সোমবার দুপুরেই ইস্টবেঙ্গল এর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছে হরিমোহন বাঙুরের শ্রী সিমেন্ট। ইতিমধ্যেই, ই-মেল করে শ্রী সিমেন্ট এর পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা আর এই চুক্তিতে থাকবে না। এমনকি ইস্ট বেঙ্গলের স্পোর্টিং রাইট ফিরিয়ে দিয়েছে তারা। তারা নিজেদের সম্পর্ক ইস্টবেঙ্গলের থেকে ছিন্ন করে ফেললেও এখন ইস্টবেঙ্গলের মাথায় অনেক বড় অশনি সংকেত। কারণ এই মুহূর্তে আইএসএল খেলার জন্য আর খুব একটা সময় বাকি নেই। হাতে নেই কোনো রকম স্পন্সর। কি হবে ইস্টবেঙ্গলের? এই প্রশ্নই বর্তমানে রাতের ঘুম উড়েছে সমর্থকদের।
সোমবার দুপুরে হরিমোহন বাঙ্গুর ইমেইল করে নবান্নতেও এই একই বক্তব্য পাঠিয়ে দিয়েছেন, কারণ গত বছর নবান্নে বসে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল। এই ইমেইল পাঠানোর পরেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তাদের ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে একটি বৈঠক হয়েছিল যেখান থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলবে, যা সমস্যা ছিল সেই সব মিটমাট হয়ে যাবে। কিন্তু তারপরেও হরিমোহন বাঙ্গুর এর তরফ থেকে ইস্টবেঙ্গল কে কোন রকম সুযোগ না দেওয়ার কারণে শ্রী সিমেন্ট এর উপরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowতার পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তাদের নিয়ে রীতিমত ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বললেন, ” আমি কি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব চালাই নাকি? যারা ক্লাব চালাচ্ছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন।” মুখ্যমন্ত্রীর এহেন কথাতেই রীতিমতো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল এর এই রকম পরিস্থিতির জন্য ক্লাব কর্তাদের যে ভূমিকা, তা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ। শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের যখন আইএসএল খেলা সংকটে, সেই সময় শ্রী সিমেন্ট এর একটি চিঠি সমস্ত আশায় জল ঢেলে দিল। মুখ্যমন্ত্রী ও বলে দিলেন, যারা ক্লাব চালান তাদের কে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি আর কিছু বলতে পারবেন না।
গত দোসরা আগস্ট মুখ্যমন্ত্রীর কথাতে আবারো আনন্দ মুখর হয়ে উঠেছিল লাল হলুদ জনতা। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে খেলা হবে দিবসের সূচনা অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছিলেন, ‘ঝগড়া হচ্ছে মনোমালিন্য হচ্ছে কিন্তু সব মিটে যাবে। চুক্তি সই হবে এবং ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলবে। আমার কাছে সেরকম তথ্য আছে। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, একটু ছেড়ে খেলুন। তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে এবং চুক্তিটা হবে। পাঁচ বছরের জন্য একজন দায়িত্ব নেবে এটাও তো খুব একটা মুখের কথা নয়। ৫০ কোটি টাকা করে লাগে। তাদের অনেক বলে রাজি করানো হয়েছে। সদস্যদের নিয়ে যে সমস্যা ছিল সেটা মিটে গেছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যাবে। ” কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাসবাণী সম্পূর্ণরূপে ভুল প্রমাণিত হলো সোমবার দুপুরে। ইস্টবেঙ্গল এর সঙ্গে চুক্তি ত্যাগ করে শতাব্দী প্রাচীন এই ফুটবল দলের ভবিষ্যৎ কার্যত অনিশ্চিত করে দিয়ে গেলেন হরিমোহন বাঙুর।