Categories: অফবিট

বিরিয়ানির কোর্মা নয়, বাঙালির ভুরিভোজে পটলের দোলমা, জেনে নিন এর সুস্বাদু রেসিপি

Advertisement

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – মনে করা হয়, আজ থেকে প্রায় ৯০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ ভারতে কৃষি ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়। পশুপালন থেকে মানুষ আস্তে আস্তে কৃষিতে মনোনিবেশ করেছিলেন। উন্নততর প্রযুক্তির মাধ্যমেই তারা ধীরে ধীরে কৃষিকাজে উন্নত ঘটান। বছরে দুইবার বর্ষাকাল হওয়ার দরুন সে যুগে দুইবার চাষাবাদ করা হতো। ভারতীয় জীবনযাত্রার সঙ্গে শস্য এতটাই নির্ভরশীল ছিল যে, তারা একে দেবতা জ্ঞানে পূজা করতেন। ভারতীয় খাদ্য তালিকার মধ্যে ভাত একটি প্রধান খাদ্য দ্রব্য। ভাতের সাথে যে তরিতরকারি গুলো অতি প্রয়োজনীয় সেগুলো হলো আলু, পটল, কুমড়ো ইত্যাদি।

Advertisement

আজকে যে খাদ্যটি নিয়ে আলোচনা করা হবে তা হল পটল। পটল একটি অতি সুস্বাদু খাবার। এবং যা শরীরের জন্য খুব ভালো। ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার, উত্তর প্রদেশ এবং বাংলাদেশে বেশ ভালো জন্মায়। এতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা ভিটামিন এ ও সি এবং অল্প পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, তামা, পটাসিয়াম, গন্ধক ও ক্লোরিন আছে। পটল খাওয়া শরীরের জন্য ভালো। তাজা পটল হজমশক্তি বাড়ায় কাশি জ্বর ভালো রাখে। কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে পটল সাহায্য করে। পটলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি রয়েছে এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে বলে। এটি ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। নেপালে অসুস্থ অসুস্থদের পটলের সুপ বানিয়ে খাওয়ানো হয়। তবে বাঙালির ভুরিভোজে কিন্তু পটল তার জায়গা বেশ করে নিয়েছে। ডালের সঙ্গে পটল ভাজা, আলু, পটলের ডালনা, কিংবা পটলের দোলমা বেশ বিখ্যাত বাঙালি পদের মধ্যে এগুলো পড়ে।

Advertisement

জেনে নিন কিভাবে বানাতে হয় পটলের দোলমা –

Advertisement

এই পদটি কেবলমাত্র এপার বাংলাতেই নয় ওপার বাংলাতেও, এর সমানভাবে জনপ্রিয়তা রয়েছে। পটলের দোলমা নিরামিষ এবং আমিষ দুই পদ্ধতিতেই রান্না করা যেতে পারে। আসলে পটলের মধ্যে পুর ভরে পটলের দোলমা রাঁধতে হয়। তাই পুর নিরামিষ চাইলে পনির বা সয়াবিনের পুর দেওয়া যেতে পারে, আর আমিষ চাইলে মাংসের বা মাছের পুর দেওয়া যেতে পারে।

উপকরণ – পটল, কড়াইশুঁটি, পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, টমেটো বাটা, হলুদ গুঁড়ো গোটা গরম মসলা, কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, জিরেগুঁড়ো টমেটো সস, চিকেন কিমা /পনির / মাটন কিমা / চিংড়ি মাছ / কুচানো সয়াবিন (ইচ্ছামত),সরষের তেল, চিনি, নুন স্বাদ মত।

প্রণালী – প্রথমে পটলের খোসা কেটে নিয়ে, দুমুখ কেটে ভিতর থেকে পটলের বীজ খুব সাবধানে বার করে নিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। তারপর একটি পাত্রে যদি চিকেন কিমা / মাটন কিমা/ চিংড়ি মাছ যাই নেবেন সেটিকে লেবুর রসে ১৫ মিনিট পর্যন্ত ভালো করে রেখে দিতে হবে। তারপর পেঁয়াজ, আদা, রসুন, টমেটো একসঙ্গে বেটে নিতে হবে। কড়াইতে সরষের তেল দিতে হবে। তেল গরম হয়ে গেলে বাটা মশলা দিয়ে ভাল করে কষাতে হবে। তারপর লেবুর রস মাখানো মাংস দিয়ে দিতে হবে। তবে মাটন কিমা হলে আগে থেকে একটু সেদ্ধ করে নিলে ভালো হয়।

চিংড়ি মাছ হলে মাছগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর যারা নিরামিষ হিসাবে এই পদটি খাবেন, তারা ছোট ছোট পনিরের টুকরো বা সয়াবিনের টুকরো সেদ্ধ করে এর মধ্যে দিয়ে দিতে পারেন। মশলা আর মাংসের কিমা, মাছ বা পনির বা সয়াবিন ভালো করে ভাজা ভাজা হয়ে গেলে কড়াই থেকে নামিয়ে ভালো করে ঠান্ডা হতে দিতে হবে। এবার গ্রেভি বানানোর জন্য কড়াইতে তেল দিয়ে গোটা গরম মশলা দিতে হবে সেখানে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে, বেশ লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে তারপর হলুদ গুঁড়ো, শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, টমেটো সস দিয়ে ভাল করে কষাতে হবে।

পুর একটু ঠান্ডা হলে পটলের মধ্যে পুর ভরে দিতে হবে। পটলের মুখে একটু বেসন দিয়ে আটকে নিতে হবে। পটল গুলিতে পুর ভরার পরে যে গ্রেভিটি তৈরি করা হয়েছে তার মধ্যে পটল এবং কড়াইশুঁটি দিয়ে দিতে হবে। তারপর সামান্য জল দিয়ে এটিকে ভালো করে ফুটতে দিতে হবে। ৮ – ১০ মিনিট চাপা দিয়ে ভালো করে সেদ্ধ হয়ে গেলেই, গরম গরম পরিবেশন করুন পটলের দোলমা।