অভিনেত্রী জয়ললিতা (Joylalita) থেকে এমজিআর (M. G.Ramchandran)-এর হাত ধরে দ্রাবিড় রাজনীতিতে উত্থান হয়েছিল জয়ললিতার। দ্রাবিড় রাজনীতিতে মহিলাদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছিলেন জয়ললিতা। সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর পরিচয় ছিল ‘আম্মা’ নামে। দ্রাবিড় সংস্কৃতিতে একসময় কন্যাসন্তানের জন্ম অশুভ মনে করা হত। কন্যাদায় থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য অধিকাংশ মা-বাবারা নাবালিকা কন্যাসন্তানের বিয়ে দিয়ে দিতেন। কিন্তু ‘আম্মা’ নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করেন। তিনি ঘোষণা করেন, কন্যাসন্তানের জন্ম হলে সেই পরিবারকে এককালীন বেশ কিছু অর্থ উপহার দেওয়া হবে। এমনকি দরিদ্র কন্যাদের বিয়ের জন্য ব্যাঙ্কোয়েট নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন ‘আম্মা’ যা তাঁর মৃত্যুর পর শেষ হয়। ঘাত-প্রতিঘাতে ভরা জীবনের সায়াহ্নে আম্মাকে দূর্নীতির অপবাদ দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে জেলে থাকতে হয়েছিল বেশ কিছুদিন। পরবর্তীকালে আম্মা নির্দোষ প্রমাণিত হলেও এই অপবাদ ও অসম্মান তাঁকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে ভেঙে দিয়েছিল। আজ আম্মা মেরিনা বিচে চিরশান্তির শয়ানে শায়িতা। তাঁর সমাধি তৈরী হয়েছে তাঁর মেন্টর ও প্রেমিক এমজিআর-এর সমাধির পাশে।‘আম্মা’-র জীবনী নিয়ে ‘মণিকর্ণিকা ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেড’ তৈরী করেছে ‘থালাইভি’। ‘আম্মা’-র ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ‘মণিকর্ণিকা ফিল্মস’-এর কর্ণধার অভিনেত্রী কঙ্গনা রাণাওয়াত (Kangana Raunat)। সম্প্রতি তাঁর 34 বছরের জন্মদিনে লঞ্চ করা হল ‘থালাইভি’-র ট্রেলার। ‘থালাইভি’-র ট্রেলার লঞ্চের আসরে কঙ্গনা ফিল্মটির পরিচালক এ.এল.বিজয় (A.L.Vijay)-এর প্রশংসা করে বলেন পুরুষসর্বস্ব ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বিজয় একজন পুরুষ হয়েও কঙ্গনার প্রতি ভরসা রেখেছেন। তিনি কঙ্গনাকে অনুভব করিয়েছেন কঙ্গনার ক্রিয়েটিভিটি। কথাগুলি বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন কঙ্গনা। পরে সেই দৃশ্য তিনি নিজেই টুইট করে জানান, তিনি সচরাচর কাঁদেন না। কিন্তু এদিন তিনি নিজের অশ্রু সামলাতে পারেননি। প্রকৃতপক্ষে কঙ্গনার কথা অনেকাংশেই সত্যি। নির্বাক যুগের বিখ্যাত অভিনেত্রী দেবিকা রানী (Devika Rani)-র মৃত্যুর পর থেকেই বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ক্রমশ পুরুষতান্ত্রিক হতে শুরু করে। এখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মহিলা অভিনেত্রী ও কলাকূশলীদের পুরুষদের তুলনায় পারিশ্রমিক কম দেওয়া হয়। শুধুমাত্র ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই নয়, সমাজের সর্বস্তরে নারীরা এখনও লিঙ্গবৈষম্যের শিকার। এমনকি কঙ্গনা প্রযোজিত প্রথম ফিল্ম ‘মণিকর্ণিকা’ কঙ্গনার প্রযোজনা ও পরিচালনায় তৈরী হচ্ছে বলে ফিল্মে অভিনয় করতে চাননি সোনু সুদ (sonu sood)। পরবর্তীকালে সোনু সুদের ছেড়ে দেওয়া চরিত্র মহারাজা গঙ্গাধর রাও (Maharaja Gangadhar Rao)-এর ভূমিকায় অভিনয় করেন যীশু সেনগুপ্ত (Jissu sengupta)। এই চরিত্রে যীশুর অভিনয় প্রশংসিত হয়। অপরদিকে চলতি বছরে ‘মণিকর্ণিকা’-তে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসাবে জাতীয় পুরস্কারের তালিকায় রয়েছে কঙ্গনার নাম। আপাতত কঙ্গনার প্রযোজনা সংস্থা তাকিয়ে ‘থালাইভি’-র দিকে। কঙ্গনা এই ফিল্ম নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। কঙ্গনা ছাড়াও এই ফিল্মে অভিনয় করেছেন যীশু সেনগুপ্ত, প্রকাশ রাজ (prakash Raj), অরবিন্দ স্বামী (Aravind swami), ভাগ্যশ্রী (bhagyashree) প্রমুখ তারকারা। 23 শে এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে ‘থালাইভি’। তামিল, হিন্দি ও তেলেগু ভাষায় মুক্তি পাবে ‘থালাইভি’।