দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে এখনও মুখ্যমন্ত্রীর তরফে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে সাম্প্রতিক এক সভায় এই প্রকল্পকে ঘিরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য উঠে এসেছে, যা নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে ৯ লক্ষ ২৫ হাজার মহিলা ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর সুবিধা পাচ্ছেন। তাঁর দাবি, দেশের অন্যান্য রাজ্যে একই ধরনের স্কিম থাকলেও সেগুলির নিয়ম-কানুন অনেক বেশি কঠোর। কোথাও স্কুটি থাকলে সুবিধা মেলে না, কোথাও পাকা বাড়ি থাকলে বা মোবাইল ফোন থাকলে বাদ পড়তে হয়—এমন নানা শর্ত রয়েছে। কিন্তু বাংলায় ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী সমস্ত যোগ্য মহিলা এই আর্থিক সহায়তা পান, কোনও কড়া শর্ত ছাড়াই।বর্তমানে সাধারণ জাতির মহিলারা মাসে ১,০০০ টাকা এবং তপশিলি জাতি ও উপজাতির মহিলারা মাসে ১,৫০০ টাকা পান। কিছু দিন ধরেই জল্পনা চলছে—এই ভাতা বৃদ্ধি পেতে পারে। আলোচনা অনুযায়ী, সাধারণ জাতির জন্য ভাতা বেড়ে ১,৫০০ টাকা এবং তপশিলিদের জন্য ১,৮০০ টাকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে আপাতত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।তিনি সভায় বলেন, “২৫ বছর বয়স থেকে সারাজীবন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চলবে। মা-বোনেরা নিশ্চিন্তে থাকুন, সারাজীবন পাবেন।” পাশাপাশি, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির অধীনে যে সমস্ত আবেদন জমা পড়েছে, তার ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে বলেও জানান তিনি। বাকি ১০ শতাংশ কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনকে।যদিও ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে এখনও নিশ্চিত ঘোষণা আসেনি, তবুও রাজ্য জুড়ে কানাঘুষো চলছে—হয়তো সেপ্টেম্বর থেকেই নতুন হার কার্যকর হবে। কিন্তু সরকারি মহল থেকে এই খবরের কোনও নিশ্চিতীকরণ পাওয়া যায়নি। ফলে উপভোক্তাদের মধ্যে এখন অপেক্ষা ও জল্পনা দুই-ই চলছে।লক্ষ্মীর ভাণ্ডার শুধু একটি আর্থিক সহায়তার প্রকল্প নয়, বরং বহু পরিবারের কাছে এটি হয়ে উঠেছে মাসিক আয়ের নির্ভরযোগ্য উৎস। বিশেষত গ্রামীণ ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলির মহিলাদের জন্য এই ভাতা তাদের দৈনন্দিন ব্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। তাই ভাতা বৃদ্ধির যে সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে, তা বাস্তবে রূপ নেবে কি না—সেদিকেই এখন তাকিয়ে সবাই।