ম্যাগাজিন

ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিনে জেনে নিন কিছু অজানা কথা

Advertisement
Advertisement

পূর্ববঙ্গের ঢাকা শহরের ঋষিকেশ দাস লেনে 4 নভেম্বর 1925 সালে ঋত্বিক কুমার ঘটক জন্মগ্রহণ করেন। 1947 সালে দেশভাগের পরে তার পরিবার কলকাতায় চলে আসেন। বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে তিনি সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন এর সঙ্গে তুলনীয় ছিলেন।

Advertisement
Advertisement

নাগরিকের ছয় বছর পর 1957 সালে তৈরি হয় ঋত্বিক ঘটকের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র অযান্ত্রিক, যা মুক্তি পায় 1958 সালে। ছবির নায়ক ড্রাইভার এবং নায়িকা একটি গাড়ি। অযান্ত্রিক এর গল্প এগিয়ে চলে গেছে এভাবে। পুরো ভারতজুড়েই অন্যরকম আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল ছবিটি। সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন ‘এই ছবিটিতে তাঁর অসামান্য বৈশিষ্ট্য ও মৌলিকতার পরিচয় পেয়েছিলেন’। এই গল্পটি নেওয়া হয়েছিল সুবোধ ঘোষের প্রথম ছোটগল্প অযান্ত্রিক থেকে। একজন মানুষ যন্ত্রের মধ্যে কি ধরনের সম্পর্ক তৈরি হতে পারে তাই নিয়েই সিনেমাটি। 1958 সালে মুক্তি পায় ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’। এটির মূল গল্প শিবরাম চক্রবর্তীর লেখা। এই ছবির মূল চরিত্র কাঞ্চনের চোখ দিয়ে তৎকালীন কলকাতার বাস্তব চিত্র কে তিনি এই সিনেমার মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছিলেন।1959 সালে ‘কত অজানারে’ নামে একটি সিনেমার কাজ অনেকদূর সম্পন্ন করে অর্থনৈতিক কারণে সিনেমাটা শেষ পর্যন্ত এগোয় নি।

Advertisement

1960 সালের 14 এপ্রিল কলকাতায় মুক্তি পায় ঋত্বিক ঘটকের বাংলা ছবি ‘মেঘে ঢাকা তারা’। মেঘে ঢাকা তারা ঋত্বিকের চতুর্থ ছবি এবং তার প্রথম সাফল্য। অনিল চ্যাটার্জী এবং সুপ্রিয়া দেবীর অনন্য অসাধারণ অভিনয় মানুষকে মোহিত করে তুলেছিল। এই ছবির জনপ্রিয় ডায়লগ ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই’। 1961 সালে সিনেমা ‘কোমল গান্ধার’ এই ছবিতে দুই বাংলার মিলনের সুর বেজে উঠেছিল। 1965 সালে মুক্তি পায় তার ছবি ‘সুবর্ণরেখা’। সুবর্ণরেখা চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রায় একযুগ বিরতি দিয়ে অদ্বৈত মল্লবর্মণের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসের কাহিনী কে উপজীব্য করে ঋত্বিক ঘটক 1973 সালে বানালেন ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র। তার শেষ ছবি ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’র পরে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় মানসিক হাসপাতালে। তাকে জীবন কাটাতে হয় হাসপাতালের এক নির্জন প্রকোষ্ঠে। সীমাহীন অসহায়ত্বের মাঝে 1976 সালের 6 ফেব্রুয়ারি মাত্র 50 বছর বয়সে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে যান।

Advertisement
Advertisement

তার চলচ্চিত্রে আসার পেছনে কিছু কারণ ছিল। তার মেজদা সুধীশ ঘটক ছিলেন টেলিভিশন এক্সপার্ট। তিনি ব্রিটেনে ডকুমেন্টারি ক্যামেরাম্যান হিসেবে প্রায় ছয় বছর কাজ করেছিলেন। পরে তিনি নিউ থিয়েটার্স এ যুক্ত হন। বহু ছবিতে ক্যামেরাম্যান হিসেবেও তিনি কাজ করতেন। এমন মানুষ যদি বাড়িতে থাকেন সেখানে থেকে উৎসাহ পেতে বাধ্য। এমন পরিবেশে বড় হয়ে উঠতে উঠতেই তার সিনেমার প্রতি ভালোবাসা জন্মায়।
1970 সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন। 1957 সালে ‘মুসাফির’ চলচ্চিত্রের জন্য ৫ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তৃতীয় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য মেধার ছাড়পত্র লাভ করেন।

Writter – শ্রেয়া চ্যাটার্জি

Advertisement

Related Articles

Back to top button