
দিন কয়েক আগেই চিরবিদায় নিয়েছেন জনপ্রিয় বলিউড গায়ক বাপি লাহিড়ী। তার শেষ যাত্রায় পা মিলিয়েছিলেন বন্ধু অনুরাগী থেকে শুরু করে তা শুভানুধ্যায়ীরা। শিল্পীর দেহ নিয়ে ভিলে পার্লের পবনহংস শ্মশান এর উদ্দেশ্যে শববাহী গাড়ি রওনা দিলে অনেকেই তার শেষ যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। ফুলমালা এবং বাপি লাহিড়ীর ছবি দিয়ে সাজানো একটি ট্রাক মহাশ্মশানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। চারপাশে উপচে পড়ছিল ফ্যানেদের ভিড়। এই অবস্থায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় পবনহংস শ্মশানে বাপি লাহিড়ীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
কিন্তু এমন দিনেও মিঠুন চক্রবর্তীকে আমরা বাপি লাহিড়ীর পাশে দেখলাম না। একটা সময় এমন ছিল যখন বাপি লাহিড়ী এবং মিঠুন চক্রবর্তীর সম্পর্ক ছিল বলিউডের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। একজন ছিলেন ডিস্কো কিং এবং অপরজন পরিচিত হতেন ডিসকো ডানসার হিসেবে। একটা সময় বাপি লাহিড়ী এবং মিঠুন চক্রবর্তী যেন ছিলেন হরিহর আত্মা। কিন্তু আশির দশকের ব্লকবাস্টার অনেক ছবি উপহার দিলেও, শেষ যাত্রায় বাপি লাহিড়ীর সঙ্গী কেন হতে চাইলেন না মিঠুন চক্রবর্তী? এর পিছনে কি সত্যি কোনো কারণ লুকিয়ে রয়েছে? নাকি রয়েছে কোন ব্যক্তিগত ক্ষোভ অভিমান?
এই নিয়ে সমালোচনা শুরুর আগেই যদিও এই কারণে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। মিঠুন জানিয়েছেন, তার প্রিয় বাপিদার নিথর দেহ দেখার মত অবস্থায় তিনি ছিলেন না। বাপি লাহিড়ীকে হাসি মুখ ছাড়া আর কোন রূপে তিনি কল্পনা করতে পারছিলেন না। তাই শেষকৃত্যের দিন তিনি হাজির হতে চাননি। সংবাদ সংস্থাকে জানানো একটি বিবৃতিতে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘বাপিদা আমার দীর্ঘদিনের সহযোগী। যেদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আমি ব্যাঙ্গালুরুতে ছিলাম। এ খবরে আমি অনেক শোকাহত হয়েছিলাম। আমি তাকে ওভাবে দেখতে চাইনি। আমি বাপিদাকে যে ভাবে চিনি সেভাবেই তাকে মনে রাখতে চাই। বাপিদা চিরকাল আমার সঙ্গে থাকবেন। এটা আমার চিন্তা।’
মিঠুন চক্রবর্তী আরো যোগ করলেন, ‘মহামারীর সময় যখন আমার বাবা মারা যান আমি আসতে পারিনি। আমি তাকে এভাবে দেখতে চাইনি। আমরা কেমন ছিলাম, সেটা ভেবে আমি তাকে স্মরণ করতে চেয়েছিলাম। আমি বাপিদাকে এভাবেই স্মরণ করতে চাই। কিভাবে আমরা দিনগুলো কাটাতাম সেইটাই আমি মনে রাখতে চাই। একসঙ্গে গান বানাই, গান শুনি, এগুলোই আমি স্মৃতিতে রাখতে চাই। আমি শুধুমাত্র তার সঙ্গে কাটানো ভালো দিনগুলো মনে রাখতে চাই। এই কারণেই আমি বাপি লাহিড়ীর শেষকৃত্যে উপস্থিত হতে পারিনি। এর কোন অন্য রকম ব্যাখ্যা করবেন না।’