এক ঝটিকা খবরের মতো সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই বছর ২০২৫ সালের মে মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে নতুন শিক্ষক নিয়োগের নোটিফিকেশন জারি করা হবে। যারা আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) অনিয়মের কারণে চাকরি হারিয়েছেন, তাদের জন্য বিশেষ বয়সসীমা শিথিল এবং পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে জানা গেছে, ২০২৫ সালের ৩ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল করেছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মিথ্যা ও অনিয়ম ধরা পড়ায় এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পর থেকেই রাজ্য সরকার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowনতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ৩১ মে ২০২৫-এর মধ্যে জারি হবে বলে জানানো হয়েছে। আবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময়সীমা রাখা হয়েছে ১৬ জুন থেকে ১৪ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত। এরপর নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২০ নভেম্বর থেকে কাউন্সেলিং শুরু হয়ে ডিসেম্বরের ৩১ তারিখের মধ্যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এই নতুন নিয়োগে মোট ৪৪,২০৩টি পদ পূরণ করা হবে। এর মধ্যে পুরনো ২৪,২০৩টি শিক্ষক পদের পাশাপাশি নবনির্মিত ১১,৫১৭টি উচ্চতর শ্রেণির (নবম ও দশম) শিক্ষক পদ, ৫৫১টি গ্রুপ সি এবং ১,০০০টি গ্রুপ ডি পদ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যারা আগের নিয়োগ বাতিলের কারণে চাকরি হারিয়েছেন, তাদের বয়সসীমা শিথিল করা হবে এবং পূর্বের অভিজ্ঞতাও বিবেচনায় নেওয়া হবে।
তবে এই পরিস্থিতি নিয়ে বিক্ষোভও চলছে। হাজার হাজার শিক্ষক নতুন পরীক্ষা দিতে চাচ্ছেন না। তাদের দাবি, পুরনো নিয়োগের সময় প্রাপ্ত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাকে স্বীকৃতি দিয়ে পুনর্বহাল করা হোক। তারা নিজেদের দাবি পূরণ না হলে দেশের রাজধানী দিল্লিতে ব্যাপক প্রতিবাদ করার পরিকল্পনাও নিয়েছেন।
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিল করেছে, যাতে বাতিল হওয়া নিয়োগগুলো পুনর্বহাল করা যায়। তবে আদালত বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন বিরতির মধ্যে থাকায় এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি।
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে এই নতুন উদ্যোগ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে? আগের নিয়োগ বাতিলের ফলে চাকরি হারানো শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ কী হবে? বয়সসীমা শিথিল ও অভিজ্ঞতা স্বীকৃতির নিয়ম কী হবে? বিক্ষোভ থামবে কি? সর্বোচ্চ আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী রকম হবে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর আগামী কয়েক মাসে পরিষ্কার হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।