BB Specialমাইথোলজিম্যাগাজিন

কর্মের খোঁজে আজ বিশ্বকর্মা!

Advertisement
Advertisement

শারদীয়া পূজার ঠিক আগে আমরা দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার আরাধনায় নিজেদেরকে সমর্পিত করে থাকি। ঢাক, কাসর, ধূপ ধুনোর মাঝে তাঁকে এই মর্তে আহবান জানানও হয়। পুরাণ মতে দেব শিল্পী শ্রী কৃষ্ণের ইচ্ছায় রচনা করেন দ্বারকা নগরী। বেহুলা লখন্দরের লৌহবাসর নির্মাণ করেন বিশ্বকর্মা। তাই পুরাণ কথায় এই দেবতার প্রচুর উল্লেখ আমরা পাই নানা পুঁথি ও গ্রন্থে।

Advertisement
Advertisement

বর্তমান আর্থসামাজিক চিত্রটি এই দেবতার কথা কিছুটা হলেও মনে করায়। যত দিন যাচ্ছে আমাদের শুধু দেশে নয়, বরং গোটা পৃথিবীতে এক কর্মহীনতার প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা থাকলেই যে ভালো চাকরী পাবে এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না। যারা ধনী তারা দিনে দিনে তাদের সম্পত্তি বৃদ্ধি করে চলেছে। আর যারা নয়, তারা না খেতে পেয়ে শুকিয়ে দিন যাপন করছে। এক বৃহৎ বৈষম্য! সময় সাক্ষ্য বহন করেছে যে কিভাবে ডানলোপ ও হিন্দুস্তান মোটরের মত কোম্পানিজ গুলো বন্ধ হয়ে গেছে। লক্ষ লক্ষ লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। ছিল না বস্ত্র, ছিল না মুখের অন্ন। বহু মানুষ আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছিল। বিগত বেশ কিছু বছর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে প্রায় পাঁচ হাজার লোক তাদের কর্ম হারিয়ে ছিল। কতৃপক্ষের একটাই উত্তর ছিল:” রিসেশন চলছে, বাণিজ্য বন্ধ। তাই এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ও বন্ধ”। অকাট্য যুক্তি। এর পর কেটে গেছে বহুদিন, তাদের খবর আর কেউ রাখেনি।

Advertisement

সম্প্রতি বিহারে একই দৃশ্য – অর্থের অভাবে নিজের মেয়ে ও বউকে খুন করে, গাছের ডালে গলায় দড়ি দিয়েছে। দিনের পর দিন অসংখ্য চাষী ভাইরা ঋণের টাকা শোধ করতে না পেরে বেছে নিয়েছে মৃত্যুর পথ! আমরা খবরের কাগজ পড়ি, বা টিভি থেকে যতটুকু সম্ভব জানবার চেষ্টা করি, কিন্তু বাস্তবে এই সকল পীড়িত মানুষের পাশে আমরা আজ কতটা আছি! এক প্রশ্ন, এক বিস্ময় বটে! সমীক্ষা অনুযায়ী আরো চার পাঁচ বছর এই ‘বিরতির’ সমাপ্তি নেই। এর অর্থ আগামীদিনে আরো অনেক খেটে খাওয়া মানুষ তাদের রুটিরুজির থেকে বঞ্চিত হবে। আমাদের সরকার নানা ভাবে চেষ্টা করছেন এই ‘বৈষম্য’ দূর করতে। নানা প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে ও আগামীদিনেও হবে, কিন্তু কতটা বাস্তবায়িত হবে তা শুধু সময়ই বলবে!

Advertisement
Advertisement

তাই এই শুভ লগ্নে ঠাকুরের কাছে শুধুমাত্র কর্ম সংস্থানের প্রার্থনা। মানুষের মাঝেই দেবতার অস্তিত্ব। এই পূজাপাঠ, যজ্ঞভাগের অংশীদার এই সকল দেবদেবীরা। তবে মানুষ যদি সামান্য খেতে না পায়, তার নিজের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে বসে, তাহলে সে তাঁর অর্চনা কি রূপে করবে! খালি পেটে তো পূজা হয় না। তাই চাই প্রথমে মৌলিক দ্রব্য গুলো যেমন অন্ন, কাপড় ও বাসস্থান। স্বয়ং দেবশিল্পীও বোধ করি আজ এই নগ্ন সত্য রন্ধ্রে রন্ধ্রে উপলব্ধি করছেন। তাই তিনিও আজ কর্মের খোঁজে। মানুষের মধ্যে দিয়ে তাঁর এই সকল্প পূর্ণ হোক, এই একমাত্র অভিলাষ!!

Written by – কুণাল রায়

Advertisement

Related Articles

Back to top button