পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ শিক্ষার ঘাটতি পূরণ করতে রাজ্য সরকার নতুন উদ্যোগ নিল। এবার প্রাথমিক স্কুলে ‘স্পেশাল এডুকেশন’ শিক্ষকের ২,৩০৮টি শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই নিয়োগের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীর অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ শিক্ষায় ডিপ্লোমা (D.Ed) বা সমতুল্য যোগ্যতা থাকা আবশ্যক, যা RCI দ্বারা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত হতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে বৈধ CRR নম্বর এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষায় ন্যূনতম ছ’মাসের প্রশিক্ষণ।
West Bengal Teacher Recruitment
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে আবেদনকারীদের জন্য Teacher Eligibility Test (TET) উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। ইতিমধ্যেই TET পাস প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। পরীক্ষার মানদণ্ড অনুসারে, TET-এর জন্য ৮০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে, এবং শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদান ও সাক্ষাৎকারের জন্য ২০ নম্বর, মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। প্রার্থীর বয়স ১ জানুয়ারি ২০২৫ অনুযায়ী ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হওয়া আবশ্যক। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থীদের জন্য বয়সের ছাড় থাকবে। রাজ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই অভাব রয়েছে প্রশিক্ষিত শিক্ষক। বিশেষ শিক্ষকদের ঘাটতি থাকার কারণে এই শিশুদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। তাদের কথা মাথায় রেখেই এই বিশেষ শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলিতে বিশেষ শিক্ষকের নিয়োগে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। উচ্চ প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার-সহায়ক স্কুলে বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রদের জন্য নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এবার সেই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক স্তরের স্কুলগুলিতে বিশেষ শিক্ষকের নিয়োগ করা হবে। বিশেষ শিক্ষকদের নিয়োগে রাজ্য সরকার আশা করছে, শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে এবং তাদের সামগ্রিক বিকাশে সহায়তা মিলবে। এই পদগুলোতে নিয়োগ প্রার্থীদের জন্য চাকরির সুযোগের পাশাপাশি একটি বিশেষ দায়িত্বও থাকবে—রাজ্যের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষার মান উন্নত করা।
রাজ্যজুড়ে প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে নতুন এই বিশেষ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। শিক্ষামূলক নীতি অনুসারে বিশেষ শিক্ষার গুরুত্ব বাড়ানোর পাশাপাশি এটি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।