রাজ্য সরকারের অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এ এবার কড়া নজরদারি চালু করতে চলেছে অর্থ দপ্তর। প্রকল্পের টাকা অনিয়ম রুখতেই নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, উপভোক্তাদের তথ্য যাচাই করতে হবে রিজার্ভ ব্যাংকের নির্ধারিত সুরক্ষা বিধি মেনে। পাশাপাশি, অনুদান সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর প্রক্রিয়ায়ও আনা হয়েছে বেশ কিছু পরিবর্তন।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। মূলত রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সাধারণ মহিলারা মাসে ৫০০ টাকা এবং তপশিলি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা ১০০০ টাকা করে পেতেন। পরবর্তীতে এই অনুদান বেড়ে যথাক্রমে ১০০০ টাকা ও ১২০০ টাকা করা হয়।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowবর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পে Direct Benefit Transfer (DBT) পদ্ধতিতে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়। এবার সেই পদ্ধতিকেই আরও শক্তিশালী ও সুরক্ষিত করতে চায় অর্থ দপ্তর। এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, প্রতিটি দপ্তরকে বাধ্যতামূলকভাবে NPCI (National Payments Corporation of India)-র মাধ্যমে তথ্য যাচাই করতে হবে।
এই নতুন ব্যবস্থায়, অনলাইনে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন হবে। তদুপরি, উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর নথিভুক্ত করার সময় দু’বার যাচাই করতে হবে। লক্ষ্য, ডুপ্লিকেট বা ভুয়ো অ্যাকাউন্টের সংখ্যা শূন্যে নামানো।
সরকারি সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, যাঁরা তথ্য অনুমোদন করছেন বা যাঁর মাধ্যমে তথ্য যাচ্ছে, তাঁদের দায়িত্বও নির্দিষ্ট করা হবে। অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়াও অর্থ দপ্তর থেকে ১৬ দফা করণীয় নির্দেশ জারি হয়েছে।
‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পটি শুরু থেকেই মহিলাদের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তবে, প্রকল্পের টাকা যাতে সঠিক হাতে পৌঁছয় এবং কোনওরকম দুর্নীতি না ঘটে, সে দিকেই এবার জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
প্রশ্নোত্তর (FAQ):
১. লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প কী?
এটি রাজ্যের মহিলাদের জন্য একটি আর্থিক সহায়তা প্রকল্প, যেখানে মাসিক অনুদান সরবরাহ করা হয়।
২. এই প্রকল্পে কোন কোন মহিলা কত টাকা পান?
সাধারণ মহিলারা ১০০০ টাকা ও তপশিলি/উপজাতি মহিলারা ১২০০ টাকা করে পান।
৩. এবার কী নতুন নিয়ম আসছে?
এবার থেকে এনপিসিআই-এর মাধ্যমে তথ্য যাচাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর দু’বার যাচাই করতে হবে।
৪. অনলাইন আবেদনকারীদের জন্য কী প্রক্রিয়া?
তাঁদের সম্পূর্ণ আবেদনপত্র ও যাচাই প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন হবে।
৫. এই পদক্ষেপের লক্ষ্য কী?
ভুয়ো অ্যাকাউন্ট ও দুর্নীতি রোধ করে প্রকৃত উপভোক্তাদের কাছে অনুদান পৌঁছে দেওয়া।