দেশনিউজ

ভারতে এবার আসতে চলেছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন, চলছে চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল

Advertisement
Advertisement

নয়াদিল্লি: আগামী সপ্তাহে ভারতেও শুরু হতে চলেছে করোনার টিকাকরণ। তার প্রস্তুতি হিসাবে এখন জোরকদমে  চলছে ড্রাই রান (Dry Run)। তবে ইনজেকশনে (Injection) অনেকেরই ভীতি রয়েছে। তাঁদের জন্য সুখবর, ভারতেও এবার আসতে চলেছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন (Vaccine)। ইতিমধ্যে হায়দরাবাদের (Hydrabad) ভারত বায়োটেক করোনার ন্যাজাল ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্ব করতে চাইছে। এরজন্য ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) কাছে অনুমোদন চাইল ভারত বায়োটেক।

Advertisement
Advertisement

জানা যাচ্ছে  সব কিছু ঠিকঠাক চললে ভারত বায়োটেকের তৈরি ন্যাজাল ভ্যাকসিনের  প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে নাগপুরের গিলুরকর মাল্টি স্পেশালিটিতে। এছাড়াও ভুবনেশ্বর, পুনে ও হায়দরাবাদেও ট্রায়াল হবে আগামী দিনে। ১৮ থেকে ৬৫ বছরের স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর  ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনার ন্যাজাল ভ্যাকসিনের ট্রায়াল করা হবে।

Advertisement

ভারত সরকার ইতিমধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনকা ও সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার তৈরি কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিনকে শর্তসাপেক্ষে এবং জরুরি ভিত্তিতেই ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। যত দূর জানা যাচ্ছে তাতে ১৩ জানুয়ারি থেকেই শুরু হতে পারে এই টিকাকরণ। যদিও এই ভ্যাকসিন দুটি ইনজেকশনের মাধ্যমে নিতে হবে। এই অবস্থায় ন্যাজাল ভ্যাকসিনর আগমন সুখবর বলে মনে করছেন অনেকেই। নিউ ইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের দাবি, করোনার ক্ষেত্রে ‘ন্যাজাল ভ্যাকসিন’ ইনজেকশনের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে। শুধু তাই নয়, শরীরে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ‘ন্যাজাল ভ্যাকসিন’ ইনজেকশনের তুলনায় দ্রুত কাজ করবে।

Advertisement
Advertisement

মার্কিন গবেষকরা জানান, বেশির ভাগ করোনা আক্রান্তের ক্ষেত্রেই ভাইরাস দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে ফুসফুসে। তার পর এই সংক্রমণের কারণেই ক্রমশ বাড়তে থাকে শ্বাসকষ্ট। পরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলে শরীরে অক্সিজেনের অভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন করোনা রোগী। অর্থাৎ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথমেই আমাদের শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হচ্ছে করোনায়। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে শরীরে। বিজ্ঞানীদের মতে, করোনার ‘ন্যাজাল ভ্যাকসিন’ সরাসরি আমাদের শ্বাসযন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলতে সক্ষম। রক্ত বাহিত অক্সিজেনের মাধ্যমে প্রতিষেধক দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। বিজ্ঞানীদের দাবি, নাকে স্প্রে করে দেওয়া প্রতিষেধক ইনজেকশনের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। বিজ্ঞানীদের দাবি, ‘ন্যাজাল ভ্যাকসিন’ দ্রুত ‘টি সেল’-এর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহাযক হতে পারে।

ভারত বায়োটেকের প্রধান ডাঃ কৃষ্ণা ইল্লা জানিয়েছেন, ‘‌আমরা ন্যাজাল ভ্যাকসিনের ওপর কাজ করছি এবং এর জন্য আমরা ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের সঙ্গে জোট বেঁধেছি। দুই ডোজের নিষ্ক্রিয় ডোজের বদলে আমরা একক ডোজ নিয়ে কাজ করছি। গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে ন্যাজাল ভ্যাকসিন শ্রেষ্ঠ। কারণ নাকের মাধ্যমেই করোনা ভাইরাস আক্রমণ করে।’ ডাঃ চন্দ্রশেখর গিলুরকর বলেন, ‘‌পরবর্তী দু’‌সপ্তাহের মধ্যে আমরা ন্যাজাল ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করে দেব। পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণে উঠে এসেছে যে ইঞ্জেকশনের চেয়ে নাকের মাধ্যমে যদি টিকাকরণ করা হয় তবে তা বেশি কার্যকর হয়।’‌‌

সম্প্রতি ভারত বায়োটেক দু’টি ইন্ট্রান্যাজাল টিকা নিয়ে কাজ করছে৷ একটি ভ্যাকসিনের জন্য ভারত বায়োটেক মার্কিন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক ফ্লুজেন এবং উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করেছে এবং দ্বিতীয়টি ওয়াশিংটন স্কুল অফ মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের এই ন্যাজাল রূপ, যা বর্তমানে আমেরিকায় ট্রায়াল চলছে, তা যদি সফল হয়, তবে তা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।

Advertisement

Related Articles

Back to top button