BB Specialদেশনিউজম্যাগাজিন

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতাযুদ্ধে গান্ধীজির অবদান!

Advertisement
Advertisement

গান্ধীজী আব্দুল্লাহ অ্যান্ড সন্সের আইনজীবী হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যান। দক্ষিণ আফ্রিকা গান্ধীর জীবনকে নাটকীয় ভাবে পরিবর্তন করে দেয়। এখানে তিনি ভারতীয় ও কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি সাধারণভাবে প্রচলিত বৈষম্যের শিকার হন। একদিন ডারবান এর আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট তার পাগড়ি সরিয়ে ফেলতে বলেন। তিনি তা অগ্রাহ্য করেন। আদালত কক্ষ থেকে ক্ষোভে বেরিয়ে যান।

Advertisement
Advertisement

তাকে পিটার ম্যারেজবার্গের একটি ট্রেনের প্রথম শ্রেণীর কামরা থেকে তৃতীয় শ্রেণীর কামরায় যেতে বাধ্য করা হয়। তার কাছে যদিও প্রথম শ্রেণীর কামরার বৈধ টিকিট ছিল। স্টেজ কোচে ভ্রমণ এর সময় একজন চালক তাকে প্রহার করে, কারণ তিনি এক ইউরোপীয় যাত্রীকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য ফুট বোর্ডে চড়তে রাজি হননি।

Advertisement

এইভাবে তিনি আফ্রিকায় গিয়ে নানাভাবে নাকাল হন। এবং এই সব ঘটনাবলী দেখে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এই ঘটনাগুলি পরবর্তীকালে সামাজিক কার্যকলাপের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার পিছনে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ,কুসংস্কার অবিচার’ লক্ষ্য করে গান্ধীর জনগণের মর্যাদা এবং অবস্থান নিয়ে প্রশ্নবানে বিদ্ধ করেন।

Advertisement
Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়দের ভোটাধিকার ছিল না। এই অধিকার আদায়ের বিল উত্থাপনের জন্য তিনি আরও বেশ কিছুদিন এই দেশটিতে থেকে যান। বিলের উদ্দেশ্য সিদ্ধি না হলেও এই আন্দোলন সেদেশের ভারতীয়দেরকে অধিকার সচেতন করে তুলেছিল। 1894 সালে গান্ধীজী নাটাল ইন্ডিয়ান কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন । এই সংগঠনের মাধ্যমে সেখানকার ভারতীয়দের রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ করেন।

1906 সালে ট্রান্সফাল সরকার আফ্রিকা উপনিবেশের ভারতীয়দের নিবন্ধনে বাধ্য করানোর জন্য একটি আইন পাস করেন। 11 সেপ্টেম্বর জোহানেসবার্গের সংঘটিত এক গণপ্রতিরোধে গান্ধীজী সবাইকে এই আইন বর্জন করতে বলেন। তিনি বলেন, এই আইন না মানলে হয়তো আফ্রিকা উপনিবেশের প্রবাসী ভারতীয়দের উপরে অত্যাচার করা হবে কিন্তু তিনি তাদের উপদেশ দেন, অত্যাচার মেনে নেবে কিন্তু কখনোই আইন মানবে না।

এই পরিকল্পনা কাজে দেয় এবং সাত বছর ব্যাপী এক আন্দোলনের সূচনা ঘটে। এই আইন অমান্য করা, নিজেদের নিবন্ধন কার্ড পুড়িয়ে ফেলা সহ বিভিন্ন কারণে অনেক ভারতীয়কে বন্দী করা হয়। অনেকে আহত ও নিহত হয়। সরকার তার কাছে অনেকটাই সফল হয় । কিন্তু শান্তিকামী ভারতীয়দের উপর এহেন নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ মানুষের মধ্য থেকেই প্রতিবাদ শুরু হয়। অগত্যা দক্ষিণ আফ্রিকার জেনারেল ইয়ান ক্রিশ্চিয়ান স্মুট গান্ধীর সাথে সমঝোতা করতে বাধ্য হন। এই ঘটনার মাধ্যমেই গান্ধীর আদর্শ প্রতিষ্ঠা পায়।

Written By – শ্রেয়া চ্যাটার্জি

Advertisement

Related Articles

Back to top button