জুনের মাঝামাঝি এসে আবারও রুদ্র মূর্তি ধারণ করেছে বাংলার গরম। বৃষ্টির স্বস্তির পরে হঠাৎ করে তাপমাত্রা বাড়তেই হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি ছাড়িয়ে যাচ্ছে পারদ, ফলে রাজ্যের স্কুলগুলিতে ফের দু’দিনের গরমের ছুটি ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ঘোষণা করেন, রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও সরকার পোষিত প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ১৩ জুন শুক্রবার এবং ১৪ জুন শনিবার বন্ধ থাকবে। ১৫ জুন রবিবার স্বাভাবিক সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় স্কুল খুলবে ১৬ জুন সোমবার থেকে। তবে পার্বত্য এলাকার স্কুলগুলিকে এই সিদ্ধান্তের বাইরে রাখা হয়েছে। কারণ সেখানে গরমের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowছুটির সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্নের মুখে সরকার
এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষামহলে উঠেছে নানা প্রশ্ন। গরমের ছুটির মেয়াদ এতটাই দীর্ঘ ছিল, যে অধিকাংশ স্কুলে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে মাত্র কিছুদিন আগেই। এর মধ্যেই ফের নতুন ছুটি ঘোষণাকে ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে।
শিক্ষকদের ক্ষোভের অন্যতম কারণ, স্কুলে ছুটি থাকলেও তাঁদের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অর্থাৎ পড়ুয়া না থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থাকতে হচ্ছে স্কুলে। অনেকেই বলছেন, যদি গরমের কারণেই স্কুল বন্ধ হয়, তাহলে শিক্ষকরাও তো সেই গরমের মধ্যে পড়েন। তাঁদের জন্য কেন ব্যতিক্রম নয়?
তাপপ্রবাহে অসুস্থতার ঝুঁকি, তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত
মে মাসের শেষে তাপমাত্রা আচমকাই বেড়ে যায়। স্কুল খোলার পরে বিভিন্ন জেলায় একাধিক পড়ুয়ার অসুস্থতার খবর মিলেছে। এই প্রেক্ষিতেই শিক্ষা দফতর গত বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয় দু’দিনের অতিরিক্ত ছুটির। শিক্ষামন্ত্রী নিজেই তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে বিষয়টি জানান।
তবে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ এই ছুটির আওতায় পড়েনি। সেখানকার তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই সহনীয় বলে জানানো হয়েছে।
ছুটি না মর্নিং স্কুল? কোনটা উপযুক্ত?
বিভিন্ন অভিভাবকের মতে, ছুটি দেওয়ার পরিবর্তে মর্নিং স্কুলের ব্যবস্থা করলে সিলেবাস শেষ করাও সম্ভব হতো, আবার অসুস্থতার সম্ভাবনাও কমে যেত। গ্রীষ্মকালে সকাল সকাল ক্লাস করিয়ে দুপুরে ছুটি দিলে গরমের প্রকোপ কিছুটা এড়ানো যেত।
FAQ: পাঠকের প্রশ্নে উত্তর
১. রাজ্যে কোন কোন দিনে গরমের ছুটি ঘোষণা হয়েছে?
১৩ ও ১৪ জুন (শুক্রবার ও শনিবার) গরমের অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
২. ছুটির আওতায় কারা পড়ছে?
সরকারি ও সরকার পোষিত সমস্ত স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই ছুটির আওতায়। তবে উত্তরবঙ্গের স্কুলগুলি বাইরে রাখা হয়েছে।
৩. শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য কি ছুটি প্রযোজ্য?
না, ছুটির দিনগুলিতেও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে উপস্থিত থাকতে হবে।
৪. গরমের ছুটি না দিয়ে মর্নিং স্কুলের ব্যবস্থা করা যেত না?
এ বিষয়ে অনেক অভিভাবক প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, মর্নিং স্কুল হলে পঠনপাঠন ব্যাহত হতো না।
৫. এই অতিরিক্ত ছুটিতে সিলেবাস শেষ হওয়া নিয়ে সমস্যা হবে কি?
হ্যাঁ, দীর্ঘ গ্রীষ্মকালীন ছুটির পরে আবার নতুন ছুটি পড়ায় সিলেবাস শেষ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।