দেশে এমন অনেক রেলস্টেশন রয়েছে, যেখানে সৌন্দর্যের কদর রয়েছে। এই প্রসঙ্গে, বিহারের একটি রেলস্টেশন আজকাল শিরোনামে, তবে এটি তার সৌন্দর্যের জন্য নয়, কিছু অনন্যতার জন্য। আসলে, বিহারের এই রেলস্টেশনে প্ল্যাটফর্ম নম্বর ১ নেই। এই স্টেশনটি প্ল্যাটফর্ম নম্বর ২ থেকে শুরু হয়। এর পেছনের কারণ জেনে আপনিও হয়তো অবাক হবেন। চলুন সেটাই বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।ভারতীয় রেলওয়ের এই অনন্য রেলস্টেশনটি বিহারের বেগুসরাই জেলার বারাউনি জংশন নামের একটি শহরে নির্মিত। এটি গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি শিল্প শহর। সেখানে অনেক তেল শোধনাগার এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এই শহরের নামানুসারে এই অনন্য রেলস্টেশনের নামকরণ করা হয় বারাউনি জংশন। এই জংশনটি ১৮৮৩ সালে নির্মিত হয়েছিল, যখন দেশ ব্রিটিশ শাসিত ছিল। তখন জনসংখ্যা কম ছিল, তাই এই স্টেশনে একটি মাত্র প্লাটফর্ম নির্মিত হয়েছিল।প্রাথমিকভাবে শুধু মালবাহী ট্রেন বন্ধ ছিলযখন এই স্টেশন (বরাউনি জংশন) চালু হয়, তখন সেখানে শুধু পণ্যবাহী ট্রেন থামত, যা তেল শোধনাগার থেকে বিভিন্ন জেলা ও বিভাগে তেল সরবরাহ করত। কিছু সময় পরে, লোকেরা ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের কাছে স্টেশনে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর দাবি জানায়, কিন্তু সেই প্ল্যাটফর্মে পণ্যবাহী ট্রেনের প্রচণ্ড চলাচলের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে আরেকটি রেলস্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।মানুষের সুবিধার্থে ২ কিমি দূরত্বে নতুন স্টেশনবারাউনি জংশন ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত ছিল। সে সময় এই রেলস্টেশনটি প্লাটফর্মের সংখ্যা এক থেকে শুরু হতো। বারাউনি জংশন থেকে একটা সময়ে বিভিন্ন বিভাগে ট্রেন চলাচল করত। কিন্তু এক নম্বর প্লাটফর্মে শুধু পণ্যবাহী ট্রেনই দাঁড়াতো। কিছুদিন পর সেখানকার লোকজনের অভিযোগের পর আরেকটি বরাউনি জংশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমটির নাম বারাউনি জংশন এবং দ্বিতীয়টির নাম বারাউনি রেলওয়ে স্টেশন। এভাবে একই নামে দুটি স্টেশন তৈরি হয়।মজার ব্যাপার হলো নতুন রেলস্টেশনে একটি মাত্র প্ল্যাটফর্ম রাখা হয়েছিল, যার নামও রাখা হয়েছিল প্লাটফর্ম নম্বর-১। এভাবে একই রেলস্টেশনে দুই কিলোমিটার দূরত্বে তৈরি করা হয়েছে দুটি প্লাটফর্ম। রেলের এই বিস্ময়কর কর্মশৈলীর কারণে জনগণের সমস্যা আরও বেড়ে গেছে। পরে পুরনো বরাউনি রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর-১ সরিয়ে ২ লেখা হয়। তাই এখানে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম অস্তিত্ব রাখেই না। সোজাসুজি শুরু হয় ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম।