রাজীব ঘোষ : ২০১৭ সালের ১০ ই আগস্ট লোকসভায় কোড অন ওয়েজেস বিলটি পেশ করা হয়েছিল।তারপর সেটি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানো হয়।স্ট্যান্ডিং কমিটি গত ডিসেম্বরে রিপোর্ট পেশ করেছে।কেন্দ্রীয় সরকার কমিটির বেশ কিছু সুপারিশ মেনে নিয়েছে।নরেন্দ্র মোদী সরকার অনেকগুলি পুরনো আইন তুলে দিয়ে শ্রম ও মজুরি সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় দুইটি আইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে চাইছে। ৪ টি মজুরি আইনের বিলোপ ঘটিয়ে সংসদের দুই কক্ষেই ইতিমধ্যে কোড অন ওয়েজেস বিল,২০১৯ পাশ হয়ে গিয়েছে।
তবে দ্য অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশনস কোড,২০১৯ লোকসভায় পাশ হলেও এখনো পর্যন্ত রাজ্যসভায় পাশ হয়নি।সরকারের মতে, অনেকগুলি আইনের বদলে দুটি বিল যখন আইনে পরিনত হবে, তার ফলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সুবিধা হবে।মালিকদের আইনগত জটিলতায় অপেক্ষা করতে হবে না।অন্যদিকে শ্রমিকেরাও ন্যায়বিচার পাবেন।তবে বামেদের পক্ষ থেকে আপত্তি রয়েছে।বামেরা মনে করেন, এভাবে শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। ৪ টি আইনকে মিশিয়ে মজুরি বিধি বিলটি তৈরী হয়েছে।মিনিমাম ওয়েজেস অ্যাক্ট,পেমেন্ট অফ ওয়েজেস অ্যাক্ট,পেমেন্ট অফ বোনাস অ্যাক্ট এবং পেমেন্ট অফ বোনাস অ্যান্ড রেমুনারেশন অ্যাক্ট এই ৪ টি আইন মিশিয়ে দিয়েছে।
মজুরি ও বোনাস সহ সংশ্লিষ্ট আইনগুলিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।শ্রমমন্ত্রী সন্তোষকুমার গাঙ্গোয়ার বলেন, এই বিল আইনে রূপান্তরিত হলে দেশের ৫০ কোটি শ্রমিক সরাসরি উপকৃত হবেন।৫০ বছরের পুরনো আইন বিলুপ্ত হবে।তিনি জানান, নতুন খসড়া বিল তৈরির সময় স্ট্যান্ডিং কমিটির ২৪ টি সুপারিশের মধ্যে ১৭ টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।এই বিলে সংগঠিত ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের সমস্ত কর্মী ও শ্রমিকদের নির্দিষ্ট সময়ে ন্যূনতম মজুরি দিতে হবে।কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, নির্মাণ কর্মী,রঙের মিস্ত্রী, রেস্তোরাঁ ও ধাবার কর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষী সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের সমস্ত শ্রমিকরা নির্দিষ্ট সময়ে উপযুক্ত হারে মজুরি পাবেন।সরকার বেতন কাঠামো নির্দিষ্ট করে দেবে।ঠিক করবে ন্যূনতম মজুরির জাতীয় হার,যার কম মজুরি গ্রাহ্য হবে না।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, সন্ধ্যা ৭ টা থেকে সকাল ৬ টার মধ্যে মহিলা কর্মীদের কারখানায় রাত্রিকালীন ডিউটি দিতে পারবেন কর্তৃপক্ষ।তবে সংশ্লিষ্ট মহিলা কর্মী নাইট ডিউটি নিতে ইচ্ছুক কিনা, তার উপর বিষয়টি নির্ভর করবে।যে সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ১০ জন কর্মী রয়েছেন, সেগুলিই এই আইনের আওতায় পড়বে।কর্মচারীদের পেশাগত সুরক্ষা, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে জাতীয় ও রাজ্য স্তরে দুটি অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ অ্যাডভাইসারি বোর্ড গঠন করা হবে।এছাড়া প্রতিটি সংস্থায় একটি সেফটি কমিটি গঠন করতে হবে।