দীর্ঘ একটা আন্দোলনের পর ফাঁস হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির সমস্ত পর্দা। সমস্ত দুর্নীতি কাটিয়ে দীর্ঘ আন্দোলনের পর চাকরি পেতে চলেছেন বহু চাকরিপ্রার্থী। আর এর সিংহভাগ কাজটাই সম্ভব হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের অন্যতম বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কারণে। তার একের পর এক যুগান্তকারী সমস্ত রায়ের মাধ্যমে আবারো আশা ফিরে পেয়েছে বাংলার যুবসমাজ। আর তারই মধ্যে এবার রীতি ভেঙ্গে টিভি ক্যামেরার সামনে উপস্থিত হলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। গতকাল একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়ার সাক্ষাৎকারে বিচারপতি স্পষ্ট বার্তা দিলেন, “দুর্নীতি প্রমাণ হলে চাকরি যাবেই। যাদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তারা যেন কোনভাবেই নিশ্চিন্তে না থাকেন।”
এসএসসি প্রাথমিক সহ একাধিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় রায় দান করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দশটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের কারণেই গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং শান্তিপ্রসাদরা। অন্যদিকে গতকাল গ্রেফতার হয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। সেই নিয়েই এবারে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে মুখ খুললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পার্থবাবুর বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “যার কলার ধরে টেনে আনার কথা বলেছিলাম পরে তার ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে টাকা। এমনকি পার্থবাবুর কুকুরের জন্য ফ্ল্যাটের কথা আমাকে বলেছিলেন প্রোমোটার। এরকম মামলা যদি আমার কাছে আসে তাহলে হয়তো সেখান থেকে আরো টাকা উদ্ধার হবে।”
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowদুর্নীতি প্রসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমি নির্ভীক। বিচার ব্যবস্থা থেকে আমাকে বহিষ্কার করলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি লড়াই চালিয়ে যাব।” অন্যদিকে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়েও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন ছিলেন অকপট। সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, “যোগ দিলে ওটা দলীয় রাজনীতি নাও হতে পারে। আমার মূল ইস্যু দুর্নীতি। আমি চাইলে টুল পেতে দাঁড়িয়ে নিজের এই ইস্যু এবং নিজের এই বক্তব্যের কথা তুলে ধরতে পারি।”
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “তাকে আমার অত্যন্ত ভদ্র বলেই মনে হয়েছে। ওনার কথায় কোনরকম ক্রুরতা ছিল না। অনেকের কাছে শুনেছি উনি খুব রেগে যান। তবে উনি আমার সঙ্গে খুব একটা খারাপ ব্যবহার করেননি।” তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অভিজিৎ বাবু বেশ একটু অন্যরকম। তিনি বললেন, “এর আগে একবার রুল জারি করে ওনাকে লিখে পাঠানোর কথা ভেবেছিলাম কিন্তু করিনি। আমাকে জড়িয়ে এরকম মন্তব্য করলে আবার পদক্ষেপ করব। যদি আমি দেখে পাঠাই তাহলে উনি পক্ষপাত বা পদক্ষেপ কিছুই বলতে পারবেন না। তিন মাসের জন্য জেল হবে। তিনি কিছুই করতে পারবেন না।”