২০১৬ সালে ভোডাফোন, আইডিয়া, এয়ারটেলের মতো সংস্থার সামনে একপ্রকার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল জিও। এবারও প্রায় একই ধাঁচের কৌশল নেওয়া হয়েছে আর্থিক পরিষেবার ক্ষেত্রে। ট্যাক্সবাড্ডির সঙ্গে যৌথভাবে আয়কর রিটার্ন ফাইলিং সার্ভিস চালু করেছে জিও ফাইন্যান্স। বর্তমানে দেশে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় চলছে। আর এই গুরুত্বপূর্ণ সময়কালে নতুন পরিষেবা চালু করায়, প্রতিযোগিতার বাজারে জিওর অবস্থান আরও মজবুত হওয়ার সম্ভাবনা স্পষ্ট।সংস্থার তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, মাত্র ২৪ টাকার বিনিময়ে গ্রাহকরা আয়কর রিটার্ন ফাইল করতে পারবেন। এত কম মূল্যে পরিষেবা দেওয়ায় বহু চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও ট্যাক্স কনসালটেন্সি ফার্ম কার্যত চাপে পড়েছেন। যেখানে সাধারণত কয়েকশো থেকে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়, সেখানে নামমাত্র মূল্যে সার্ভিস দিয়ে বাজারে নিজের জায়গা তৈরি করতে চাইছে জিও।প্রশ্ন উঠছে, জিও কি শুধুই গ্রাহকদের আকর্ষণ করে ব্যবসা বাড়াতে চাইছে? নাকি এর পিছনে আরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে? গত কয়েক বছরে আর্থিক খাতে ধারাবাহিকভাবে উপস্থিতি বাড়াচ্ছে জিও। আমেরিকার ফার্ম ব্ল্যাকরকের সঙ্গে যৌথভাবে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি তৈরি করেছে তারা। ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে স্টক ব্রোকিং পরিষেবা ও মিউচুয়াল ফান্ড। পাশাপাশি, আলিয়াঞ্জের সঙ্গে ৫০:৫০ যৌথ উদ্যোগে ইন্সিওরেন্স খাতেও প্রবেশ করেছে জিও ফাইন্যান্স। ফলে স্পষ্ট, দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে সংস্থাটি।২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে প্রায় ৯ কোটি ১৯ লক্ষ করদাতা আয়কর রিটার্ন ফাইল করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রিটার্ন ফাইলিং ডকুমেন্ট শুধুমাত্র আইনি কাগজ নয়। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তির স্যালারি, বিনিয়োগ, লোন, ইএমআই এমনকি তাঁর সম্পত্তি ও নির্ভরশীল সদস্যদের তথ্যও পাওয়া যায়। জিও এই ডেটা ব্যবহার করে নিজের অন্যান্য ব্যবসায় নতুন গ্রাহক সংগ্রহ করতে পারে। অর্থাৎ, আয়কর রিটার্ন সার্ভিস থেকে প্রাথমিক ক্ষতি হলেও, অন্য খাতে লাভের মাধ্যমে সেই ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার কৌশলই নিতে পারে জিও।