দেশনিউজ

এক মঞ্চে সোনিয়া, মমতা এবং সীতারাম, বিজেপির বিরুদ্ধে তৈরি নতুন রণকৌশল

বিজেপির বিরুদ্ধে সমস্ত শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Advertisement
Advertisement

আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি কে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য ইতিমধ্যেই আদাজল খেয়ে নেমেছে বিরোধী শিবির। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করছে কংগ্রেস এবং সাথেই আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রে বিজেপি শাসিত সরকারকে সরানোর জন্য ইতিমধ্যেই রণকৌশল প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। শুক্রবার একটি বহু প্রতীক্ষিত বৈঠকে একসাথে মিলিত হলো ১৯ বিরোধী দল যেখানে সভাপতিত্ব করলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। এদিন বিকেলে ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আরো বহু অবিজেপি নেতারা।

Advertisement
Advertisement

এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে সবথেকে বড় ভূমিকা গ্রহণ করলেন। এই বৈঠকে বিজেপিকে রুখে দেওয়ার জন্য বিরোধীদের নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করার প্রস্তাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি বিরোধী জোট তৈরি করার একটি প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিবসেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরে, এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এনসিপি’র প্রধান শারদ পাওয়ার এবং ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহ ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা হেমন্ত সরেন।

Advertisement

সকলের উপস্থিতি থাকলেও অনুপস্থিত ছিল সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি। উত্তরপ্রদেশের এই দুই পার্টির অনুপস্থিতি নজরে পড়ল রাজনৈতিক মহলের। তবে সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়টি হলো, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সোনিয়া গান্ধী ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাহলে কি এবারে বিজেপিকে সরানোর জন্য বিরোধী দলের জোটে উপস্থিত থাকবে সিপিএম? সীতারাম এর উপস্থিতি এ বিষয়টি নিয়ে জল্পনা উসকে দিল।

Advertisement
Advertisement

বিকেল চারটে নাগাদ এই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সবাই সময়মতো উপস্থিত না হওয়ার কারণে কিছুটা দেরি করে শুরু করতে হয় এই বৈঠক। কিছুক্ষণ আগেই এই বৈঠক শেষ হয়েছে। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি এবং মায়াবতীর বহু জন সমাজ পার্টি ছাড়া বাকি সবাই কিন্তু উপস্থিত ছিলেন। সব থেকে বড় কথা হল, এই বৈঠকে উপস্থিত ছিল সিপিএম। সোনিয়া গান্ধী নিজে কেন্দ্রের একাধিক আপত্তিজনক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বেশ কিছু কথা বললেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের দুই নেতা ফারুক আব্দুল্লাহ এবং মেহেবুবা মুফতি। ৩৭০ ধারা ফেরানোর জন্য কেন্দ্রের ওপর চাপ দেওয়ার পরামর্শ দিলেন তারা দুজনে। তার পাশাপাশি সংসদের বাদল অধিবেশন, পেগাসাস এবং কৃষি আইন নিয়ে একাধিক কথা হলো সকলের মধ্যে।

তবে সকলের নজর ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বৈঠকে কি বলেন সেইদিকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দিলেন, বিরোধী দলগুলির একটি আলাদা আলাদা মতাদর্শ থাকবে কিন্তু তা সত্ত্বেও নিজেদের মধ্যে সমস্ত বাদানুবাদ দূরে সরিয়ে রেখে সমস্ত ছোটখাট ভুল শুধরে নিয়ে একসাথে জোর করে লড়াই করতে হবে যা সম্পূর্ণরূপে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি সঙ্গবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলবে। সংসদের বাইরে এবং ভিতরে একইরকমভাবে আন্দোলন চলুক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বিরোধী জোটের পক্ষে খুবই সুবিধাজনক হতে পারে। তিনি প্রস্তাব রেখেছেন, দেশের সমস্ত গরিব পরিবারকে মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা করে দেওয়া হোক, এই দাবিতে যেন কেন্দ্রকে চাপ দিতে থাকে বিরোধীরা। এছাড়াও করোনা ভাইরাসের টিকা, কৃষি আইন বাতিল, পেট্রোপণ্যের দাম, এবং পেগাসাস কাণ্ড নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত এই বৈঠকে পরিষ্কার হয়ে গেল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের বিরোধী জোটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে চলেছেন। এবং যদি এই বিরোধী জোট সম্পন্ন হয়, তাহলে কংগ্রেসের পরে সবথেকে বড় দল হিসেবে সামনে আসবে তৃণমূল কংগ্রেস।

Advertisement

Related Articles

Back to top button