ক্ষুধার জ্বালায় অনাহারী হয়ে ঘুরে বেড়াই দ্বারে দ্বারে আর রাস্তার মোড়ে ডাস্টবিনে যদি একটু খাবার জোটে এই প্রত্যাশা হৃদয়ের গহীনে
সন্তান একটি খুব আদরের জিনিস। বিবাহের পর যখন দুজনের মধ্যে একজন বা দুজন আসে, তখন মনে হয় জীবনটা সার্থক। কোলে পিঠে করে যত্ন করে বড় করে তোলা। তার খিলখিল হাসিতে আনন্দে বুক ভরে ওঠে, অঝোরে কান্নায় বুকের ভেতর মোচড় দেয়। কখনো সারারাত জেগে ঘুম পাড়ানো, কখনো আবার হাতটা ধরে প্রথম অ আ ক খ শেখানো।
কিন্তু এইসবর চিত্র টাই মধ্যবিত্ত পরিবার, ও উচ্চবিত্ত পরিবারের। কিন্তু রাস্তাঘাটে যে শিশুরা জন্মায়, তাদের জীবনটা কি এইভাবে শুরু হয়? না বোধহয়। কি করে এরকম ভাবে শুরু হবে তার যে বাবার ই কোন ঠিক থাকে না। রাত্রে অন্ধকারে তার মা হয়তো কোনদিন কোন এক রাতে লালসার শিকার হয়েছিল। তার ফলস্বরূপ এই শিশুটি জন্মালো। সে কি কখনো সমাজের চোখে ভালোবাসা পেতে পারে? অজানা পিতা তাকে জন্ম দিতে পারে। কিন্তু সমাজের কাছে পরিচয় দিতে পারেনা। শিশুটি হয়ে পড়ে অনাথ। ভিক্ষের দান পেয়ে সে একটু একটু করে বড় হয়। প্রথম জীবনের সে হয়তো পায় মাতৃদুগ্ধ। শীর্ণকায় মাতৃস্তন থেকে দুধ পড়ে না। তবু বাচ্চাটি টেনে টেনে ওটি পান করার চেষ্টা করে। ডাস্টবিন জঞ্জাল খাবার থেকে খুঁটে খায়। রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়া বুট পড়া সাহেব ও মেম সাহেবদের বুটের লাথি ও খায়। তবু তারা বড় হয়, তারা মরে না। জীবন যুদ্ধে তারা একটা একটা করে দিন অতিবাহিত করে।
আমরা নিশ্চয়ই এদের দেখে দূরে চলে যাই, এদের ময়লা জামা কাপড় নোংরা মাথার চুল দেখে ঘেন্না পাই। কিন্তু বিশ্বাস করুন এদেরকে দেখে ঘেন্না করবেন না। কারণ এদের যে এই অবস্থা সেটার জন্য কিন্তু এরা নিজেরা দায়ী নয়। পেটের দায়ে এরা কাজ করতে থাকে ইটভাটায়, চায়ের দোকানে। মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত বাড়ির ছেলে মেয়েরা যখন পেন পেন্সিল নিয়ে লিখতে থাকে। তখন এদের এই কোমল হাত কর্কশ হয়ে যায় ইটের খোঁচায়।
“চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে
উছলে পড়ে আলো”
Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জি