Today Trending Newsনিউজপলিটিক্সরাজ্য

শুভেন্দু এবং মুকুলকে গ্রেফতার না করা হলে বাংলায় আগুন জ্বলানোর হুমকি তৃণমূল সমর্থকদের

ফিরহাদ হাকিমের গ্রেফতারের পর তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ, তাদের হুমকি, শুভেন্দু এবং মুকুলকে গ্রেফতার না করা হলে আগুন জ্বলবে বাংলায়

×
Advertisement

নারদ কান্ডে গ্রেফতার করা হলো ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় কে। কিন্তু সমান ভাবে দোষী থাকা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়লেন না ‘বিজেপি বিধায়ক’ শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়। প্রথম থেকেই নারদা কাণ্ডে সিবিআই এর উপরে উঠছে পক্পাতিত্বের অভিযোগ। বিজেপি বিধায়ক এবং বিজেপি নেতাদের আড়াল করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, এমনটাই প্রথম থেকে প্রশ্ন তৃণমূল কর্মীদের। এবারে ফিরহাদ হাকিমের গ্রেপ্তারের পর সেই দাবি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।

Advertisements
Advertisement

মদন, শোভন, সুব্রত এবং ফিরহাদকে গ্রেফতার করার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করলেন তারা। চলছে কার্যত লকডাউন, কিন্তু তার পরেও উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তাদের মুখে একটাই স্লোগান, “শুভেন্দু, মুকুলকে গ্রেফতার না করা হলে আগুন জ্বলবে বাংলায়।” সোমবার সকালে বিনা নোটিশে ফিরহাদ হাকিম এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই কর্তারা। অন্যদিকে অপর একটি দল পৌঁছে যায় শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং মদন মিত্রের বাড়িতে। নাটকীয় ভাবে ৪ জন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। পরিকল্পনা ছিল, সেই মতই এদিন ফিরহাদ হাকিমের বাড়ির সামনে মজুদ করা হয় পুলিশ বাহিনী। ফিরহাদ হাকিম নিজের মুখে স্বীকার করলেন, তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে, নারদ কান্ডে চার্জশিট চূড়ান্ত করার আগে নিজের হাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।

Advertisements

কিন্তু ফিরহাদ হাকিমের গ্রেপ্তারের সময়, যখন তার বাড়ির সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মজুদ করে রাখা হয়েছে, ঠিক তখন থেকেই তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। সকলে সেখানেই রাস্তায় বসে পড়েন এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সিবিআই এর বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে বিক্ষোভ চলতে থাকে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, লকডাউন মানা হবে না বিক্ষোভ চলছেই। প্রসঙ্গত, রীতিমতো নাটকীয় ভাবে এই গ্রেপ্তারি করে সিবিআই। আজকেই চার্জশিট পেশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

Advertisements
Advertisement

সেই বিক্ষোভের মঞ্চ থেকে একজন তৃণমূল কর্মী প্রশ্ন তোলেন, “শুধুমাত্র এই চারজন কেন, শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায় কে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? যদি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেটা না হয় তাহলে কিন্তু বাংলায় আগুন জ্বলবে।” তৃণমূলের তরফে এমনকি যিনি এই নারদ কান্ডে স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন সেই ম্যাথু স্যামুয়েল একই প্রশ্ন তুলেছেন। সকলের মনে একটাই প্রশ্ন, কেন শুধু মাত্র ৩ জন তৃণমূল বিধায়ক এবং একজন প্রাক্তন বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? ফুটেজে স্পষ্টভাবে মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা গিয়েছিল। তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবিতে চলছে বিক্ষোভ। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বিজেপি এদেরকে দলবদলে পুরস্কার দিল? বিজেপি কি তাহলে সত্যিই তৃণমূলের ভাষায় ওয়াশিং মেশিন? এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সৌগত রায় বললেন, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এই কাজকর্ম করা হচ্ছে। মোদি এবং অমিত শাহের নির্দেশে সব হচ্ছে। সব মোকাবিলা আদালতে করা হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য সিবিআইকে দিয়ে বিজেপি এই সমস্ত করাচ্ছে। নিজে নির্বাচনে জিততে পারেনি বলে এরকমটা করছে। সিবিআই একটা খাঁচাবন্দি তোতা।” তার সাথে সাথেই অভিযোগ উঠেছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে।

বিধানসভার স্পিকার এর অনুমতি ছাড়া বিধায়কদের গ্রেফতার করা আইনানুগ নয়। যেখানে বিধানসভার স্পিকার শুধুমাত্র তদন্তের অনুমতি দিয়েছিলেন, গ্রেফতারির নয় তাহলে কি করে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে? সিবিআই এর তরফ থেকে সাফাই দেওয়া হচ্ছে, রাজ্যপালের কাছ থেকে তদন্তের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল এবং তিনি দিয়েছিলেন। পাশাপাশি বিধানসভার স্পিকার নিজেও কিন্তু তদন্তের অনুমতি দিয়েছিলেন। তাদেরকে তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সাফাই দিয়েছে সিবিআই। এই মর্মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চরম কটাক্ষ করেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণের অভিযোগ, “রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। এটা চরম অসাংবিধানিক।” প্রশ্ন উঠছে শুভেন্দু এবং মুকুলের গ্রেফতারি করা হলো না কেন? যদিও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে তেমন একটা কিছু শোনা যাচ্ছে না এই গ্রেফতারি নিয়ে। কিন্তু ফিরহাদ হাকিমের গ্রেফতারের পর নিজাম প্যালেসে হাজির হয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা বাংলা।

Related Articles

Back to top button