শ্রেয়া চ্যাটার্জি – প্রাচীন যুগের হেরাক্লিয়ন ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। সেই সময় কনস্টান্টিনোপল, রোম ও এথেন্স বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করার জন্য ব্যবহৃত হতো ভূমধ্যসাগর। নীল নদের পশ্চিম প্রবেশের মুখেই ছিল এই হেরাক্লিয়ন শহর। এত বছর পরে সেই শহর পাওয়া গেল সমুদ্রের নিচ থেকে। ঐতিহাসিকদের মতে পঞ্চম শতাব্দীতে গ্রিকদেবতা হেরাক্লেস এখানে আসেন। তার নামেই এই সহরের নাম হয় হেরাক্লিয়ন।
এ শহর কিভাবে সমুদ্রের নিচে তলিয়ে গেল তা এখনো রহস্য। সমুদ্রে গর্ভে তলিয়ে গেছে বড় বড় মন্দির ভবন সহ পুরো শহর। পাওয়া গেছে খোদাই-করা পাথরের ফলক, লিপি, মুদ্রা, কিছু শব রাখার জায়গা উদ্ধার হয়েছে। দেবতা আমনের উদ্দেশ্যে দেওয়া হতো কিছু পশুবলি। তাদের মমি ও পাওয়া গেছে। এই শহরটি যে, বন্দর শহর ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায়, এখান থেকে প্রায় ৭০০টি নোঙ্গর, ৬৪ টি জাহাজ খুঁজে পাওয়া গেছে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Now
এই শহরটি ‘থনিস’ নামেও পরিচিত ছিল। মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ২০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে এই শহরটি অবস্থান করছে। এই অঞ্চলটি বন্দর ছাড়াও মিশরীয় দেবতা আমনের এক সুবিশাল মন্দিরের জন্য বিখ্যাত ছিল। ঐতিহাসিকরা মনে করেন এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পের ফলেই পুরো শহর চলে যায় সমুদ্রের নিচে। ২০০০ সালে ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্রাঙ্ক গুডি এবং তার দল এই শহরটি খুঁজে পান। শুধু তাই নয়, তারা প্রায় ১৩ বছর ধরে শহরের খননকাজ চলান এবং একে একে উদ্ধার করেন এক একটি অমূল্য গুপ্তধন। সমুদ্রের তলায় পলিমাটি বালি সরিয়ে তারা উদ্ধার করেন মিশরীয় দেবতা আমন ও তার ছেলে খনোসৌ এর মন্দিরের ভগ্নাংশ। এমন কতইনা সভ্যতা সমুদ্রগর্ভে, মাটির গর্ভে বিলীন হয়ে রয়েছে তা হয়তো এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। প্রত্নতাত্ত্বিকদের সহায়তায় এ সমস্ত সভ্যতায় পুনরায় যেন জীবন ফিরে পায়।