ! জিরো হয়ে যাবে জিরো ! এরপরে স্টেপিংটা যা আসবে সিপিএম কংগ্রেস উঠে আসবে! আমাদের পিছনে তাড়া করবে সিপিএম ।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও গোটা দিল্লিবাসীকে আপনি কি বলে শুভেচ্ছা বার্তা দিতে চাইবেন ?

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক : অরবিন্দ কেজরিওয়াল দারুন কাজ করেছে। খুব সুন্দর কাজ করেছে । এডুকেশন, ওয়াটার, হেলথ , পাওয়ার। ভাবতে পারছেন আমাদের জীবনে যে কটা প্রয়োজন লাগে শিক্ষা , স্বাস্থ্য , জল ও ইলেকট্রিসিটি এই চারটি তে মুক্তি দিয়েছে দিল্লির মানুষকে। দিল্লির মানুষ তাঁকে আশীর্বাদ করবে না ? দুহাত তুলে আশীর্বাদ করেছে।
[ সাক্ষাৎকার গ্রহণ : প্রীতম দাস ]

Advertisement

Related Articles

Back to top button