পুরাণে উল্লেখ আছে যে দেবাদিদেব একবার মা পার্বতীর সাথে ছোট্ট ছলনা করেছিলেন, খেলার ছলে। এর ফলে মায়ের গৌরবর্ণ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন। পার্বতী সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার কঠোর তপস্যা করেন। ব্রহ্মা তাঁকে দেখা দিয়ে, উপদেশ দেন হিমালয়ের মানস সরোবরে স্নান করবার জন্য, সাথে বলেন যে এই ক্রিয়া করলেই উনি উনার গৌরবর্ণ ফিরে পাবেন। পার্বতী তাঁর গৌরবর্ণ ফিরে পান। কিন্তু তাঁর সেই কৃষ্ণবর্ণ থেকে উৎপত্তি হয় দেবী কৌশিকীর। পার্বতীর কোষ থেকে তাঁর উৎপত্তি বলে তাঁর নাম কৌশিকী রাখা হয়।
তবে শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করার উদ্দেশ্যে পার্বতী কৌশিকীকে আপন গৌরবর্ণ প্রদান করেন ও স্বয়ং চামুন্ডা রূপ ধারন করে হিমালয়ে বসবাস করতে থাকেন। এরপর একের পর এক অসুর যেমন ধূমড়োলোচন, চন্ড মুন্ড, রক্তবীজ ও অবশেষে শুম্ভ ও নিশুম্ভ দেবীদের দ্বারা নিহত হন। এই দৈবলীলা সম্পন্নের পশ্চাতে দেবী কৌশিকী দেবী পার্বতীর কায়ায়ে বিলীন হয়ে যান। মহামায়ার কাছে আমরা সকলেই আজ দ্বারস্থ। এই দেবী মহামায়াই জীবজগৎকে একই সূত্রে বেঁধে রেখেছেন। তাঁর সেই মায়ার বাঁধন ছিঁড়ে প্রকৃত সত্য দর্শন করা এক অতীব কঠিন প্রয়াস।

আজ মহাষ্টমী। সন্ধিপূজা। একশ আটটা পদ্মের সাথে অন্যান্য উপকরণ রয়েছে মাতৃ – আরাধনার এই প্রক্রিয়াকে এক পূর্ণতা প্রদান করার জন্য। পুরুষোত্তম শ্রী রামচন্দ্রের সাথে মায়ের এই সন্ধি মূলত লঙ্কাপতি রাবণকে বধ করে, ধর্ম ও শৃঙ্খলার পুনরায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করার অভিপ্রায়ে। তবে এই শারদ উৎসব অকালবোধন রূপেই অধিক পরিচিত। এই পবিত্র দিনে মায়ের কাছে শুধুমাত্র একটাই প্রার্থনা:”যখনই তোমাকে স্মরণ করব, তুমি যেন দেখা দিয়ে আমার সকল ইচ্ছে পূরণ কর”। একদিন তুমি দেবতাদের আকুল প্রার্থনায় সাড়া দিয়েছিলে, আজ এই মর্তবাসীদের ডাকে সাড়া দিয়ে পূর্ণ কর তাদের সকল ইচ্ছে!!
Written by – কুণাল রায়