রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বহু প্রতীক্ষিত বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে অবশেষে প্রকাশিত হল ষষ্ঠ পে কমিশনের রিপোর্ট। বুধবার নবান্ন থেকে প্রকাশিত এই রিপোর্টে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের নিয়ম মেনে ডিএ দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা রাজ্যের নেই। বরং রাজ্য তার নিজস্ব তহবিলের উপর নির্ভর করে ডিএ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
কী বলছে ষষ্ঠ পে কমিশনের রিপোর্ট?
অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বে গঠিত অর্থ কমিশনের তরফে এই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাজ্যের কোষাগার যখন সক্ষম হবে, তখনই ডিএ দেওয়া যেতে পারে। কেন্দ্রীয় পে কমিশনের মতো করে ডিএ দিতে হবে, এমন নিয়ম মানতে রাজ্য সরকার বাধ্য নয়। ফলে একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেল যে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার আশা আপাতত পূরণ হচ্ছে না।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowবেতন কাঠামোয় পরিবর্তন, বাড়ছে ন্যূনতম বেতন
রিপোর্টে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মূল বেতন, গ্রেড পে এবং বিভিন্ন ভাতা কাঠামোয় কিছু পরিবর্তনের। ন্যূনতম বেতন কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। সামান্য হারে পরিবর্তন এসেছে হাউস রেন্ট অ্যালাওয়েন্স ও ডিএ-তেও। তবে এই পরিবর্তন কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবির তুলনায় অনেকটাই কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
সুপ্রিম কোর্টের সময়সীমা ঘিরে চাপ
২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যে বকেয়া ডিএ রয়েছে, তা আদায়ে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে ছয় সপ্তাহের সময় দিয়েছিল। সেই সময়সীমার শেষ দিন ২৭ জুন, শুক্রবার। তার আগেই ষষ্ঠ পে কমিশনের এই রিপোর্ট প্রকাশকে অনেকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন। আন্দোলনকারীরা মনে করছেন, এই রিপোর্টে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট হলেও বকেয়া ডিএ দেওয়ার কোনও নির্দিষ্ট রূপরেখা নেই।
ফের আদালতের পথে কর্মচারী সংগঠন?
রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি যদি সন্তোষজনক না হয়, তবে ফের কন্টেম্পট পিটিশন দাখিল করা হবে সুপ্রিম কোর্টে—এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মূল মামলাকারী ও সরকারি কর্মচারী সংগঠনের প্রতিনিধি মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, আগামী সাতদিনের মধ্যে নবান্নে ফের নোটিস পাঠানো হবে এবং কোনও আশার সাড়া না মিললে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর:
১. ষষ্ঠ পে কমিশনের রিপোর্টে মূলত কী বলা হয়েছে?
রাজ্য তার তহবিল অনুযায়ী ডিএ দিতে পারে, কেন্দ্রীয় নিয়ম মানার প্রয়োজন নেই।
২. বকেয়া ডিএ-র পরিমাণ কত বছর ধরে জমে আছে?
২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত, অর্থাৎ এক দশকের বেশি সময় ধরে বকেয়া রয়েছে।
৩. কর্মচারীরা কী এখনও কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাওয়ার আশা করছেন?
অনেক কর্মচারী এখনো কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দাবি করলেও, এই রিপোর্টে তা না মানারই ইঙ্গিত মিলেছে।
৪. রাজ্য সরকারের নতুন বেতন কাঠামোতে কী কী পরিবর্তন এসেছে?
ন্যূনতম বেতন বেড়েছে, হাউস রেন্ট অ্যালাওয়েন্স ও ডিএ-তেও সামান্য পরিবর্তন হয়েছে।
৫. সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্য কী পদক্ষেপ নিয়েছে?
ষষ্ঠ পে কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ঠিকই, তবে বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা জানানো হয়নি।