নিউজরাজ্য

আগামী ১৫ দিন রাজ্যে কি থাকবে বন্ধ এবং কি খোলা? দেখে নিন পূর্ণতালিকা

রাজ্য সরকারের নতুন বিধি-নিষেধ অনুযায়ী আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে বহাল থাকছে করোনাভাইরাস এর বিধি নিষেধ

Advertisement
Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে আবারো বৃদ্ধি পেল কার্যত লকডাউন এর মেয়াদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে দেওয়া নির্দেশিকায় কার্যত জানিয়ে দিলেন করোনা আবহে আগামী 15 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিধি-নিষেধ বহাল থাকছে পশ্চিমবঙ্গে। এখনো পর্যন্ত লোকাল ট্রেন পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে খবর। তবে কিছু কিছু জায়গাতে নতুন পরিবর্তন আনা হয়েছে নবান্নে তরফ থেকে। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক নতুন বিধি নিষেধ অনুযায়ী কি কি সার্ভিস থাকছে খোলা আর কি কি থাকছে বন্ধ।

Advertisement
Advertisement

প্রথমত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কোচিং সেন্টার গুলিকে খোলার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, নতুন নির্দেশিকা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অর্ধেক সংখ্যক পড়ুয়া নিয়ে করোনাভাইরাস এর বিধি মেনে সমস্ত ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গুলি এবং প্রতিযোগিতামূলক সমস্ত ধরনের কোচিং সেন্টার খোলা যাবে।

Advertisement

বাজার হাট খোলার ক্ষেত্রে আগের নিয়ম বজায় থাকবে। রাত্রি এগারোটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত গাড়ি এবং সাধারণ মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকছে। নাইট কারফিউ এখনো পর্যন্ত জারি রাখছে রাজ্য সরকার। তবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য আইন শৃঙ্খলা এবং কৃষি সামগ্রী সহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী এবং জরুরী পরিষেবা ক্ষেত্রে এই সময়টুকুতে ছাড় থাকবে।

Advertisement
Advertisement

আপাতত লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে। রাজ্যে বিধি-নিষেধ জারি থাকবে। সময় মত স্টাফ স্পেশাল ট্রেন এবং দূরপাল্লার ট্রেন চলবে। সমস্ত ট্রেনে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ মানতে হবে। যদি আপনি রাস্তায় যান তাহলে আপনাকে হাত স্যানিটাইজ করতে হবে এবং মুখে মাক্স পড়তে হবে। পাশাপাশি সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে চলতে হবে আপনাকে।

লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকায় নানারকম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অফিসে যাওয়া কিংবা জরুরী প্রয়োজনে কোথাও যাওযা সমস্ত ক্ষেত্রেই সমস্যা হচ্ছে এই লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকার কারণে। কিন্তু এই লোকাল ট্রেন পরিষেবা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার কারণে মানুষের মধ্যে দুর্ভোগ বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন যদি রাজ্যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয় তাহলে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ লংঘন হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস এর পরিমাণ পশ্চিমবঙ্গে আরো বৃদ্ধি পাবে। এই কারণেই সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য এখন লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রেখেছে রাজ্য সরকার।

সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তৃতীয় ঢেউ নিয়ে বর্তমানে রাজ্য সরকার চিন্তিত রয়েছে। এই তৃতীয় ঢেউ কিরকম ভাবে আসে সেই নিয়ে রাজ্য সরকারের মধ্যে চিন্তা রয়েছে। যারা লোকাল ট্রেন নিয়মিত ব্যাবহার করেন তাদের কাছে অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু লোকাল ট্রেন ছাড়াও বাস এবং মেট্রো পরিষেবা চালু করে দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে অক্টোবর মাসে যেহেতু তৃতীয় কেউ আসার কথা রয়েছে সেই কারণে এখনই লোকাল ট্রেন চালু করা হচ্ছে না। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি আরো বললেন, মানুষের জীবনের থেকে বড় কিছু তো নয়, এই কারণে আরো কিছুদিন আপনাদের কষ্ট করতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন উত্তর 24 পরগনা, কলকাতা এবং কলকাতার আশে পাশের বেশ কিছু জেলায় যদি অর্ধেক মানুষের টিকাকরণ হয়ে যায় তার পরেই লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করা হবে। এই কারণে এখনই বাস মেট্রো এবং অটো পরিষেবা চালু করে দেওয়া হয়েছে। যারা জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের জন্য ট্রেন পরিষেবা চলছে। এছাড়াও দূরপাল্লার ট্রেন চালানো হচ্ছে। 30 শে আগস্ট এর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে করোনাভাইরাস এ বিধি-নিষেধ 15 দিনের জন্য বৃদ্ধি করলো রাজ্য সরকার। তবে রাজ্য সরকার দেখতে চাইছে, তৃতীয় ঢেউ কিভাবে আসে সেইটা। তবে যারা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কোচিং নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। এই কারণেই অর্ধেক সংখ্যক পড়ুয়া নিয়ে করোনার বিধি মেনে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এখনো স্কুল কলেজ এবং লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকছে বলে জানানো হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, কোন পর্যন্ত কিন্তু করোনাভাইরাস এর দ্বিতীয় ঢেউ কাটেনি। তার মধ্যে আবার সেপ্টেম্বর মাসে বেশ কিছু উৎসব রয়েছে। সামনেই আছে জন্মাষ্টমী, তারপর এগিয়ে এসছে গণেশ চতুর্থী। অন্যদিকে, সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি নাগাদ বিশ্বকর্মা পূজা রয়েছে। এই কারণ এই শনিবার সমস্ত রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে নতুন নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী 30 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করোনা সংক্রান্ত গাইডলাইন সমস্ত রাজ্যে বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য কে দেওয়া চিঠিতে স্থানীয় স্তরের সংক্রমণ আটকানোর জন্য কনটেইনমেন্ট জোন তৈরি করার উপরে জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা।

স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে একদিনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন 661 জন। ইতিমধ্যেই 7 জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবারে এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল 703 এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল 8। বৃহস্পতিবার এ সংখ্যাটা ছিল 717 জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ছিল 9। বলা যেতে পারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পশ্চিমবঙ্গে ধীরে ধীরে কমছে। এখনো পর্যন্ত দৈনিক সংক্রমনের শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। কিছুদিনের মধ্যেই বাঙালির সবথেকে বড় উৎস দুর্গা পুজো আসছে। এই কারণেই দুর্গা পুজোর আগে সমস্ত কিছু ঠিক ঠাক ভাবে পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আজকে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আবারও ঘোষণা করলেন, পুজোর পরে পরে আবারো স্কুল কলেজ খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় রীতিমতো খুশি শিক্ষক মহল।

Advertisement

Related Articles

Back to top button