Today Trending Newsনিউজরাজ্য

ঘূর্ণিঝড় ত্রান ৩০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা, কোন ক্ষতিতে কত ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার, জেনে নিন

Advertisement
Advertisement

গত বুধবার ঘূর্ণিঝড় যশ এবং ভরা কোটালের যুগলবন্দীতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলের একাধিক জেলা। বিভিন্ন জেলায় গ্রামে গ্রামে জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লক্ষাধিক বাড়ি। এই পরিস্থিতিতে গতকাল নবান্ন থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন যে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে প্রায় ৩ লাখের কাছাকাছি বাড়ি এবং ১.৬ লাখ হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায় ডুবে গেছে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল তৃণমূল সুপ্রিমো ঘোষণা করেছিলেন যে রাজ্যের তরফ থেকে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে যার মাধ্যমে ঝড় দুর্গতদের ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

Advertisement
Advertisement

আজ অর্থাৎ শুক্রবার তৃণমূল সুপ্রিমো কবলিত একাধিক এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে ঘোষণা করেছেন যে ত্রাণ বণ্টনে যাতে কোনরকম কার্পণ্য না হয়। ঘূর্ণিঝড় যশের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। কৃষক, মৎস্যজীবী, হস্তশিল্পী সবাই ক্ষতিপূরণ পাবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ন্যূনতম ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রত্যেক পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ এমনটাই ঘোষণা করেছেন দুই ২৪ পরগনার ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনের পর। এবার কত পরিমান ক্ষতি হলে কত ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে তা ঘোষণা করেছেন তিনি।

Advertisement
  • ঝড়ের দাপটে মাঠের ফসল নষ্ট হলে নূন্যতম ১ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সর্বোচ্চ দেওয়া হবে আড়াই হাজার টাকা।
  • ঘূর্ণিঝড়ে গবাদি পশু মারা গেলে প্রত্যেক গরু এবং মহিষ কিছু ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ভেড়া, ছাগল বা শুয়োর মারা গেলে নতুন কেনার জন্য ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। খেতে চাষের কাজে বা মালপত্র বহনের কাজে যে ষাঁড় ব্যবহার করা হয় তারা দুর্যোগে মারা গেলে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
  • বাছুর মারা গেলে ১৬ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
  • ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঘরবাড়ি ধুলিস্যাৎ হয়ে গেলে পরিবার পিছু ২০ হাজার টাকা দেবে সরকার। ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতি হলে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
  • যেকোনো আয়তনের পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
  • মৎস্যজীবীদের জন্য নতুন হাড়ি কেনার জন্য ৩০০ টাকা, মাছ ধরার জালের জন্য ২ হাজার ৬০০ টাকা করে দেওয়া হবে। ঝড়ের জন্য নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতি নৌকার জন্য ১৯ হাজার টাকা এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
  • হস্তশিল্পীদের যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৪ হাজার ১০০ টাকা করে দেবে রাজ্য সরকার। এছাড়া গুদামঘর দোকান ও জিনিসপত্র মজুদ রাখার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইউনিট প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গতকালই ঘোষণা করেছিলেন যে দুয়ারে সরকার মডেলে দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্প চলবে। এ বিষয়ে তিনি গতকাল বলেছিলেন, “দুয়ারে ত্রাণ পরিকল্পনায় প্রত্যেক ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকায় সরকারি আধিকারিকরা ক্যাম্প করবেন। আগামী ৩ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত দুয়ারে ত্রাণ ক্যাম্প করা হবে। এই ক্যাম্পে এসে সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আধিকারিকদের চিঠি মারফত বা মুখে জানাবে। তারপর ১৯ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ১৫ দিন রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা খতিয়ে দেখবেন যে প্রভাবিত মানুষের ক্ষয়ক্ষতির যে পরিমাণ নথিভূক্ত হয়েছে তা আদৌ সত্যি নাকি। যদি সত্যি হয় তাহলে এবার ত্রাণের টাকা পাওয়া যাবে। সরকারি আধিকারিকদের রেইকি ছাড়া কারোর মুখের কথায় ত্রাণ পাওয়া যাবে না। রেইকি হয়ে গেলে রাজ্য সরকার আগামী ১ লা জুলাই থেকে ৮ ই জুলাই এক সপ্তাহের মধ্যে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক প্রভাবিতর ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি টাকা পৌঁছে দেবে।”

Advertisement
Advertisement
Advertisement

Related Articles

Back to top button