আমাদের জীবন যেনো এক যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। সময়ের সঙ্গে লড়াই করে চলেছি আমরা। প্রতিদিন সকালে উঠে কোনো মতো নিয়মিত কাজ ছেড়ে রওনা নিজের কাজের জন্যে। এই ব্যাস্ত জীবনের মাঝে যে অল্প নিজের জন্যে সময় বের করা কি কঠিন, এর ফলে নিজের যত্ন নেওয়াই হয়ে উঠে না।
কিন্তু শরীর সুস্থ রাখতে যেমন যত্ন দরকার, চুলের সৌন্দর্য্য ধরে রাখতেও যত্ন প্রয়োজন। এই ব্যাস্ত জীবনযাত্রায় যেনো কম সময়ে নিজের চুলের যত্ন নিতে পারেন এমন উপায় নিয়ে হাজির আমরা। হপ্তায় এক দিন নিজের জন্যে বের করে এই সহজ উপায়ে চুলের যত্ন নিন।
আসুন জানা যাক এই উপকরন গুলি এবং এর ব্যাবহারের পদ্ধতি:
১) অ্যাপল সাইডার ভিনেগার:-
দূষণ, অযত্ন ও পুষ্টির অভাবে ক্ষতিগ্রস্থ চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, আপনাকে অবশ্যই এই প্রতিকারটি একবার ব্যাবহার করে দেখা দরকার। এতে চুল পড়ার সমস্যা অনেকাংশে কমানো যায়।
এটির জন্যে প্রয়োজনীয় উপাদান-
২ চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার,
১ চা চামচ খাঁটি বাদাম তেল
তৈরি করার পদ্ধতি-
সর্ব প্রথমে একটি ছোট পাত্রে ভিনেগার ও তেল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর চুলে লাগান এবং খুব হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। একটি শোওয়ার ক্যাপ পরুন এবং কমপক্ষে ৩০-৬০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। নির্ধারিত সময়ের পর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই উপকরনটি দিয়ে, আপনি কয়েক দিনের মধ্যে আপনার চুলের পার্থক্য দেখতে পাবেন।
২) তিলের তেল:-
চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ থাকে। এবং আমাদের তালুতে অনেক সমস্যা দেখা দেয় যেমন সাদা চুল, শুষ্ক ত্বক, খুশকি, তৈলাক্ত তালু, চুল পড়া এবং পাতলা চুল। এই সব ক্ষেত্রের জন্য তিলের তেলের চেয়ে ভালো আর কোনো উপকরন নেই। এটি চুলকে মজবুত ও চকচকে করতেও সাহায্য করে।
উপাদান সমূহ-
১/২ কাপ তিলের তেল
তুলোর বল
ব্যবহারের পদ্ধতি-
খাঁটি তিলের তেল নিয়ে প্রথমে একটু গরম করুন। এর পর হালকা উষ্ণ থাকতে, একটি তুলোর বল এতে ডুবিয়ে আপনার মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান। হালকা হাতে ম্যাসাজ করতে থাকুন।
এটি লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন এবং সকালে একটি লেবুর টুকরো মাথার ত্বকে ঘষুন। ৩০ মিনিট পর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
দেখবেন কিছু দিনের মধ্যে আপনার সমস্যা কমে যাবে।
৩) নারকেল তেল এবং কারি পাতা ব্যবহার করুন:-
কারি পাতা স্বাদের জন্যে বিখ্যাত ও তার গুনের কথাও জানেন সকলেই। কারি পাতায় এমন উপাদান রয়েছে যা চুলের গোড়া ভালো ও মজবুত করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি প্রোটিন, বিটা-ক্যারোটিন এবং এই জাতীয় অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উত্স যা চুলের ফাইবারগুলিতে কাজ করে চুল দ্রুত বৃদ্ধি করে।
উপকরনের জন্যে প্রয়োজনীয় উপাদান-
১/২ কাপ নারকেল তেল
৬-৭ কারি পাতা
তৈরির পদ্ধতি-
একটি প্যানে নারকেল তেল এবং কারি পাতা দিয়ে সিদ্ধ করুন। যতক্ষণ না আপনি প্যানে একটি কালো পদার্থ দেখতে পান ততক্ষণ এটি সিদ্ধ করুন। নামিয়ে ঠান্ডা করে মেশান। এরপর মাথায় ভালো করে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। নির্ধারিত সময়ের পর চুল ধুয়ে ফেলুন।
আপনি যদি এই উপকরনটি সপ্তাহে 2 থেকে 3 বার ব্যাবহার করেন তবে আপনি শীঘ্রই পার্থক্য দেখতে পাবেন চুলের ঘনত্বে। এই উপকরণটি চুলকে কালো, লম্বা ও ঘন করতে সাহায্যে করে।
৪) নারকেল দুধ:-
নারকোল থেকে তেল ও দুধ দুটোই বের করা যায় এবং দুটোই খুব উপকারী।নারকেলের দুধে উপস্থিত ফ্যাটি অ্যাসিড আপনার চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে। এটি আপনার চুল পড়ার সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে এবং তাদের স্বাস্থ্যের উপর কাজ করে।
তৈরি করতে প্রয়োজনীয় উপাদান-
১ কাপ নারকেল দুধ
১/৪ কাপ কারি পাতার গুঁড়া
তৈরির উপায়-
প্রথমে কারি পাতার গুঁড়া তৈরি করুন বা বাইরে থেকে গুঁড়া কিনতে পারেন। একটি পাত্রে নারকেলের দুধ ও করি পাতার গুঁড়া ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই পোস্টটি এরপর চুলে লাগান। এটি চুলে লাগান এবং কমপক্ষে ১ ঘন্টা রেখে দিন এবং তারপর স্বাভাবিক হিসাবে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। এই উপকরণটি চুলের ঝরে পড়া কমিয়ে নতুন্ চুল গজাতে ও চুলের মজবুত খেয়াল রাখে। তাই ধীরে ধীরে চুল ঘন হতে থাকে।