বেশ কয়েক মাস ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে এক অদ্ভুত নীরবতা লক্ষ করা যাচ্ছে প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ঘিরে। এক সময় যাঁর দৃপ্ত কণ্ঠস্বর ছিল রাজ্য রাজনীতির অন্যতম চর্চার বিষয়, সেই দিলীপ ঘোষ এখন যেন নিজেই এক ‘পাশের চরিত্র’—তা-ও নিজের দলের ভিতরেই।
গত এপ্রিল মাসে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষ। আর সেখান থেকেই যেন শুরু তাঁর দলের অন্দরে অঘোষিত ব্রাত্য হয়ে ওঠার যাত্রা।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowবিজেপির মঞ্চে নেই দিলীপ
এক সময় যাঁকে দেখা যেত প্রায় প্রতিটি বড় জনসভায়, সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে, সেই দিলীপ ঘোষ আজ বিজেপির কোনো অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকছেন না। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি দলে তাঁর জনপ্রিয়তা কমছে? নাকি দলই তাঁকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে?
রাজনীতি থেকে খানিক বিরতি?
বর্তমানে দিলীপ ঘোষ খড়গপুরের বাড়িতে সময় কাটাচ্ছেন। নিউ টাউনের ইকো পার্কে মাঝেমধ্যে তাঁকে প্রাতঃভ্রমণে দেখা গেলেও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি আর নেই। দলের তরফে তাঁর ভূমিকাও এখন বেশ অনিশ্চিত।
২১ জুলাইয়ের আগে বাড়ছে জল্পনা
প্রতি বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবসের দিন ধর্মতলায় তৃণমূলের সভা থেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভাকেই ঘিরে এবার চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি তিনি নিজেই বলেছেন—২১ জুলাইয়ে “চমক” থাকবে।
এই ‘চমক’-এর মন্তব্যেই রাজনীতির অন্দরে প্রশ্ন উঠছে—তবে কি দিলীপ ঘোষ তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন?
ঘাসফুলের দিকে পা বাড়াচ্ছেন?
তৃণমূল সূত্রের খবর, ২১ জুলাইয়ের সভায় কোনও হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে। বিজেপি-র অন্দরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে—দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ‘উষ্ণ’ হয়ে উঠছে।
তবে এই বিষয়ে নিজে এখনও মুখ খুলতে নারাজ দিলীপবাবু। তাঁর স্পষ্ট জবাব, “আমার সঙ্গে কুণাল-অরূপদের অনেক আগের পরিচয়। সেটা থাকবে। কিন্তু দিলীপ ঘোষ ওইভাবে ভাবে না। যারা ভাবে, তাদের সমস্যা আছে।”
তাহলে কী অপেক্ষা করছে ২১ জুলাই?
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ২০২৫-এর ২১ জুলাই হয়ে উঠতে চলেছে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপির এক সময়ের ‘মুখ’ যদি ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখান, তবে তা যে তৃণমূলের বড় সুবিধা হতে পারে, তা বলাই বাহুল্য। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।